‘আজকে জবাবটা দিয়েছি, বটমলেস বাস্কেট না আমরা উন্নয়নশীল দেশ’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারা বলেছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে কী করবে? তারা তো স্বাধীন হলে একটি তলাবিহীন ঝুড়ি হবে। আজকে তাদের জবাবটা দিয়ে দিয়েছি। বটমলেস বাস্কেট না, আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশ।’ বঙ্গবন্ধুর ৯৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ১৮ মার্চ, রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সভায় প্রধানমন্ত্রী এই আত্মপ্রত্যয়ী মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। ১৯৭৫ সালের পর প্রায় ৩৭ বছরে আমরা আজকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট না আসলে এই অর্জন আরও অনেক পূর্বেই হতে পারত। কারণ এর পরে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু যে অর্জন করতে পেরেছেন তারপর ২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা দেশকে এক কদমও এগিয়ে নিতে পারেনি। না পারাটাই স্বাভাবিক। কারণ তারা যেহেতু স্বাধীনতা চায়নি, বাংলাদেশ চায়নি তাই বাংলাদেশের মানুষ ভাত পাক, মাথা গুঁজবার ঠাঁই পাক এটা তারা চায়নি। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হোক তা তারা কোনদিন চায়নি। এদেশের মানুষ রোগে ধুঁকে ধুঁকে মারা যাক এটাই তারা চেয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিন বছরের মধ্যে যেহেতু স্বল্পোন্নত দেশ হয়েছিলাম, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এবং আর মাত্র পাঁচটা বছর সময় পেলে বাংলাদেশ বহু আগেই উন্নয়নশীল দেশ হতে পারত। এটা আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যে, স্বাধীনতার দশ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত দেশ হতে পারত। বাংলাদেশ যাতে আগাতে না পারে সে জন্যই তখন ষড়যন্ত্র হয়েছিল।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস। এই স্বাধীনতা দিবস আমরা ভিন্নভাবে উদযাপন করবো। কারণ যারা বাংলাদেশ স্বাধীন হলে তলাবিহীন ঝুড়ি হবে বলেছিল। তাদের সেই জবাবটা দিয়ে দিয়েছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ।’

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে স্বাধীন বাংলাদেশ হত কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমাদেরকে স্বাধীনতা দেওয়ার জন্যই বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ করেছেন। এ কারণে আমরা তারই নেতৃত্বে স্বাধীনতা পেয়েছি। তিনি জন্মগ্রহণ না করলে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম কি না সন্দেহ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন।

সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পী হাশেম খান, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, আবদুল মতিন খসরুসহ আরো অনেকে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বাবা শেখ লুৎফর রহমান ও মা সায়েরা খাতুনের কোল আলো করে বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে মুজিব ছিলেন তৃতীয়।

মধুমতী নদীর তীরে বেড়ে ওঠা মুজিবের ডাক নাম ছিল খোকা। ১৯৬৯ সালে এই ছোট্ট খোকা মুজিব থেকে হয়ে যান বঙ্গবন্ধু। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক সামরিক অভ্যুত্থানে এই রাজনীতির কবি মৃত্যুবরণ করেন।