'উন্মুক্ত সরকারি তথ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে ওপেন একসেস বাংলাদেশ'

উন্মুক্ত সরকারি তথ্য বা ওপেন গভর্নমেন্ট ডেটা—ওজিডি বাস্তবায়নে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে 'ওপেন একসেস বাংলাদেশ' সে গতিকে তরান্বিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের সচিব জিয়াউল হক। শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় অডিটরিয়ামে ওপেন কন২০১৮ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের সচিব বলেন, 'ওপেন গভর্মেন্ট ডেটা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন করেছে, যা অনেক উন্নত দেশও করতে সক্ষম হয়নি। এসব আইনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আইন হচ্ছে, তথ্য অধিকার আইন ও হুসেইল ব্লোয়ার প্রোটেকশন আইন ইত্যাদি। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগকে সমর্থন করে সরকার। উন্মুক্ত সরকারির তথ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও দেশে তথ্য, শিক্ষা ও গবেষণায় ওপেন একসেস বাংলাদেশ সহায়ক ভূমিকা রাখবে।'

সম্মেলনে অংশ নেন দেশের শীর্ষস্থানীয় গবেষক ও শিক্ষাবিদরা। তারা বলেন, 'তথ্য, শিক্ষা ও গবেষণায় ওপেন একসেসের সোর্স ব্যবহার গবেষকদের কাজ সহজ করে দেবে। ওপেন একসেসের সোর্স ব্যবহার করে গবেষকরা সহজে নিজেদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে এবং সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রেও তা সহায়তা করবে।'

সম্মেলনে ওপেন একসেস বাংলাদেশ এর আহ্বায়ক কনক মনিরুল ইসলাম বলেন, গবেষণা কর্মের ক্ষেত্রে আমরা যেমন পিছিয়ে আছি তেমনি তথ্যের অভিগম্যতার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে আছি। ওপেন একসেস কাজ করে ৩টি বিষয় নিয়ে যার মধ্যে রয়েছে উন্মুক্ত তথ্য, উন্মুক্ত গবেষণা ও উন্মুক্ত শিক্ষা। এ সময় তিনি ভবিষ্যতে ওপেন একসেস বাংলাদেশ দেশে ও বিদেশে গবেষকদের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক যোগাযোগ তৈরি করবে এবং নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সম্মেলনে ওপেন একসেস-এর বিভিন্ন দিক ও গবেষণাপত্র প্রকাশক জার্নালের ইতিবাচক নেতিবাচক বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন গবেষকরা। গবেষণাপত্র প্রকাশের জন্য কি ধরণের জার্নাল বেছে নেয়া উচিত সেই ব্যাপারেও আলোচনা করেন তারা। বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, 'বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও প্রচারণার মাধ্যমে দ্রুত বাংলাদেশে ওপেন একসেস সোর্সগুলোর মাধ্যমে গবেষণা অতি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।'

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. হাসিনা আফরোজ, ইমতিয়াজ হাসান, ড. স্বর্প্না ব্যানার্জী, ড. তৌহিদ ভূইয়া, প্রফেসর মইন ঊদ্দিন চৌধুরী, প্রফেসর কে এম এ বারী, আব্দুল কাইয়ুম, প্রফেসর হেলাল উদ্দিন আহমদ, প্রফেসর মুস্তাফিজুর রহমান ও প্রফেসর মিরাজ আহমেদ চৌধুরী।

উল্লেখ্য, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ বুদাপেস্ট ঘোষণা অনুযায়ী দেশে যাত্রা শুরু করে ‘ওপেন একসেস বাংলাদেশ’। অনলাইন এই প্লাটফর্মটি আন্তজার্তিক ‘ওপেন একসেস’- এর একটি শাখা। ওপেন একসেস আন্দোলন গতানুগতিক তথ্য ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা, গবেষণা এবং প্রকাশনা শিল্প থেকে ভিন্ন একটি আধুনিক ধারনা এবং পৃথিবীব্যাপী গবেষকদের স্বেচ্ছাশ্রম ভিত্তিক সমন্বিত প্রয়াস। ওপেন এক্সেস মুভমেন্ট মনে করে, গবেষণা কার্যক্রমে জন সম্পৃক্ততার মতো মৌলিক অপরিহার্যতা ডিজিটাল টেকনলজি প্রসারের মাধ্যমে অর্জন সম্ভব। ওপেন এক্সেস অনলাইনে বিনামূল্যে তাৎক্ষণিক প্রাপ্য গবেষণা পত্র ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ, তথ্য এবং গবেষণাপত্র ব্যবহারের অধিকার নিশ্চিতের আন্দোলন করে থাকে। ওপেন একসেস মানে বিনামূল্যে আরো বেশি পাঠক, আরো বেশি গবেষণা সহযোগী, আরো বেশি সাইটেশন এবং ফলশ্রুতিতে বেশি বেশি স্বীকৃতি।