‘বর্ষবরণে সরকারি নির্দেশ অপরাধীদের সমর্থন দিচ্ছে’

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বর্ষবরণ উৎসব আয়োজনে সরকার যেসব নির্দেশনা দিয়েছে তা উল্টো অপরাধীদের সমর্থনে যোগাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নারী নিরাপত্তা জোটের আহ্বায়ক সুলতানা কামাল। বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে নববর্ষ ১৪২৫ উদযাপনে নারীকে শৃঙ্খলিত না করার আহ্বান শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

নারী নিরাপত্তা জোট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৫ সালে বর্ষবরণ উৎসবে নারীদের যৌন হয়রানির তিন বছর হয়ে গেলেও সেই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিচার করা হয়নি। তার ওপর এ বছর উৎসব শেষে সন্ধ্যার আগে ঘরে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে প্রশাসন। এটা শুধু নারীদের ঘরে বন্দী রাখার অপচেষ্টাই নয়, সংবিধানকেও তাচ্ছিল্য করার প্রয়াস। এ ঘোষণা নারীর মুক্ত চলাচল, স্বাধীনতা ও ক্ষমতায়ন বাধাগ্রস্ত করবে।

সুলতানা কামাল বলেন, 'রাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবে নির্যাতনকারীদের কাছে নতি স্বীকার করার শামিল। যারা ভয়-ভীতি দেখায়, নির্যাতনের সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে তারাই ২৪ ঘণ্টা মাঠে থাকবেন। তাদের জন্য কোনো নির্দেশনা না রেখে সরকার পরোক্ষভাবে অপরাধীদের সমর্থন দিচ্ছে, তাদের কাছে হার মানছে।'

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীকে ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখার এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

সভায় এসিড সারভাইবার্স ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সেলিনা আহমেদ বলেন, ‘উন্নয়নের কথা বলে আমরা নারীকে আবদ্ধ করছি, তাদের চলাচলের স্থান বদ্ধ করে ফেলছি। কিন্তু নারীকে বন্দী রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। নারীকে নির্যাতন করে অবরুদ্ধ করে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া কখনোই সম্ভব নয়।’

সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমে প্রকাশিত নারী নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা হয়। ২০১৭ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয়টি জাতীয় পত্রিকায় আসা সংবাদে দেখা যায়, এসময় ১ হাজার ৮৮৭টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে ছিল ৪৯৩টি ধর্ষণ, ৪৩০টি হত্যা ও ১৭৯টি আত্মহত্যা। সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে রাজধানী ঢাকাতে।