প্রতিদিন ১৫টি বিবাহ বিচ্ছেদ, এগিয়ে নারীরা

রাজধানীতে প্রায় প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা। তালাক দেয়ার দিক থেকে এগিয়ে আছেন নারীরা। গত ছয় বছরে দুই সিটি করপোরেশনে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে ৩০ হাজার ৮৫৫টি। অর্থাৎ রাজধানীতে প্রতিদিন গড়ে ১৫ দম্পতির মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটছে।

দুই সিটির ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত, গত ছয় বছরে বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিশ পড়েছে ৩৬ হাজার ৩৭১টি। এরা মধ্যে ২৪ হাজার ৮০৩ টি স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীকে তালাকের নোটিশ এবং ১২ হাজার ১৮টি স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ পড়েছে। এই হিসাবের গড় করলে দেখা যায় প্রতিদিন ১৫টি, মাসে ৪২৯টি এবং বছরে পাঁচ হাজার ১৪৩টি বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে।

এবিষয়ে ডিএনসিসির অঞ্চল-২ এর নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নঈম বলেন, ‘গত ছয় বছরে কার্যালয়ে তিন হাজার ২৫৪টি বিচ্ছেদের নোটিশ দেয়া যার মধ্যে দুই হাজার ২৭টি স্ত্রীর এবং এক হাজার ২২১টি স্বামীর পক্ষ থেকে জমা পড়েছে।'

তিনি জানান, এসব নারীর অধিকাংশই ৩০-৩৫ বছর বয়সী। বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্ত নারীদেরই বেশি দেখা যায়। আবার বিয়ের এক বছরের মধ্যে বিচ্ছেদের ঘটনাও অনেক বেশি ঘটে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নেহাল করিম বলেন, 'তালাক প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার নেপথ্যে অনেকগুলো বিষয় কাজ করছে। এর মধ্যে বর্তমানে নারীদের স্বাধীনচেতা মনোভাব, সচেতনতা ও উপার্জন সক্ষমতা বেশি কাজ করছে। এসব কারণে নারীরা এখন জীবনের সিদ্ধান্তগুলো সহজেই নিতে পারছেন।'

তিনি জানান, দৃষ্টিভঙ্গি, পারিবারিক কলহ, সাংস্কৃতিক, আকাশ সংস্কৃতি, অর্থনীতির কারণেও তালাক প্রবণতা বেড়ে চলেছে। এসব তালাকের ঘটনায় পারিবারিক জীবনে বেশ প্রভাব পড়ছে।

অন্যদিকে নারী নেত্রীরা মনে করছেন, নারীরা এখন শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র, আত্মমর্যাদা ও নির্ভরশীলতায় এগিয়ে যাচ্ছেন। ফলে এসব তাদের মধ্যে এক ধরণের সাহসিকতা তৈরি করছে। তারা এখন আর অপমান বা নির্যাতনের গ্লানি সহ্য করছে না।