আপনি পড়ছেন

পাঁচ যুগ ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে লালমনিরহাটে বিমানবন্দর। এক হাজার ১৬৬ একরের বিশাল পরিধির ঐতিহাসিক এই বিমানবন্দর এখন কৃষি খামার! বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিমানবন্দরটি চালু হলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগে নতুন দ্বার খুলবে রংপুর অঞ্চলের।

lalmonirhat airport

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমানবন্দরটি চালু হলে নেপাল, ভুটান ও ভারতের অন্তত ১৩টি অঙ্গরাজ্যের মানুষ অনায়াসে কম খরচে আসতে পারবে বাংলাদেশে। একইভাবে বাংলাদেশিরাও ওইসব দেশ ও রাজ্যে অল্প খরচে যাতায়াত করতে পারবে। এছাড়া এটি চালু হলে লালমনিরহাটের বুড়িমারি স্থলবন্দর, কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

জানা যায়, ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে এক হাজার ১৬৬ একরের পরিধির বিমানবন্দরটি। এটি এখন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি 'কৃষি ফার্ম' মাত্র। অবশ্য ১৯৫৮ সালে স্বল্প পরিসরে পুনরায় এই বন্দরে বিমান সার্ভিস চালু হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে এটিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেডকোয়ার্টার করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। এ কারণে চার কিলোমিটার রানওয়ে, বিশাল টারমাক, হ্যাংগার, ট্যাক্সিওয়েসহ সবই এখন পরিত্যক্ত। ১৯৮৩ সালে বিমানবাহিনী এই বিমানবন্দরে কৃষি প্রকল্প গ্রহণ করে। মূল্যবান এই সরকারি স্থাপনাজুড়ে মিলিটারি ফার্মের তত্ত্বাবধায়নে গড়ে তোলা হয়েছে গরুর খামার এবং সংরক্ষিত ভূমিগুলিতে চলছে কৃষি কাজ।

লালমনিরহাট বাসিন্দারা বলছেন, বিমানবন্দরটি যাত্রী পরিবহনে উন্মুক্ত করা হলে রাজধানীসহ দেশের অন্য অঞ্চলের সাথে যাতায়াতের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। এতে সরকারও রাজস্ব খাতে লাভবান হবে। আর যাতায়াতে বেঁচে যাবে এই এলাকার মানুষের মূল্যবান কর্ম-ঘন্টাও। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিমানবন্দরটি চালু হলে ভবিষ্যতে নেপাল, ভুটান, শিলিগুড়ি রুটে যাত্রী পরিবহনে মাধ্যমে অর্জন করতে পারবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মর্যাদাও।

জানা গেছে, বিমানবন্দরটি ব্যবহারের উপযোগী হলেও শুধু ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘনের অজুহাতে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু বলেন, ‘বিমানবন্দরটি চালু হলে এলাকার উন্নয়ন অনেকাংশে ত্বরান্বিত হবে।’

এফবিসিসিআইর পরিচালক সিরাজুল হকও মনে করেন, বিমানবন্দরটি চালু হলে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। রংপুর অঞ্চলে ঘটবে অর্থনৈতিক বিপ্লব। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের যোগাযোগেও ঘটতে পারে নতুন দ্বার।

লালমনিরহাট বিমান বাহিনীর রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিটের সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, 'ভুটান সরকার লালমনিরহাট বিমানবন্দরটি ব্যবহারের জন্য পছন্দের তালিকায় রাখলেও আকাশসীমা নিয়ে জটিলতা থাকায় তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। সূত্রটি জানায়, ভারত, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় একটি চুক্তি হলে বন্দরটি ব্যবহার করা যাবে। তবে এ ব্যাপারে লালমনিরহাট বিমানবাহিনীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে অপরগতা প্রকাশ করেন।'

ব্রিটিশ আমলে নির্মিত লালমনিরহাট বিমানবন্দরটি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ ভারতীয় ইংরেজ সরকারকে রক্ষার একটি প্রধান ক্ষেত্র। এই ঘাঁটি না থাকলে ভারতবর্ষ এবং ইংরেজদের ভারতবর্ষ ছাড়ার ইতিহাস হতো অন্যরকম। জাপানের সহযোগিতায় নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’ চলে এসেছিল বার্মা অতিক্রম করে আসাম সীমান্তে। লালমনিরহাটের এই বিমান ঘাঁটি ব্যবহার করে ব্রিটিশরা ঠেকিয়ে দেয় আজাদ হিন্দ ফৌজের সেই অগ্রযাত্রাকে।

লালমনিরহাটকে তখন বলা হতো ‘গেটওয়ে টু নর্থ-ইস্ট' এবং 'মাউথ অব আসাম'। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তখনকার বিশাল প্রদেশ বৃহত্তম আসামে প্রবেশের একমাত্র পথ ছিল এই লালমনিরহাট। রেলপথের ‘লালমনিরহাট জংশন’ এবং বিমানপথে ‘লালমনিরহাট জাহাজ-ঘাঁটি’। 

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.