চুরি হয়ে গেল নায়করাজের 'লক্ষ্মী কুঞ্জ'

বাংলা সিনেমার সবচাইতে জনপ্রিয় নায়করাজ রাজ্জাক তার প্রিয়তমা স্ত্রীর নামের সঙ্গে মিল রেখে তার গুলশানের বাড়িটির নাম রেখেছিলেন 'লক্ষ্মী কুঞ্জ'। এই বাড়িটিতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। অত্যন্ত মনখারাপের বিষয়টি হলো নায়করাজের বাড়িটির ‘লক্ষ্মী কুঞ্জ’ লেখা নেমপ্লেটটি চুরি হয়ে গেছে।

নায়করাজের প্রস্থানের পর ‘লক্ষ্মী কুঞ্জ’ নামের বাড়িটিই তার স্মৃতি আঁকড়ে ধরে আছে। রাজ্জাকের ছোট ছেলে অভিনেতা সম্রাট বলেন, '৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে দেখি বাড়িটির নেমপ্লেট নেই। কে বা কারা যেন খুলে নিয়ে গেছে। বাসার সবাই নেমপ্লেট চুরির বিষয়টিতে মনক্ষুণ্ন।'

তিনি জানান, নেমপ্লেট ভালভাবেই দেয়ালে লাগানো ছিল। চোরদের ভালোই বেগ পেতে হয়েছে এটি খুলতে। কি কারণে এটা চুরি হলো বুঝতে পারছি না। নায়ক রাজের 'লক্ষ্মী কুঞ্জ' বাড়িটিতে বসবাস করছেন তার স্ত্রী, সন্তান আর নাতি-নাতনিরা।

এই বাড়িতেই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছিলেন বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় এই নায়ক। তিনি ২১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৫ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

নায়করাজ রাজ্জাক ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ষাটের দশকে চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন তিনি। পরের দশকেও বাংলা ভাষার চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রধান অভিনেতা ছিলেন তিনি। রাজ্জাক শিশু বয়সে মঞ্চে অভিনয় শুরু করেন। সে সময়ই তার মধ্যে অভিনয়ের প্রতিভা প্রস্ফুটিত হতে থাকে।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় নায়করাজ রাজ্জাকের পরিবার ভারতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ১৯৬৪ সালে তারা ভারত থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। সে সময় পূর্ব পাকিস্তানের টিভিতে ‘ঘরোয়া’ নামের একটি টিভি সিরিজে অভিনয় করতেন তিনি। রাজ্জাক তুমুল জনপ্রিয়তা পান জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্র দিয়ে। ১৯৬৬ সালে এই চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। একই বছর মুক্তি পায় তার ‘আখেরি স্টেশন’ নামের আরেকটি জনপ্রিয় চলচ্চিত্র।

রাজ্জাক বাংলাদেশ ও ভারত মিলিয়ে ৩০০-এর বেশি বাংলা ও উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। রাজ্জাক পাঁচবার বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ২০১৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা পান এই গুণী অভিনেতা।