দাফনের জায়গার অভাবে ঢামেকের মর্গে ৬৫ অজ্ঞাত লাশ!

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গের ভেতরে স্তূপ হয়ে আছে ৬৫ অজ্ঞাতের লাশ। গত ২১ দিন ধরে এসব লাশ এখানেই পড়ে আছে। এসব লাশ নেয়নি আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামও। কবরস্থানের জায়গা বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না এমন অভিযোগ করে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম কর্তৃপক্ষও নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গ সহকারী রামু চন্দ্র দাস বলেন, ‘মর্গের ভেতরে স্তূপ হয়ে আছে অজ্ঞাতদের লাশ। লাশগুলো এতটাই বিকৃত হচ্ছে যে, শনাক্ত করার কোনো উপায় থাকছে না।’

শনিবার ঢামেক মর্গে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মর্গের ভেতরের একটি কক্ষে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে মৃতদেহগুলো। গাদাগাদি করে একটির ওপর আরেকটি লাশ। মৃতদেহে ভন ভন করছে মাছি। কোনো কোনো লাশে পোকাও ধরেছে।

কেন এত অজ্ঞাত লাশ: প্রতিদিনই ঢামেক মর্গে আসছে অজ্ঞাত লাশ। বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনা, ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু অথবা নানা রকমের ঘটনা-দুর্ঘটনার শিকার হয়ে দুর্ভাগা মানুষরা তাদের পরিচয় হারিয়ে অজ্ঞাত হিসেবে এ মর্গে লাশ হয়ে আসেন। আর ময়নাতদন্তের পর এসব লাশ মর্গে রেখে দেয়া হয়। এছাড়া ঢামেক হাসপাতালে জন্ম নেয়া মৃত নবজাতকের লাশও রাখা হচ্ছেে এই মর্গে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের ইনচার্জ সেকান্দর আলী বলেন, ‘সর্বশেষ গত ৭ অক্টোবর এখান থেকে লাশ নিয়েছিল আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম। এরপর থেকে শনিবার পর্যন্ত ঢামেক মর্গে ৩৩টি অজ্ঞাত লাশ জমা হয়েছে। আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রাখা হয় ৩২টি নবজাতকের মৃতদেহ। সব মিলিয়ে ৬৫টি অজ্ঞাত লাশ জমেছে এ মর্গে।’

ঢামেক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ডা. প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি খুবই নাজুক আকার ধারণ করেছে। দুর্গন্ধে মর্গের কাছে থাকা এনাটমি বিভাগের শিক্ষার্থীরাও টিকতে পারছে না।’

আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: বেওয়রিশ মুসলমানগণের লাশ দাফনের উদ্দেশ্য প্রতিষ্ঠিত ইসলামী জনকল্যাণ সংস্থা আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের নির্বাহী পরিচালক ইলিয়াস আহমেদ বলেন, ‘আগে আমরা জুরাইন কবরস্থানে বেওয়ারিশ লাশ দাফন করতাম। ওই জায়গা শেষ হয়ে গেছে। ওখানে আর দাফন করা যায় না। মাসখানেক আগে মোহাম্মদপুরের বছিলায় কবরস্থানের জন্য ৭ একর জায়গা দেয়া হয়। কিন্তু ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে যথাযথ সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। যে কারণে আমরা সেখানে দাফন করতে পারছি না।’