মোস্তফা জব্বার: বিলুপ্ত হবে ৫৭ ধারা, তবে...

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশ হলে আইসিটি এ্যাক্ট এর ৫৭ ধারা বিলুপ্ত হবে। তবে এখন পর্যন্ত এই ধারায় দায়ের করা মামলাগুলো যথানিয়মে চলবে। নতুন এ আইনের ৩২ ধারায় গুপ্তচরবৃত্তি শব্দ থাকবে না বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

শনিবার ছায়া সংসদের আদলে জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী একথা বলেন। তিনি বলেন, 'এ আইন বাক স্বাধীনতা হরণের জন্য নয়, ডিজিটাল অপরাধ দমনের জন্য। বিশেষত বাংলাদেশেই প্রথম এ আইন তৈরি করতে যাচ্ছে।'

মোস্তাফা জব্বার বলেন, 'ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর হবার পর দেশে বিদ্যমান আরো কিছু আইনের সংশোধন প্রয়োজন হতে পারে। তথ্য অধিকার আইনে বর্ণিত নাগরিক অধিকার সমুন্নত রেখেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরি করা হচ্ছে। দুর্নীতি বিরোধী সংবাদ পরিবেশনের জন্য এ আইন অন্তরায় হবে না, তবে অফিসিয়াল সিক্রেসি এ্যাক্ট লংঘন শাস্তিযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।'

ডিজিটাল অপরাধ কমাতে আইনী কাঠামোর পাশাপাশি ব্যাপক জনসচেতনতা প্রয়োজন বলে তিনি মতামত ব্যক্ত করেন।

তিনি আরো বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রন করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের টার্গেট নয় বরং ডিজিটাল অপরাধ নিয়ন্ত্রনই মূল লক্ষ্য। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমেই ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নিরাপদ সড়কের দাবীতে আন্দোলনের সময় যারা গুজব ছড়িয়েছেন, তাদের সবাইকে প্রযুক্তির মাধ্যমে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।

গুজব ছড়ানোকারীদের আইপি ঠিকানা ও মোবাইল ট্রেকিং এর মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করতে সক্ষম হওয়ায় তিনি এসময় আইনশৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দায়িত্বশীলতা বাড়ানোর জন্য যে আইন তৈরি হতে যাচ্ছে তা যেন নাগরিক অধিকারের পরিপন্থী, মৌলিক চেতনার পরিপন্থী না হয়ে মুক্ত সাংবাদিকতা বা মত প্রকাশকে সংকুচিত না করে। এক্ষেত্রে আইসিটি এ্যাক্ট এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর দুটি ধারা নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা নিস্পত্তি হওয়ার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে, চটকদার ছবি দিয়ে অপপ্রচার চালানো কিংবা কাউকে হেয় করে কোন সংবাদ ছড়িয়ে দেওয়া এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ফলে বিশ্বাস-ভালবাসা, মূল্যবোধ, পারিবারিক বন্ধন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা তৈরি হচ্ছে। তাই এই যোগাযোগ মাধ্যমের বেআইনি ব্যবহারের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়া উচিত।

বিতর্ক অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর তেঁজগাওস্থ এফডিসিতে। এবারের এই জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মোট ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহনের সুযোগ পাবে। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক আবু রইস, ড. এস এম মোর্শেদ এবং সাংবাদিক মোহাম্মদ খান । প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।