আপেল চুরির ঘটনায় শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন

প্রচণ্ড খিদের যন্ত্রণায় ছটফট করছিল ১০ বছরের শিশু সাইদুল। একটি ফলের দোকানে আপেল চুরি করে সেই ক্ষুধাই মেটাতে চাইছিল। কিন্তু ধরা পড়ে যাওয়ায় শিশুটির হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ শনিবার সকালে নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় বাজারে এই ঘটনা ঘটে। শিশুটি উপজেলার মাশিন্দা ইউনিয়নের কৃষক আবদুল মিয়ার ছেলে। চার ভাইবোনের মধ্যে সাইদুল তৃতীয়।

পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আজম আলী জানান, বাজারের মার্কাজ মসজিদের সামনের ফলের দোকানের গ্রিলের সঙ্গে রশি দিয়ে শিশুটির হাত-পা বাঁধা ছিল। বেলা দেড়টার দিকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হলেও এই ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হানিফ নামের এক ব্যক্তি এই ফলের দোকান চালান। সাইদুল সেখান থেকে একটি আপেল নিয়ে দৌড় দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হানিফ এবং তার সহযোগী সিএনজি চালক পিন্টু এবং মাইক্রোবাসের চালক মজনু সাইদুলকে ধরে ফেলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, মারধর করতে করতে নাইলনের দড়ি দিয়ে গ্রিলের সঙ্গে সাইদুলের হাত-পা বাঁধেন। এরপর মারধর করেন।

জানা যায়, আজ হাটের দিন হওয়ায় শত শত মানুষ ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করলেও একজনও শিশুটিকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেননি। পরে স্থানীয় দুজন সংবাদকর্মীর উপস্থিতির বিষয়ে জানতে পেরে তারা মারধর বন্ধ করে।

শিশু সাইদুল জানায়, আজ সকালে কিছু না খেয়েই তাকে ঘর থেকে বের হতে হয়েছিল। ক্ষুধা সইতে না পেরে আপেলটি সে চুরি করেছিল। কিন্তু তারা তাকে মারধর করে। অনেক আকুতি জানানোর পরেও তাকে ছেড়ে দেয়া হয়নি।

সাইদুল বলে, 'আব্বা এখানে আসলে আপেলের দাম পরিশোধ করে বাড়িতে গিয়ে ভাত খাবো।'

দোকানদার হানিফ বলেন, তিনি দোকান খোলা রেখে টয়লেটে গিয়েছিলেন। পিন্টু ও মজনু ড্রাইভার সাইদুলকে আপেল চুরি করতে দেখে বেঁধে ফেলে। রাগের মাথায় সাইদুলকে চড় দেয়া হয়েছে। শিশুটির বাবা এলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

পিন্টু ও মজনু ড্রাইভার নির্যাতনের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, 'শিশুটির অভিভাবক এলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। কিন্তু শিশু নির্যাতন যে অপরাধ, এধরণের কোন আইন তাদের জানা নেই।

গুরুদাসপুর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক সুব্রত কুমার মাহাতো বলেন, শিশুটি বর্তমানে থানার হেফাজতে রয়েছে। তার অভিভাবক আসলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।