কনে পালালেন, শেষপর্যন্ত বর আর তার বাবাও রক্ষা পেলেন না

‘জামাই আদর’ নামে একটি শব্দ প্রচলিত আছে বাংলায়। শব্দটির মানে বুঝেন না এমন বাঙালি হয়তো পাওয়া যাবে না। তবে জামাই আদর নয় এবার বিয়ের আসর থেকে পুলিশের ভয়ে জামাইকে (বর) রেখে পালিয়েছে কনে। বাল্য বিবাহের দায়ে আটক করা হয়েছে বর ও বরের পিতাকে।

তখন কনের বাড়িতে বিয়ের ধুমধাম চলছে। বরযাত্রী এসেছে চললে আপ্যায়নের প্রস্তুতি। টেবিলে টেবিলে চলে গেছে খাবার। ঠিক এমন সময় বিয়ে বাড়িতে এসে থামলো পুলিশের গাড়ি! পুলিশের গাড়ি দেখেই বিয়ের আসর ছেড়ে যে যার মত পালাতে শুরু করল বিয়ে বাড়ি থেকে।

পালাতে শুরু করলো বর,কনেসহ নিকট আত্মীয়রাও। গ্রেপ্তার এড়াতে দৌঁড়ে খাটের নিচে ঢুকে আত্মগোপন করে বর ও বরের বাবা! বাইরে থেকে সেই ঘরের দরজায় ঝুলানো হয় তালা! সন্দেহ হলে তালা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। খাটের নিচে লাইট মারতেই বিড়ালের মতমাথা গুঁজে থাকা অবস্থায় পাওয়া যায় বর ও বরের বাবাকে।

শেষ পর্যন্ত বর ও বরের বাবা পুলিশের হাতে আটক হলেন। গাইবান্ধার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের কুমেদপুর গ্রামে ঘটেছে এমন ঘটনা। বাল্যবিবাহের অভিযোগে তাদের আটক দেখানোর পর গাইবান্ধা সদর থানায় দায়ের করা হয়েছে মামলা। ঘটনার বিষয়ে গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মো. শাহারিয়ার খান জানান, বৃহস্পতিবার আসামীদের আদালতে তোলার পর আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।

জানা গেছে, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহনাজ আক্তার গাইবান্ধা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হৃশিকেশ রায় বাল্যবিবাহের খবর জানালে তিনি পুলিশের একটি দল নিয়ে বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আসামিদের হাতে নাতে আটক করেন।

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহনাজ আক্তার জানান, বুধবার রাতে মধ্য কুমেদপুর গ্রামে সফিয়াল মিয়ার ১৩ বছরের মেয়ে মোছা. সুফিয়া বেগমের সাথে পাশের সোনাইডাংগা গ্রামের মো. ময়নুল মিয়ার ছেলে সেলিম মিয়া (১৭) বিয়ের আয়োজন চলছিল। আমরা মেয়ের নূন্যতম বয়স ১৮ এবং ছেলের ২১ বছর না হওয়া সত্ত্বেও গোপনে এ বাল্যবিবাহটি হচ্ছিল।

রাত ১০টার দিকে পুলিশ নিয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে কনে ও বরযাত্রীসহ সবাই পালিয়ে যায়। ঘণ্টাখানেক অভিযান চালিয়ে বাহির থেকে দরজায় তালা ঝুলানো ওই বিয়ে বাড়ির এক ঘরের দরজার তালা ভেঙ্গে খাটের নিচ থেকে আটক করা হয় বর ও বরের বাবাকে।