হঠাৎ পেঁয়াজের এতো ঝাঁজ কেন?

বিশ্ব বাজারে পেঁয়াজের দাম কমলেও দেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে অনেকটা। চলতি সপ্তাহে ৫৫ টাকা কেজি দরের দেশি পেঁয়াজ বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ টাকায়। আর কোরবানির ঈদের আগে এই পেঁজারেই দাম ছিল প্রতিকেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। হঠাৎ করে পেঁয়াজের এই ঝাঁজে দিশেহারা ক্রেতারা।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে বেশকিছু কারণ চিহ্নিত করেছেন বাজার বিশ্লেষক, পর্যবেক্ষক এবং ব্যবসায়ীরা। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পেঁয়াজের ভরা মৌসুম শেষ। এ মৌসুমে ব্যবসায়ী-গৃহস্থ উভয়েরই পেঁয়াজের মজুদ প্রায় শেষের পথে। আরেকটি কারণ হচ্ছে, বর্তমান সময়ে জমিতে রোপণ করা পেঁয়াজ বৃষ্টিতে আবাদি জমিতেই  পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে আবারো নতুন করে বীজ তৈরি করতে হয়েছে কৃষকদের। ফলে পেঁয়াজের মজুদ কমেছে। আরেকটি কারণ হচ্ছে, বন্যায় পেঁয়াজ পচে যে ঘাটতি হয়েছে সেটি পূরণে আমদানিকৃত পেঁয়াজ এখনও দেশের বাজারে পৌঁছায়নি।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের দাম ক্রমাগত কমছে। ভারতে পণ্যের দাম নির্ধারক ওয়েবসাইট 'এজিমার্কনেট' বলছে, 'চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ছিল মাত্র ৩২ টাকা। চলতি অক্টোবরে সেই পেঁয়াজের দাম ৩০ টাকা। আগস্টে পেঁয়াজের দাম ছিল ২৮ টাকা। চীন ও তুরস্কেও পেঁয়াজের দাম নিম্নমুখী।

রাজধানীর বাজারে দেশি পেয়াজের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে। আমদানিকারক এবং পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাম্প্রতিক বন্যা পরে আমদানি করে বাজারজাতকরণের সমস্যার কারণে পেঁয়াজের সংকট বেড়েছে। সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ না নেয়ায় সংকট তীব্রতর হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, দেশে প্রতিবছর পেঁয়াজের চাহিদা ২২ থেকে ২৪ লাখ মেট্রিক লাখ টন। যার মধ্যে দেশের উৎপাদন ক্ষমতা ১৮ থেকে ১৯ লাখ মেট্রিক টন। চাহিদার বাকি চার থেকে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন বাইরে থেকে আমদানি করা হয়। আমদানিতে সমস্যা হলেই পেঁয়াজের বাজারে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হয়।

নতুন পেঁয়াজ এলেই দাম কমে যাবে উল্লেখ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুন্সী শফিউল হক বলেন, 'বৃষ্টির কারণে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে কৃষকের মজুদ কমায় দাম বেড়েছে। এটা বেশিদিন স্থায়ী হবে না নতুন পেঁয়াজ ওঠার সময় ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। বাজারে নতুন পেঁয়াজ এলেই বর্তমান দাম নেমে যাবে।'