আসছে মাদকবিরোধী আইন, সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড!

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার মাদকবিরোধী একটি আইন তৈরি করছে যেখানে মাদক ব্যবসায় জড়িত ও এর পৃষ্ঠপোষকদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হবে।

বুধবার জাতীয় সংসদে স্বতন্ত্র এমপি এম রুস্তম আলী ফরাজির প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আইনটিতে মাদক ব্যবসায়ী, মাদক সিন্ডিকেট এবং গডফাদার তথা পৃষ্ঠপোষকদের মৃত্যুদণ্ড প্রদানের প্রস্তাব থাকবে।’

তিনি বলেন, বর্তমান আইনে মাদকের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু, মাদক ব্যবসার মাস্টারমাইন্ডদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুযোগ কম। সেজন্য মাদক ব্যবসার মাস্টারমাইন্ডরা সহজেই পার পেয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সরকার ‘মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮’ নামে একটি আইন প্রণয়ন করছে যাতে মাদক ব্যবসায়ী, মাদক সিন্ডিকেট এবং গডফাদারদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া যায়। নতুন আইনের আওতায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মাদক ব্যবসায়ী বা ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকদের অর্থপাচার অপরাধের তদন্ত করার ক্ষমতা পাবেন।

তিনি আরো বলেন, সরকারের মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ এর আওতায় অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া চালানোর জন্য একটি পৃথক আদালত গঠন করার পরিকল্পনা রয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিষয়টি বিবেচনা করছে।

সরকার মাদক ও মাদক সম্পর্কিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান অব্যাহত রাখছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সমাজে মাদকের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য মাদক চোরাকারবারী, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকাসক্ত এবং মাদক চোরাচালান সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে এ বছরের ১৮ মে থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য, অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক চোরাচালানে ব্যবহৃত যানবাহন উদ্ধার ও জব্দ করা হয়েছে।

‘এ পর্যন্ত ১৫,৩৩৩টি মাদক সম্পর্কিত মামলা নিবন্ধিত হয়েছে যাতে ২০,৭৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আদালতে হাজির করা হয়েছে’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করেন বলেন, সরকার মাদকের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের মাধ্যমে মাদক চোরাচালান বন্ধ করতে সক্ষম হবে এবং এভাবে তরুণদের সামাজিক অবক্ষয় থেকে রক্ষা করতে পারবে।

তিনি বলেন, সরকার মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

২০১৭ সালে ১,৩২,৮৮৩ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ১,০৬,৫৩৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ২৭,৩৪০টি মামলায় ৩৫,১১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করার জন্য তাদের তালিকা আপডেট করা হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।