আপনি পড়ছেন

কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া প্রবল বর্ষণে বন্যার পাশাপাশি পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটছে। প্রকৃতির অস্বাভাবিক এ আচরণে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি প্রাণহানির খবরও পাওয়া গেছে। এদিকে ঈদকে সামনে রেখে এ জনদুর্ভোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

fatickchari bonna 2018

ইউএনবি’র চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙামাটির প্রতিনিধিদের খবরে আকস্মিক বন্যার ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। চার দিনের টানা বর্ষণে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়িতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। আকস্মিক বন্যার কারণে এসব উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী ও গৃহহারা হয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। বন্যার পানির তোড়ে এক যুবক নিখোঁজের পাশাপাশি প্রচুর ক্ষয়-ক্ষতিরও খবর পাওয়া গেছে।

হাটহাজারী উপজেলার প্রায় সবকটি ইউনিয়নের আঞ্চলিক সড়ক, অসংখ্য ঘরবাড়ি, মাছ চাষের পুকুর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। হালদা নদী সংলগ্ন একাধিক স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বন্যার পানি বাঁধের ভিতরে প্রবেশ করছে।ফলে সেখানকার মানুষের কষ্ট বেড়েছে।

এছাড়াও হাটহাজারী-রাঙ্গামাটি মহাসড়ক, হাটহজারী-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক ও হাটহাজারী অক্সিজেন মহাসড়কের ছয় স্থানে মহাসড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারণে মঙ্গলবার দিনভর এই তিন মহাসড়কে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে।

এদিকে জেলার বানভাসীদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোকে যথাযথ সহায়তা পৌঁছে দেয়া ও বানভাসীদের উদ্ধার করে সেখানে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। এছাড়া ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতার জন্য সার্বক্ষণিক কন্ট্রোলরুম চালু করা হয়েছে।

প্রবল বর্ষণে খাগড়াছড়ি শহরের অধিকাংশ এলাকা ও দীঘিনালা উপজেলার মেরুং বাজার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ে ধসের ঘটনা ঘটেছে।বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। মেরুং ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। শতাধিক পরিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে।

সড়কে পানি উঠায় খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়ক ও দীঘিনালা-লংগদু সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি।

পাহাড় ধসের আশঙ্কায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক রাশেদুল ইসলাম জানান, জেলার কোথাও এখনো পর্যন্ত বড় ধরনের পাহাড় ধসের খবর পাওয়া যায়নি।

চার দিনের টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে বান্দরবানের সাংগু, মাতামুহুরী ও বাকঁখালী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এতে নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

আকস্মিক বন্যায় বান্দরবান-চট্টগ্রামের প্রধান সড়কের বাজালিয়ার মাহালিয়া এলাকায় সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে বান্দরবান-রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কেরানীরহাট-চট্টগ্রাম সড়ক বন্ধ হয়ে সারাদেশের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

এদিকে সোমবার থেকে বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সড়কে স্বর্ণ মন্দির এলাকায় বেইলী ব্রীজ ডুবে যানচলাচল এখনো বন্ধ রয়েছে।জেলা শহরসহ লামা এবং রুমা উপজেলার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত ১,৪৫০টি পরিবারের প্রায় ছয় হাজার মানুষকে চিহ্নিত করে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাবার জন্য মাইকিং করা অব্যাহত আছে।

জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় বান্দরবান জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। ৭টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দুর্গতদের জন্য ইতোমধ্যে ২৩টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে জেলা শহরে ১০টি, লামাতে ৩টি, আলীকদমে ৪টি, নাইক্ষংছড়িতে ৪টি এবং রোয়াংছড়ি উপজেলায় ২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

এদিকে প্রবল বর্ষণের কারণে রাঙামাটির সাথে বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া অবিরাম বৃষ্টিপাত ও সীমান্ত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে কাচালং নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার ১৪টি গ্রাম সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ।

পাহাড়ী ঢল নেমে আসায় বাঘাইছড়ির বিস্তৃণ এলাকার কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। আশ্রয়ের খোঁজে বানভাসীরা স্কুল, কলেজ ও মার্কেটসহ বিভিন্ন পাকা ভবনে অবস্থান নিয়েছেন।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ জানান, বাঘাইছড়িতে পাহাড়ী ঢলে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে সেখানে বসবাসরত মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

এছাড়া কক্সবাজারের প্রতিনিধি জানান প্রবল বর্ষণে রোহিঙ্গা শিবিরে ৩৭টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে একটি শিশু নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। ইউএনবি।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.