আঙ্গুল তুলে শাসানো ছেলেদের ‘মানুষ’ হওয়ার আহ্বান...

কোটা সংস্কার আন্দোলনে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের আঙ্গুল তুলে শাসানো ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ‘মানুষ’ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, ‘গতকাল শহীদ মিনারে যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। যারা শিক্ষকদের ওপর আঙ্গুল তুলে শাসায় তারা মানুষ নয়। এ জন্য তাদেরকে বলব, ‘আবার তোরা মানুষ হ’।

১৬ জুলাই, সোমবার নিজ বিভাগের শিক্ষক তানজিমউদ্দিন খাঁনের ওপর লাঞ্চনার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে তিনি এ আহ্বান জানান। মানববন্ধনে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান ছাড়াও সহকারী অধ্যাপক সায়েমা আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক শেখ শামস মোরসালিন, প্রভাষক মোহাম্মাদ আলী সিদ্দিকীসহ বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন।

মানববন্ধনে প্রভাষক মোহাম্মাদ আলী সিদ্দকী বলেন, ‘শিক্ষকদের ওপর যারা আঙ্গুল তুলেছে, তারা সরকার দলীয় একটি বিশেষ সংগঠনের নেতাকর্মী। তারা ছাত্র কী না বা তারা তাদের সংগঠনের নীতি-আদর্শ মানে কী না, তা আমার জানা নেই। আর যারা শিক্ষকদের ওপর আঙ্গুল তুলেছে তারা যে গর্হিত কাজ করেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তারা ছাত্র নামের কলঙ্ক।’

বিভাগের শিক্ষার্থী সৌমি বলেন, ‘তানজিম স্যার আমাদের কাছে বাবার মত। একটি ন্যায্য দাবিতে দাঁড়ানোর কারণে তাকে লাঞ্চিত করা হয়েছে। শুধু তার ওপরেই নয় অন্যান্য যে সকল শিক্ষকরা ছিলেন তারাও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন। তাদের ওপর আঙ্গুল তোলার সাহস ছাত্রলীগ কোথা থেকে পায়? এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে জন্য প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করছি।’

শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তানজিম স্যারকে যে অপমান করা হয়েছে, তা আমরা কল্পনাও করিনি। ছাত্রলীগ নেতাদের বলতে চাই, আপনারা শিক্ষকদের অপমান করবেন না। কেন না আপনারা কখনো শিক্ষক হলে আপনারাও সম্মান পাবেন না।’ তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্র বলেন, ‘আপনারা যখন এ ধরণের কাজ করেন তখন কী আপনাদের মনে হয় না যে, আপনাদের নেত্রীর অপমান হয়।’

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘এবার তোরা ছাত্র হ’, ‘আমার ক্যাম্পাস কার দখলে’, ‘শিক্ষক আজ লাঞ্ছিত কেন’, ‘শিক্ষকের মর্যাদা আজ কোথায়?’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড বহন করেন। মানববন্ধন শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ডাকসু, কলা ভবন ঘুরে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে এসে শেষ হয়।

এদিকে ছাত্রলীগের ১০ থেকে ১২ জন নেতাকর্মী মিছিলটির পিছু নেন। পিছু নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটর প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য আমরা এসেছি।’