৩টি ফুটবল মাঠের সমান জাহাজ এখন বাংলাদেশে

আয়তনে তিনটি ফুটবল মাঠের সমান একটি জাহাজ এসেছে বাংলাদেশে। গত এক দশকে এর চেয়ে বড় কোনো জাহাজ বাংলাদেশে আসেনি। ‘এমটি হেগায়া’ নামের এই জাহাজটি লম্বায় এক কিলোমিটারের তিন ভাগের এক ভাগ। সোজা বাংলায়, জাহাজটিকে ধরে দাঁড় করিয়ে দিলে লম্বায় সেটি একটি ৮৯ তলা উঁচু ভবনকেও ছাড়িয়ে যাবে!

কোনরকম পণ্য বহন করা ছাড়াই জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে। দৈত্যাকৃতির এই জাহাজে পণ্য বোঝাই করা হলে এটির নিচের অংশের ২২ মিটার পানির নিচে থাকবে। এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমায় এতোটা গভীরতা নেই। তবে পণ্য বহন না করলেও এতো বড় এই জাহাজটির ৮ দশমিক ২ মিটার অংশ এখনও পানির নিচে রয়েছে।

লম্বায় ৩৩৪ দশমিক ৪৮৪ মিটার ও প্রস্থে ৫৮ দশমিক শূন্য ৮ মিটারের এই জাহাজটিতে ৩ লাখ ১০ হাজার ৫১৩ টন পণ্য বোঝাই করা যায়। আর জাহাজটির আয়তন বোঝাতে হলে ফুটবল মাঠের সঙ্গে তুলনা করলে কিছুটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে। একটি ফুটবল মাঠের সর্বনিম্ন আয়তন ছয় হাজার ৪০০ বর্গমিটার ও সর্বোচ্চ আট হাজার ২৫০ বর্গমিটার। তবে আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশন বা ফিফা’র মতে, একটি আদর্শ ফুটবল মাঠের আয়তন সাত হাজার ১৪০ মিটার। এদিকে এমটি হেগায়ার ডেক পাটাতনের আয়তনই ১৯ হাজার ৪২৬ বর্গমিটার, যা প্রায় তিনটি ফুটবল মাঠের সমান! জাহাজটির এক মাথা থেকে অন্য মাথায় হেঁটে যেতে সময় লাগবে পাক্কা ১৫ মিনিট!!

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের উপকূলে এস এন করপোরেশন (ইউনিট-৩) ইয়ার্ডে ‘এমটি হেগায়া’-কে ভাঙ্গার জন্য আনা হয়েছে। ২০ বছরের পুরোনো এই জাহাজটি বহুবার হাতবদল হয়ে এখন ঠাঁই নিয়েছে সীতাকুণ্ডে।

একটি কুয়েতি অয়েল কোম্পানির মালিকানায় থাকা এমটি হেগায়াকে পুরনো হয়ে যাওয়ায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) কাদরি শিপ রিসাইক্লিয়ারস লিমিটেডের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। এরপর সীতাকুণ্ডের এস এন করপোরেশন শিপইয়ার্ড জাহাজটি তাদের কাছ থেকে কিনে নেয়।

একেবারে নতুন হলে এই বিশাল আয়তনের একটি জাহাজের মূল্য পড়বে ৬৫০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা। তবে পুরনো এমটি হেগায়াকে কিনতে এতো টাকা খরচ করতে হয়নি এস এন করপোরেশনকে। মাত্র ১ কোটি ৭৯ লাখ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় মাত্র ১৫০ কোটি টাকায় জাহাজটির মালিকানা পেয়েছে তারা।

এস এন করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, জাহাজটি ভেঙ্গে এটি থেকে মোট ৩১ ধরনের পণ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া পাওয়া যাবে ৪২ হাজার ৪৪১ টন লোহা! আর এটি ভাঙ্গতে লাগবে ছয় মাস!!