ফেলানী হত্যার ৭ বছরেও বিচার পায়নি পরিবার

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুন নিহত হওয়ার পর সাত বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বিচার পায়নি তার পরিবার। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের চৌধুরীহাট সীমান্ত চৌকির কাছে নিহত হন এই কিশোরী। ফেলানীর নিথর দেহ দীর্ঘ সময় কাঁটাতারে ঝুলে থাকার পর বিএসএফের সঙ্গে দফায় দফায় পতাকা বৈঠক করে লাশ আনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি।

বাংলাদেশের কিশোরী ফেলানীর মরদেহ কাঁটাতারে দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকা রক্তাক্ত সেই ছবি বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যম ও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনায় ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধীন চৌধুরী বিওপির কোম্পানি কমান্ডারের এফআইআরের ভিত্তিতে দিনহাটা থানায় করা জিডির ভিত্তিতে একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করা হয়।

এরপর বিএসএফের জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স আদালতে মামলাটির বিচার কাজ শুরু হলে দুই দফাশ ফেলানী হত্যার মূল অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়া হয়। এতে সংক্ষুদ্ধ হয়ে ন্যায়বিচার চেয়ে ভারতের উচ্চ আদালতে যান ফেলানীর পরিবার। দেশটির সুপ্রিম কোর্টে পরপর দুটি রিট করা হলেও আজ পর্যন্ত শুনানি হয়নি। আগামী ১৮ জানুয়ারি ওই দুই রিটের শুনানি একই সঙ্গে হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রতিনিয়ত হতাহতের ঘটনা ঘটলেও ফেলানীর হত্যাকাণ্ড দুই দেশেই আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্কের ঝড় তোলে। এমনকি ভারতেও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে বিএসএফ। এ মমলা বিচারকাজ নিয়েও নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। এ ঘটনার পক্ষে বিভিন্ন সময় দেশটির মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদেরও সাফাই করতে দেখা গেছে। ফেলানী হত্যার বিচার নিয়ে সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছে ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে ফেলানীর বাবাকে দিয়ে মামলাও করা হয়।

সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে ‘মাসুম’ কর্মকর্তা কিরিট রায় গণমাধ্যমকে বলেন, 'মামলাটি এতদিন ধরে ঝুলে থাকার সুর্নিষ্টি কোন কারণ নেই। তারপরেও মামলাটি পড়ে রয়েছে। এটি শুনানির জন্য যে কোন দিন তালিকায় আসবে। সেই সময় আবার মামলা হবে।' তিনি আরও বলেন, 'সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সব ক্ষেত্রে বিএসএফ থানায় অভিযোগ দায়ের করে যে, তারা আক্রান্ত হয়েছে এবং আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে। কিন্তু ফেলানীর ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আলাদা। সে একটা নিরস্ত্র মেয়ে ছিল, সেই মেয়েকে গুলি করে হত্যা করা হয়।'