রোহিঙ্গা ইস্যুতে মহাসমাবেশের ডাক দিল হেফাজত

চলতি বছরের ২৫ শে আগস্ট মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর রাখাইন রাজ্যে অভিযানের নামে দেশটির সেনাবাহিনীন অত্যাচার-নির্যাতন আর গণহত্যায় প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে পাড়ি জমিয়েছেন লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম। এই অসহায় নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য এবার মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। এর আগে রাজধানীতে রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদে বিশাল শোডাউন করে সংগঠনটি।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া নিরীহ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত নেয়া ও তাদের ওপর চালানো গণহত্যা বন্ধ করার দাবিতে আগামী ৬ অক্টোবর কক্সবাজারে মহাসমাবেশর ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। শনিবার বিকালে চট্টগ্রামের দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসায় অনুষ্ঠিত ওলামায়ে কেরামের এক জরুরি সভায় সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়। সভায় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের আমীর শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

সভায় মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে মুসলমানদের ওপর চলমান পৈশাচিক গণহত্যা, নির্মম নির্যাতন ও বিতাড়ন বন্ধ করে তাদের নাগরিক অধিকার দিয়ে আরাকানে পুনর্বাসনের আহ্বান জানান হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তিনি বলেন, 'রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্ষায় এখনি আরাকান রাজ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা জরুরি। দেশটির ওপর অর্থনৈতিক ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপে মুসলিম দেশগুলোর নৈতিক দায়িত্ব।'

তিনি বলেন, 'সংখ্যালঘু মুসলিমদের নৃশংসভাবে গণহত্যা পরিচালনা, তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার দায়ে এবং ইতিহাসের নির্মম মানবতার বিরোধী অপরাধের জন্য থেইন সেইন সরকার এবং নোবেল জয়ী অং সান সুচিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।'

হেফাজত নেতারা জানান, তারা বাংলাদেশে আশ্রিয় রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য শরণার্থী ক্যাম্পে মসজিদ, মক্তব, মাদরাসা নির্মাণ, টিউবওয়েল এবং টয়লেট নির্মাণ করবে। বিভিন্ন এনজিওগুলো যেন অসহায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের ধর্মান্তরিত না করে সেজন্য আইনশৃংখলা বাহিনীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়। সভায় রোহিঙ্গা ঠেকাতে ভারতীয় বিএসএফ বাহিনীর মরিচগুঁড়া স্প্রে ও স্টান গ্রেনেড ছোড়ায় তীব্র নিন্দা জানানো হয়। বিষয়টিকে তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন বলেই মনে করছেন।

গত সোমবার কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক ইসলামি সংগঠন হেফাজতে ইসলাম রাজধানীতে তাদের এক সমাবেশে বলেছিল, একমাত্র স্বাধীন রাজ্য গঠনের মাধ্যমেই দীর্ঘদিন ধরে চলা রোহিঙ্গা সংকটের সামাধান আনা সম্ভব। সমাবেশে নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, 'শান্তিপূর্ণ উপায়ে মিয়ানমার এই সমস্যার সমাধান না করলে আরাকান রাজ্যকে স্বাধীন করতে বাংলাদেশ সরকারকে সামরিক অভিযান চালাতে হবে।'