বিশেষ ফ্লাইটে নেপালে হতাহত যাত্রীদের স্বজনরা

নেপালে বিধ্বস্ত বিমানের হতাহত যাত্রীদের স্বজনরা দেশটির রাজধানী কাঠমান্ডু পৌঁছেছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে তাদের নিয়ে ইউ-এস বাংলার একটি বিশেষ ফ্লাইট কাঠমান্ডুতে অবতরণ করে। এদের মধ্যে রয়েছেন হতাহতদের ৪৬ জন স্বজন, এয়ারলাইন্সটির ৭ কর্মকর্তা, বেবিচক কর্মকর্তা ও সরকারের প্রতিনিধিরা।

ইউএস-বাংলার জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ইউ-এস বাংলার বিশেষ ফ্লাইটটি মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে কাঠমান্ডু অবতরণ করেছে। এতে তাহতদের ৪৬ জন স্বজনের সঙ্গে ইউএস-বাংলার ৭ জন কর্মকর্তার একটি প্রতিনিধি দলও রয়েছে। এছাড়া সরকারের প্রতিনিধি ও বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা পৃথকভাবে যাচ্ছেন।’

এ বিষয়ে সিভিল এভিয়েশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা একেএম রেজাউল করিম জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে বিশেষ ফ্লাইটটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। ফ্লাইটে হতাহতদের স্বজন, এয়ারলাইন্সটির ৭ কর্মকর্তা এবং সরকারি-বেবিচক প্রতিনিধিরা রয়েছেন। তিনি আরও জানান, তারা ত্রিভুবন বিমানবন্দরে পৌঁছার পর নিহতদের মরদেহ দেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এছাড়া দুর্ঘনায় আহতদের চিকিৎসা কার্যক্রম তদারকি করবেন তারা।

এর আগে নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ফেসবুকে একটি তালিকা সরবরাহ করেন। যেখানে দেখা যায়, নিহতদের মধ্যে ২৫ জন বাংলাদেশি যাদের মধ্যে ২৩ জন যাত্রী এবং একজন কো পাইলট ও একজন ক্রু রয়েছেন। তালিকা অনুযায়ী ৯ জন বাংলাদেশি জীবিত রয়েছেন। সর্বশেষ প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশের এই ৯ জনসহ আহত মোট ২২ যাত্রীকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আজ ১২ মার্চ নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে দুর্ঘটনার কবলে পরে ইউ-এস বাংলার একটি উড়োজাহাজ। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী দুর্ঘটনায় ৬৭ জন আরোহীর মধ্যে অন্তত ৫০ যাত্রী মারা গেছেন।

নেপালে বাংলাদেশি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর চার দিনের সিঙ্গাপুর সফর কমিয়ে দ্রুত দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

হাসপাতালে ভর্তি আছেন যারা: কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আরোহীরা হলেন- এমরানা কবির হাসি, প্রিনয় ঢামি, সামিরা, কবির হোসাইন, মেহেদী হাসান, রিজওয়ানা আব্দুল্লাহ, স্বর্ণা সাইয়েদা কামরুন্নাহার, শাহরিন আহমেদ, মো. শাহীন বেপারী, কিশোর ত্রিপতি, হরি প্রসাদ সুবেদি, দয়ারাম তমরাকার, কিশান পান্ডে, বসন্ত বহরা, আশিষ রঞ্চিত, বিনোদ রাজ পুদয়াল, সনম সাক্ষী, দীনেশ হুমাগেইন এবং রেজুয়ানুল হক।

এর আগে মঙ্গলবার সকাল থেকেই দুর্ঘটনায় হতাহতদের স্বজনরা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে ভিড় জমান। নিহত, আহত ও নিখোঁজ হওয়া এসব হতভাগ্য মানুষগুলোর স্বজনদের চোখে মুখে ছিল উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা।

আহত এক যাত্রীর ভাই বলেন, ‘দুর্ঘনার কবলে পড়া ওই বিমানে আমার ভাইও ছিলেন। তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানকার চিকিৎসকদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, সে ভাল আছে।’