সাত জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত আরো ৮ জন

দেশের সাতটি জেলায় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরো ৮ জনের নিহতের কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফেনী, কুমিল্লা, জামালপুর, কুষ্টিয়া, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও ও রংপুরে মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত এসব ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য, মাদক বিরোধী অভিযানে গেলে তাদের লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা গুলি ছুড়লে পাল্টা গুলিবিনিয়ে এসব নিহতের ঘটনা ঘটে। র‌্যাব-পুলিশের দাবি, নিহতরা ‘মাদক ব্যবসায়ী’। তাদের বেশির ভাগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

গাইবান্ধা ও ফেনীতে র‌্যাব এবং কুমিল্লা, কুষ্টিয়া, জামালপুর, ঠাকুরগাঁও, ও রংপুরে পুলিশের সাথে ‘মাদক ব্যবসায়ীদের’ এসব ‘বন্দুকযুদ্ধের’ কথা জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

নিহতদের মধ্যে দু’জন কুষ্টিয়ায় আর বাকি জেলাগুলোতে একজন করে নিহত হয়। কুষ্টিয়ায় নিহতরা হলেন- কুমারখালির ফটিক ইলিয়াস গাফ্ফার (৩৭)ও বেড়ামারা নওদাপাড়া গ্রামের গুলবার শেখের ছেলে লিটন শেখ (৪০), কুমিল্লার নুরুল ইসলাম ইছা, গাইবান্ধার পলাশ বাড়ি উপজেলার রাইগ্রামের আবদুল জব্বারের ছেলে রাজু মিয়া, ফেনীতে চট্টগ্রামের চন্দনাইশের ওলি আহম্মেদের ছেলে মোহাম্মদ ফারুক (৩৫), রংপুর শহরের আবহিরামপুর সুকনচাকি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে শাহিন (৪৫), জামালপুর পৌর এলাকার বগাবাইদ গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের পুত্র মোশারফ হোসেন বিদ্যুৎ (৪০) ও ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর পারুয়া গ্রামের ভেলসা মোহাম্মদের ছেলে আফতাবুল (৩৮)।

এর আগে রবিবার রাতে দেশের সাতটি জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৯ জন ও সোমবার রাতে নয়টি জেলায় ১১ জনের নিহতের কথা জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ নিয়ে গত ১২ দিনে সারাদেশে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৪৮ জন নিহত হলেন। এর মধ্যে গত তিনদিনে ২৮ জনের নিহতের কথা জানাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যাদের বেশির ভাগকেই ‘মাদক ব্যবসায়ী’ হিসেবে দাবি করছে র‌্যাব-পুলিশ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, এসব ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনাস্থল থেকে তারা বিপুল পরিমাণ মাদক, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে। এছাড়া কিছু কিছু স্থান থেকে মাদক বহনে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারসহ কয়েকটি গাড়ি জব্ধ করা হয়েছ।

সম্প্রতি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার মধ্যেই সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান চলমান থাকবে। কোনো মাদক ব্যবসায়ী ছাড় পাবেন না। মঙ্গলবার নিজ দপ্তরে এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধ্য হয়ে অস্ত্র ব্যবহার করছে। আক্রান্ত হওয়ায় র‌্যাব-পুলিশ পাল্টা আক্রমণ করছে।

এদিকে মাদক বিরোধী অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রতিদিন নিহতের ঘটনায় মানবাধিকার সংগঠন, রাজনৈতিক দলসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা আইনের আওতায় এনে মাদক ব্যবসায়ী, পাচার ও সরবরাহকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে।