জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে দেশের প্রথম সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র

জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে দেশের প্রথম সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট। জামালপুরের সরিষাবাড়ির সিমলা বাজারে স্থাপিত তিন মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পাশাপাশি সুনামগঞ্জে নতুন একটি ফটোভোল্টাইক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং চট্রগ্রাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আরও দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার ঢাকায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুনামগঞ্জের সাল্লায় ৪০০ কিলোওয়াট ক্ষমতার একটি ফটোভোল্টাইক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং চট্টগ্রাম শিকলবাহায় ২২৫ মেগাওয়াট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন।

নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আহমেদ কায়কাউস পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ খাতের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন।

এসময় সচিব জানান, ‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে সরিয়াবাড়িতে দেশের প্রথম সৌর বিদ্যুৎকেন্দু নির্মাণ করা হয়। ‘এনগ্রিন সরিষাবাড়ী সোলার প্ল্যান্ট লিমিটেড’ নামের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জমি দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। আট একর জমিতে সাড়ে ১১ হাজার সোলার প্যানেল ব্যবহার করে তিন মেগাওয়াটের এই সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এতে বিনিয়োগ করেছে জার্মানির আইএফই এরিকসেন এজি, বাংলাদেশের কনকর্ড প্রগতি কনসোর্টিয়াম লিমিটেড ও জুপিটার এনার্জি লিমিটেড।’

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব জানান, আগামী এক বছরের মধ্যে আরও পাঁচটি কেন্দ্র থেকে ৩৩২ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।

বর্তমান সরকারের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে সচিব আহমেদ কায়কাউস জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, দেশে তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল মাত্র ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট আর গ্রাহক ছিল এক কোটি আট লাখ। বর্তমানে এই উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে ১৬ হাজার ১৪৯ মেগাওয়াটে এসে দাঁড়িয়েছে আর গ্রাহক সংখ্যা পৌঁছেছে ২ কোটি ৭০ লাখে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০১ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত আট বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি না পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশ পিছিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সমস্যা সমাধানে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় দেশে ২৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল আর এখন ১১২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।

উন্নয়নে বিদ্যুৎ একান্ত অপরিহার্য, এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টা ছিল, কত দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারি। আর আজ সারাদেশে ৪৫ লাখ সোলার প্যানেল উৎপাদনে চলে এসেছে। আমরা চাই মানুষ যেন উন্নত জীবন পায়, সেজন্যই এই প্রচেষ্টা।’

উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতার পর প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর কর্মকর্তা এবং স্থানীয় নাগরিকদের সঙ্গেও ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ এইচ এম আল-মুতাইরি এবং বাংলাদেশে কুয়েতের রাষ্ট্রদূত আদেল মোহাম্মদ এএইচ হায়াৎ উপস্থিত ছিলেন।