পদ্মাপাড়েই হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ বিমানবন্দর!

পদ্মা সেতুর পর পদ্মাপাড়ে এবার নির্মাণ হবে দেশের সবচেয়ে বড় ও সর্বাধুনিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। একে ঘিরে তৈরি হবে বিশাল ইকনোমিক জোন। পদ্মাপাড়ের এই বিমানবন্দর শুধু দেশের সেরাই নয়, এটি হবে এশিয়ার অন্যতম সেরা বিমানবন্দর। যার নাম হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

শনিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব তথ্য জানান। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ওই বিমানবন্দর নির্মাণের পরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওপর চাপ কমবে। বিমানবন্দর নির্মাণ ঘিরে আমাদের বিশাল ও সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনা রয়েছে। এরই অংশ ঘিরে পদ্মাসেতু ঘিরে এই অঞ্চলে বিশাল এক অর্থনৈতিক হাব গড়ে উঠবে। তাতে পুরো অঞ্চলের অর্থনৈতিক চেহারাই পাল্টে যাবে।’

কনসালটেন্সি ব্যয় ১২০ কোটি টাকা: বিমানবন্দর নির্মাণে প্রকল্প ব্যয়সহ বিস্তারিত বিষয় আগামী জুন মাসে প্রকাশ করবে সরকার। ব্যয়-নকশা ইত্যাদি বিষয় নিশ্চিত করতে এখনও চলছে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ। চুক্তি অনুযায়ী, জাপানি কনসালট্যান্ট ফার্ম নিপ্পন কোয়েই কোম্পানি লিমিটেড ২০১৮ সালের জুন মাসে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করবে। এর জন্য জাপানি এ কোম্পানিকে বাংলাদেশ সরকার ১২০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।

কোথায় হবে এ বিমানবন্দর: মাদারীপুর অথবা শরিয়তপুরেই দেশের সেরা এ বিমানবন্দরটি নির্মাণ হবে। পদ্মার পাড়ে চর জানাজাত (শিবচর, মাদারীপুর) এর সম্ভাবনাই বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর এপাড়ে যে তিনটি স্থান সম্ভাব্য বলে ধরা হয়েছিলো সেগুলো হচ্ছে চর বিলাসপুর (দোহার, ঢাকা), কেয়াইন (সিরাজদিখান, মুন্সীগঞ্জ) ও লতব্দি (সিরাজদিখান, মুন্সীগঞ্জ)। বিভিন্ন বিষয় চূড়ান্ত করতে এখনও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের (ফিজিবিলিটি স্টাডিজ)কাজ চলছে। স্থান নির্ধারণেরর জন্য সমীক্ষা শুরু হয় ২০১৬ সালে। ওই সমীক্ষার কাজ শেষ হয় ২০১৭ সালের জুলাইয়ে।

পুরোদমে এখন চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ

কেন এই স্থান নির্বাচন: ঢাকা থেকে দূরত্ব, ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা, জমির পর্যাপ্ততা, আন্তর্জাতিক রুট, সড়ক, রেল ও নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভবিষ্যতে সম্প্রসারণের সম্ভাবনা, পুনর্বাসন, যাতায়াত খরচ ইত্যাদি বিবেচনা করেই স্থান নির্বাচন।

নির্মাণ ব্যয় ৫০ হাজার কোটি টাকা: বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিমান ও সিএ) আবুল হাসনাত মোঃ জিয়াউল হক বলেন, এ বিমানবন্দর নির্মাণে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হবে। এটি বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পগুলোর একটি। একে ঘিরে থাকবে সংযোগ সড়ক আর অত্যাধুনিক নগর-জনপদ।

প্রসঙ্গত, এর আগে মুন্সীগঞ্জের আড়িয়াল বিলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। ২৫ হাজার একর জমি নিয়ে বিমানবন্দরটি নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল সরকারের। ১০ হাজার একর জমিতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ আর ১৫ হাজার একর জমিতে বঙ্গবন্ধু সিটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় এলাকাবাসীর ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে আসতে বাধ্য হয়।