কারাগারে এক মাস, যেভাবে বদলে গেছেন খালেদা

দুর্নীতির এক মামলায় পাঁচ বছরের সাজা ঘোষণার পর থেকেই জেল জীবন ভোগ করছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার কারাগারে তার একমাস পূর্ণ হলো। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা খালেদাকে ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার একটি বিশেষ আদালত। সেদিন থেকে তিনি পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

একমাস পূর্তির ঠিক একদিন আগে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির ৭ সদস্য ও চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তিনি জানান, সরকারি দলের কোনো ধরনের উস্কানিতে পা না দিয়ে চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

কারা সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ এক মাসের জেলজীবনে খালেদা জিয়ার সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে অভ্যাসে। বিশেষ করে রাত জাগার পুরোনো অভ্যাস বদলে ফেলেছেন তিনি। প্রতিদিন রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে জেলে তার কক্ষের বাতি নিভে যায়। আবার সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠছেন তিনি। মাঝে-মধ্যে ফজরের নামাজের পর তাকে ঘুমাতে দেখা যায় বলেও জানা গেছে। 

সূত্র জানায়, জেলে খালেদা জিয়ার জন্য বরাদ্দকৃত টেলিভিশনটি তিনি গ্রহণ করেননি। কারণ, তাতে শুধু বিটিভি দেখানো হয়। তা তিনি দেখতে চান না। তবে তাকে পরিবেশন করা হচ্ছে ভালো মানের খাবার। খালেদার খাবারের মেন্যুতে রয়েছে পাবদা, শিং, রুই মাছ ও খাসির মাংস। সকালে নাস্তা করেন রুটি ও সবজি দিয়ে। প্রতিটি খাবার অন্তত দুবার পরীক্ষা করে পাঠানো হয়।

বুধবার বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কারাগারে দেশনেত্রীর মনোবল আগের চাইতে অনেক বেশি শক্তিশালী। সাহসিকতার সঙ্গে তিনি সব প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করছেন। তিনি গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে বলেছেন- শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই দেশে সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশ এবং গণতন্ত্রের স্বার্থে তিনি যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। তিনি জনগণের ওপর বিশ্বাস রেখেছেন।'

কারা মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, ‘কারাগারে ডিভিশনপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। একজন চিকিৎসক ও ফার্মাসিস্ট তার সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তার শারীরিক অবস্থা ভালো ও স্বাভাবিক রয়েছে।’

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশাল আয়তনের কারাগারে নিঃসঙ্গ খালেদা জিয়া বেশিরভাগ সময়ই চুপচাপ থাকেন। গৃহকর্মী ফাতেমা ও কারা মহিলা স্টাফদের সঙ্গেও মাঝে মধ্যে আলাপচারিতা করেন। এ ছাড়া নিয়মিত ইবাদত-বন্দেগী করেন ও পত্রিকা পড়েন তিনি।