রাজীবের দুই ভাইয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিতে চায় ক্যামব্রিয়ান গ্রুপ

রাজধানীতে দুই বাসের চাপায় ডান হাত হারানো তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হোসেনের মৃত্যুর পর তার দুই ভাইয়ের পড়াশোনার সব দায়িত্ব নিতে চেয়েছে বিএসবি ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপ। তারা রাজীবের দুই ভাইয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়ার সকল ব্যয়ভার বহন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।

বিএসবি ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান লায়ন এমকে বাশার ইউএনবিকে জানান, তারা এরই মধ্যে রাজীবের আত্মীয়-স্বজনদের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘রাজীবের দুই ভাইয়ের হোস্টেল ভাড়াসহ উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ালেখার সব খরচ বহন করবো। তারা চাইলে ক্যামব্রিয়ানে এইচএসসি পর্যন্ত অথবা কুরআন-ই-হাফেজ তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় আলিম পর্যন্ত পড়ালেখা করতে পারবে।’

রাজীবের ফুফু জাহানারা এবং চাচা জাহিদুল ইসলামের বরাত দিয়ে এডুকেশন গ্রুপের সমন্বয়ক আনিসুর রহমান বলেন, তারা পটুয়াখালী থেকে ঢাকায় এসে এ বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন।

উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল সরকারি তিতুমীর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাজীব হোসেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) একটি বাসে করে ক্লাসে যাচ্ছিলেন। তিনি বাসটির পেছনের দরজায় ডান হাত বাহিরে রেখে দাঁড়িয়েছিলেন রাজীব।

বিআরটিসি’র বাসটি যখন সোনারগাঁও ক্রসিং এলাকায় পান্থকুঞ্জ পার্ক এলাকায় দাঁড়ায়, সেই মুহূর্তে অপর একটি বাস ফুটপাথের মাঝের জায়গা দিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় রাজীবের হাত দুই বাসের মাঝে আটকে যায় এবং এক পর্যায়ে তার বাহু থেকে তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রায় দুই সপ্তাহ তিনি জীবনের সাথে যুদ্ধ করে মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

২০০৭ সালে বাবা মারা যাওয়ার পর বড় ভাই এবং অভিভাবক রাজীব টিউশনি করে নিজে পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট দুই ভাই আব্দুল্লাহ হৃদয়(১৪) এবং মেহেদী হাসান বাপ্পীর (১৫) পড়াশোনা ও অন্যান্য দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। রাজীবের বয়স যখন আট, তখন তার ১০ মাসের ছোট ভাই রেখে মারা যান মা। পরবর্তীতে নিকটস্থ আত্মীয় স্বজনের বাড়ি বাড়ি থেকে বড় হয়েছেন রাজীব এবং তার ভাইয়েরা।