আপনি পড়ছেন

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‘থ্রেট দিবেন না।’ বুধবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদাকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আবেদনের শুনানির সময় তিনি এ কথা বলেন। শুনানি নিয়ে এজলাসে আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল দেখা দিলে প্রধান বিচারপতি এভাবে সতর্ক করেন।

high court

আলোচিত এ মামলায় বুধবার খালেদা জিয়ার জামিন রবিবার পর্যন্ত স্থগিত করেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ। একই সঙ্গে এই সময়ের মধ্যে জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছে।

আদালতে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। আর খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এজে মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

শুনানির শুরুতেই খুরশিদ আলম খান আদালতকে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশের সার্টিফায়েড কপি এখনো পাইনি। কপি পেলে আমরা লিভ টু আপিল করবো।’ এ সময় দুদকের আইনজীবীকে সিপি (লিভ টু আপিল) ফাইল করে আনতে বলেন প্রধান বিচারপতি।

সিপি ফাইল করতে রবিবার-সোমবার পর্যন্ত সময় চেয়ে সে পর্যন্ত খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত রাখার কথা বলেন দুদকের আইনজীবী। এরপর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আদালত বলেন, ‘ঠিক আছে সিপি ফাইল করে আসেন রবিবারের মধ্যে। এ পর্যন্ত জামিন স্টে থাকবে।’

এসময় খালেদার অপর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমাদের (আসামি পক্ষের) বক্তব্য তো শুনেনই নাই। আমাদের কথা আগে শোনেন। না শুনে এভাবে আদেশ দিতে পারেন না।’ এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘শুনতে হবে না। রবিবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। ওই দিন আসেন, তখন সব শুনবো।’

প্রধান বিচারপতির উদ্দেশ্যে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আপনি একতরফাভাবে শুনানি করে আদেশ দিলে আদালতের প্রতি পাবলিক পারসেপশন খারাপ হবে।’ এর জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা পাবলিক পারসেপশন দেখি না। কোর্টকে কোর্টের মতো চলতে দিন।’

এরপরই আপিল বিভাগের কার্যতালিকা থেকে অন্য মামলার শুনানি শুরু হয়। শুনানির একপর্যায়ে খালেদার পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী নেতা গিয়াস উদ্দিন আহমদ আদালতকে বলেন, ‘আপনি তো না শুনেই একতরফা আদেশ দিলেন। আমাদের কথা শুনতে হবে। কেন শুনবেন না?’

তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কার কথা শুনবো? কার কথা শুনবো না, তা কি আপনার কাছে শুনতে হবে?’ গিয়াস উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে আবারও একই কথা বলেন। পরে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনি কি আদালতকে থ্রেট করছেন?’ জবাবে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘(আসামি পক্ষের কথা) শুনে তারপর আদেশ দিতে হবে।’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘থ্রেট দিবেন না।’

শুনানির মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে উদ্দেশ করে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘আপনি তো কোর্টকে শেষ করে দিলেন।’ অ্যাটর্নি জেনারেল চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় আইনজীবীদের একটি অংশ ‘দালাল, দালাল’ বলতে বলতে আদালত কক্ষ ত্যাগ করেন।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, রাষ্ট্রপক্ষের ৫১৭ নং এবং দুদকের ৫১৮ নং ফাইল কার্যতালিকায় যথাক্রমে ১ ও ২ নম্বরে ছিলো। ফাইল দুইটির শিরোনাম- যথাক্রমে ‘রাষ্ট্রপক্ষ বনাম খালেদা জিয়া’ এবং ‘দুর্নীতি দমন কমিশন বনাম খালেদা জিয়া।’

মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে খালদা জিয়ার জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন দুটি করা হয়। শুনানির পর দুপুরে আবেদন দুটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়েছিলেন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া কারাদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে গত সোমবার খালেদা জিয়ার চার মাসের অন্তর্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছিলেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ জামিনের এ আদেশ দেয়া হয়েছিলো।

জামিন আদেশ দেওয়ার সময় হাইকোর্ট বলেছিলেন, খালেদা জিয়া বয়স্ক নারী। তার নানার শারীরিক জটিলতা রয়েছে। এসব বিবেচনায় তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হলো।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে ওই দিন বিকালে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এই মামলায় খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারিক আদালত। করা হয় জরিমানাও। খালেদা ও তারেক ছাড়া অন্য চার আসামি হলেন- সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক এমপি ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান। এর মধ্যে তারেক রহমান ইংল্যান্ডে এবং পলাতক রয়েছেন কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.