ইভিএম বন্ধ করে নির্বাচনে সেনাবাহিনী চান খালেদা জিয়া

সামনের নির্বাচনে ইভিএম বন্ধ করে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনার অধীনে কোনও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ চুরি করে জিততে চায়, তারা জনগণকে ভয় পায়। সেই চুরি ঠেকাতেই নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।'

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ রোববার বিকেলে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস (৭ নভেম্বর) উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে অবশ্যই সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিতে হবে।'

খালেদা জিয়া বলেন, 'একমাত্র নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে।' এ সময় উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, 'হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে? আপনারা ভোট দিতে পারবেন? এ সময় সমাবেশ থেকে জবাব আসে না, না। বেগম জিয়া স্থানীয় নির্বাচনে ব্যাপক চুরি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।

খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, 'শেখ হাসিনার অধিনে নির্বাচন হলে ভোট কেন্দ্র দখল করে আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা। পুলিশকে পাহারা দিতে বাধ্য করা হয়। এভাবেই তারা অবৈধভাবে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে এক দিকে সিল মারবে, আর ক্ষমতায় থাকবে।'

ইভিএম মেশিন নির্বাচনে ব্যবহার না করার দাবি জানিয়ে বেগম জিয়া বলেন, 'নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, অন্যের অন্যায় আবদার শুনবেন না। এদেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অবশ্যই নিরপেক্ষ সরকার হতে হবে, ইভিএম মেশিন বন্ধ করতে হবে।'

নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সেনাবাহিনী মোতায়েন করা না হলে হাসিনার গুণ্ডাবাহিনী পুরো কেন্দ্র দখল করে মানুষের ওপর অত্যাচার চালাবে। সেজন্যই সেনা মোতায়েন করতে হবে, তাদের হাতে নির্বাহী ক্ষমতা দিতে হবে। নিরপেক্ষভাবে ভোটগ্রহণের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।'

সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'কোন মতামত সরকারের বিরুদ্ধে গেলেই দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তার প্রমাণ প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। তাকে জোর করে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় বাইরে লোক পাঠিয়ে তাকে জোরপূর্বক পদত্যাগও করানো হয়েছে।'

দীর্ঘদিন পর রাজধানীতে সমাবেশের অনুমতি পেয়ে ব্যাপক উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা। সকাল থেকেই ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল নামে। যদিও রাজধানীতে অন্যান্য দিনের তুলনায় যান চলাচল ছিল তুলনামূলক কম। বিএনপির অভিযোগ, জনতার ঢল ঠেকাতেই সরকারের ইশারায় বন্ধ করা হয়েছে যান চলাচল।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এই বিশাল জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সভামঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, আবদুল্লাহ আল নোমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কেন্দ্রীয় নেতারা।