আপনি পড়ছেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে কতভাগ কোটায় ভর্তি নেওয়া হয় এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান। ২৫ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ফলাফল ঘোষণা পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কোটায় ভর্তি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

vc aktarujjaman talking with journos

উপস্থিত সাংবাদিকরা উপাচার্যর কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘কোটায় কত পার্সেন্ট ভর্তি করা হয়?’ জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘কোটায় আমাদের বিদ্যমান যে বিধান আছে, ওইটাই ডিন সাহেবরা অনুসরণ করেন।’

এ সময় সাংবাদিকরা জানতে চান, ‘কত পার্সেন্ট?’ জবাবে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ওটা আছে, ওটা...যেভাবে আছে প্রচলিত বিধান। সেই মোতাবেকেই এটা করা হয়। যারা চার হাজার ৭৪৭ (এ বছর পাশের সংখ্যা) এর মধ্যে আছেন।’ এ সময় উপার্যের পাশেই বসে ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুস সামাদ এবং কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো: দেলোয়ার হোসেন। তারাও বিষয়টি এড়িয়ে যান।

জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে অনার্স ভর্তিতে উপজাতি, হরিজন ও দলিত সম্প্রদায় কোটা, প্রতিবন্ধি (দৃষ্টি, বাক ও শ্রবণ) কোটা, খেলোয়াড় কোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা (মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিসহ) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সন্তানদের জন্য পোষ্য কোটা চালু রয়েছে। তবে এসব কোটায় ঠিক কত পরিমাণ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় সে হিসাব জানা যায়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, ‘শিক্ষক এবং প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের সন্তানদের পোষ্য কোটা তুলে দেওয়া উচিত। তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারিদের সন্তানদের জন্য একটা নির্দিষ্ট সংখ্যায় পোষ্য কোটা থাকতে পারে। যেহেতু তার বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় কোন পজিশনে চাকরি করে না। কিন্তু শিক্ষক বা প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তারা যারা আছেন তারা সারাজীবন কী করলো যে, সে তার বাচ্চাটাকে সারাদেশের বাচ্চাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় দিতে ভয় পাচ্ছে? শিক্ষকতা জীবনের স্বার্থকতাই কী তার, প্রথম শ্রেণির মর্যাদাপ্রাপ্ত অফিসার হওয়ারই বা স্বার্থকতা কী? যদি তার বাচ্চাকে কোটাতে ভর্তি করাতে হয়!’

এই শিক্ষক জোর দিয়ে বলেন, ‘এটা সংবিধানের সঙ্গে যায় না। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলি, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ ৯৭৩ এর সাথে যায় না। এটা বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে যায় না। আমি জেনে শুনে দায়িত্ব নিয়ে বলতেছি, বিদেশি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনকি আমাদের পাশ্ববর্তী দেশগুলোর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ছেলে-মেয়ে, প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য কোন ‘পোষ্য কোটা’ বলতে কিছু নাই।’

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে বিদ্যমান কোটা প্রথা নিয়ে সাংবাদিক ও কলামিস্ট লুৎফর রহমান সোহাগ বলেন, ‘এটি নিয়ে সমালোচনা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে একটি আসনের বিপরীতে যখন অসংখ্য শিক্ষার্থীকে প্রতিযোগিতা করতে হয়, তখন শুধু পাস করেই কোটা দিয়ে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে। এ বৈষম্যের সুযোগ নিয়ে মেধাবীদের বঞ্চিত করে গড়পড়তা শিক্ষার্থীরাও দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোয় ঢুকছে। এসব বিবেচনায় প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, দলিত-হরিজনদের মতো পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যৌক্তিকভাবেই কোটা সুবিধা পেতে পারে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ত্রী-স্বামী-সন্তানদের জন্য কীভাবে ‘পোষ্য কোটা’ রাখা হয় তা বোধগম্য নয়।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনোভাবেই সমাজের ‘অনগ্রসর অংশ’ বলা যায় না। এর চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে, তাদের স্ত্রী-স্বামী-সন্তানরা অন্যদের তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহে বেড়ে ওঠার সুযোগ পাচ্ছে বেশি। সামন্ত যুগের মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের রাজ্যে রাজার মতোই নীতি প্রণয়ন করছে। ফলে প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, হরিজন-দলিতদের তুলনায় ‘পোষ্য কোটায়’ নির্লজ্জভাবে বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে- ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার পরই পোষ্য কোটা বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। তাহলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, হরিজন-দলিতদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিভঙ্গি কী দাঁড়ায়? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি মনে করে, তাদের সন্তানরা ওদের চেয়েও পিছিয়ে?’

প্রসঙ্গত, এ বছর ‘খ’ ইউনিটে ২ হাজার ৩৭৮টি আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ৩৩ হাজার ৮৯৭ জন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ৪ হাজার ৭৪৭জন। পাশের হার ১৪ শতাংশ। অন্যদিকে ‘গ’ ইউনিটে ১ হাজার ২৫০টি আসনের বিপরীতে আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ২৬ হাজার ৯৬৩ জন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ২৫ হাজার ৯৫৮ জন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে দুই হাজার ৮৫০ জন। পাসের হার ১০ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.