আপনি পড়ছেন

চট্টগ্রামে তীব্র গ্যাস সংকটে নগরীর বেশির ভাগ এলাকায় জ্বলছে না চুলা। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টা মিটিমিটি জ্বললেও বিকাল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত এই হাল প্রায় নিভু নিভু। ফলে পবিত্র রমজান মাসে গ্যাসের চরম সংকটে ইফতারের আগে নাজুক পরিস্থিতে প্রতিদিনই পড়ছে রোজদার গৃহিনীরা।

gas crisis in chittagong 2018

একাধিক গৃহিনী ও গৃহকর্তা জানান, গ্যাস সংকটে বেগ পেতে হয় ইফতার তৈরিতে। আবাসিক এলাকার ফ্ল্যাট বাড়িতেও বাধ্য হয়ে জ্বালাতে হয় লাকড়ি।

অন্যদিকে অনিচ্ছা সত্বেও বাইরে থেকে ইফতারি কিনে রোজা ভাঙতে হচ্ছে অনেক পরিবারের। আবাসিকের পাশাপাশি এই বিপুল ঘাটতির খেসারত দিতে হচ্ছে চট্টগ্রামের শিল্প খাতের গ্রাহকদেরও।

চট্টগ্রাম আসকার দিঘী এলাকার বাসিন্দা মুছা হাওলাদার বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে বাসায় রান্না করে ইফতার করা সম্ভব হচ্ছে না শুধুমাত্র গ্যাস সংকটের কারণে। অনিচ্ছা সত্বেও প্রতিদিন হোটেল থেকে ইফতার এনে খেতে হয়।

মিয়াখান নগরের বাসিন্দা গৃহিনী ফরিদা বেগম বলেন, রমজান মাসে চরম এ গ্যাস সংকট মোকাবেলায় ফ্ল্যাট বাড়িতেই বাধ্য হয়ে মাটির চুলা তৈরি করে লাকড়ি জ্বালিয়ে ইফতারি তৈরি করতে হচ্ছে। তারা এ ভোগান্তি হতে পরিত্রাণ পেতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা গ্যাস সংকটে ভুগছে। বিশেষ করে বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এ সংকট আরো চরম আকার ধারণ করে। কেউ কেউ কাঠের ও তুষের তৈরি চুলা বানিয়ে ইফতার সামগ্রী তৈরি করছে। আবার কেউ কেরোসিন তেলের স্টপ চুলা কিংবা ইলেক্ট্রিক ওভেনে রান্নার কাজ সেরে নিচ্ছে। এতে করে প্রতিমাসে গ্যাস বিল পরিশোধ করা ছাড়াও তাদের অতিরিক্ত টাকা গুণতে হচ্ছে মাস শেষে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় নগরীর মোমিন রোড, জামালখান, রহমতগঞ্জ, আন্দরকিল্লা, পাথরঘাটা, কাজীর দেউড়ি, মুরাদপুর, বিবির হাট, হামজারবাগ হিলভিউ আবাসিক এলাকা, আগ্রাবাদ, চৌমুহনী, মধ্যম হালিশহর, মির্জাপুল, চান্দগাঁও ফরিদার পাড়া, বটতল মাজার গেইট, ঘাটফরহাদবেগ, বৌবাজার, ডিসি রোড, চকবাজার, বড়মিয়া মসজিদ, কাপাসগোলা, কেবি আমান আলী রোডসহ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪১ টি ওয়ার্ডের মধ্যে অন্তত ৩০ টি ওয়ার্ডে গ্যাস লাইনে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় গ্রিড থেকে চট্টগ্রামে গ্যাসের বরাদ্দ কমে গেছে। ফলে পাইপ লাইনে প্রেসার কমে যাওয়ায় এই সংকট বিরাজ করছে।

এদিকে গত ২৫ মে থেকে কাতার থেকে আমদানি করা এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহ শুরু করার কথা থাকলেও পাইপলাইনে ত্রুটি থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না জানিয়ে কর্তৃপক্ষ বলেন, এলএনজিবাহী জাহাজে ভাসমান প্লান্ট থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমেই নগরীতে গ্যাস সরবরাহ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু পাইপলাইন পরীক্ষায় ত্রুটি পাওয়ায় সরবরাহ পিছিয়ে যায়। তবে আগামী এক মাসের মধ্যে সরবরাহ শুরু হলে গ্যাসের এ সংকট আর থাকবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে গ্যাসের আবাসিক গ্রাহকসংখ্যা প্রায় পৌনে চার লাখ। সেই সাথে প্রায় ৩ হাজার শিল্প কলকারখানার বাণিজ্যিক গ্রাহক রয়েছে চট্টগ্রামে। সব মিলিয়ে গ্রাহকদের চাহিদা মতো দৈনিক ৫৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন শুধু চট্টগ্রামে। সে জায়গায় বর্তমানে চট্টগ্রামে সরবরাহ হচ্ছে ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। যা চাহিদার তুলনায় অর্ধেকেরও কম।

চট্টগ্রামে গ্যাসের সংকট গত এক যুগ ধরে বিরাজ করছে জানিয়ে জামালখান এলাকার বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, প্রায় শুনে আসছি বিদেশ থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস এনে দ্রুত এর সমাধান হবে। কিন্তু মাস যায় বছর যায় এভাবে কেটে গেছে যুগ। সমাধান কিছুই হচ্ছে না। অথচ মাস শেষে বিলটা কিন্তু মাফ নেই।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী খায়েজ আহমেদ মজুমদারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, রমজানের শুরু থেকে এ সংকট একটু প্রকট আকার ধারণ করেছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আগে চট্টগ্রাম নগরীর গ্যাস পাম্পগুলো বিকেল ৩টা থেকে বন্ধ থাকতো কিন্তু রমজানের শুরু থেকে তা বন্ধ হচ্ছে বিকেল ৫টার পর। এই কয়েক ঘন্টার বাড়তি চাহিদার চাপটি পড়ছে আবাসিকের গ্রাহকের উপর। তবে সমস্যার কথা তুলে ধরে উত্তরণের জন্য পেট্রোবাংলাকে চিঠি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.