আপনি পড়ছেন

রাজধানীর ধানমন্ডি-১ এ ফিফথ ফ্লোরের দুয়ারী নামে একটি রেস্টুরেন্টে কফি খেতে গিয়েছিলেন পাঁচ জন। খাওয়া শেষে নামার সময় লিফটে উঠেন তারা। উঠার কিছুক্ষণের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে লিফটেই আটকা পড়েন তারা। এ সময় তারা আতঙ্কিত হয়ে উদ্ধারের সম্ভব্য সকল চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যমে পোস্ট করলে এটি ভাইরাল হয়।

stuck in the elevator in the capital

ভুক্তভোগীদের একজন শুভ্রা কর। তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এখানে তার পোস্টটি তুলে ধরা হলো-

‘রাত সোয়া ৯টার দিকে আমি, সিক্তা, শাকিল ধানমন্ডি-১ এর হাসপাতাল থেকে বের হয়ে কফি খাওয়ার জন্য সায়েন্স ল্যাব মোড়-এর আড়ং-এর উপরে ফিফথ ফ্লোরের দুয়ারীতে যাই। সেখানে কফি খেয়ে ১০টার একটু পরে বের হই। আমরা ছাড়া তখন আর দুইজন ছিল ওখানে। আমরা ৫জন একসাথেই বের হয়ে লিফটে উঠি। ফিফথ ফ্লোর থেকে লিফটে উঠার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইলেক্ট্রিসিটি চলে যায় এবং লিফটটি ফোর্থ ফ্লোর ও থার্ড ফ্লোরের মাঝামাঝি এসে বন্ধ হয়ে যায়।

lift at dhanmondi

লিফট বন্ধ হবার সাথে সাথে আমাদের রিয়েকশন ছিল যে, এখনি জেনারেটর ছাড়া হবে এবং লিফট চলতে শুরু করবে। কিন্তু জেনারেটর এর আওয়াজ পাবার পরেও যখন দেখা গেলো লিফট চলছে না তখন আমরা লিফটের ভেতরে স্টিকার লাগানো ইমারজেন্সি সার্ভিসম্যান এর নাম্বারে ফোন দেই।

প্রথমজনকে ফোন দেয়ার পর তিনি জানান, তিনি এখন ডিউটিতে নেই এবং তৃতীয়জনকে ফোন দিতে বলেন। তৃতীয়জনকে ফোন দেয়ার পর তিনি দেখছি বলে ফোন রেখে দেন। এরপর আড়ং-এর নাম্বারে ও ওখানে গ্রামীণ ইউনিকলো-এর নাম্বারে ফোন দেই, কিন্তু তারা কেউ কোন সদুত্তর দিতে পারে নি। আমাদের সাথে অন্য যে ভাইয়া-আপু ছিলেন, তারা তাদের ড্রাইভারকে ফোন করে সিকিউরিটিকে ইনফর্ম করতে বলেন। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হচ্ছে না দেখে আমরা ৯৯৯-এ ফোন দেই। সেখান থেকে ফায়ার ব্রিগেড এর সাথে কথা বলা হয়। তারা বলেন, তারা দেখছেন কি করা যায়। এরপর আমরা আশা নিয়ে বসে থাকি যে ফায়ার ব্রিগেড যেহেতু কাছেই আছে দ্রুতই চলে আসবে অথবা অন্য কোন উপায় হবে এবং শীঘ্রই আমরা মুক্তি পেতে যাচ্ছি।

এর মধ্যে ঐ ভাইয়া আপু তাদের ড্রাইভার এর সাথে কথা বলেন এবং জানতে পারেন যে, লিফটের সাথে জেনারেটর এর কানেকশন নেই। শুধু আড়ং-এর শোরুমের ভেতরে সার্ভিস আছে। আর যিনি বিল্ডিং-এর সুপারভাইজার তিনি লিফটসহ যাবতীয় সকল চাবি নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। তাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। ইলেকট্রিসিটি না আসা পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলেও নিচ থেকে জানানো হয়।

আমরা তখন একমাত্র আশা ফায়ার ব্রিগেড-এর জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। কিন্তু আধা ঘণ্টা হয়ে যাওয়ার পরেও যখন কোন সমাধান হচ্ছিল না এবং সাফোকেশন বাড়ছিল We got really scared! আর তখনই আমি ফেসবুকে হেল্প চেয়ে পোস্ট দেই যে যদি কেউ কোনভাবে হেল্প করতে পারেন। কারণ আমার হার্ট এর সমস্যার কারণে এরকম সাফোকেশনে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল।

যাই হোক, এরপর সাথে থাকা ঐ ভাইয়া ইলেক্ট্রিক বোর্ডের নাম্বার ম্যানেজ করে সেখানে ফোন দেন। তারা বলে ধানমন্ডি শাখায় ফোন দিতে। সাকিল ধানমন্ডি শাখায় ফোন করার পর সেখান থেকে আবার বলা হয়, এটা তাদের আওতায় না, আজিমপুর শাখায় ফোন দিন। আজিমপুর শাখায় ফোন করার পর তারা বলেন, এটা তাদের আওতায় না, জিগাতলা শাখায় ফোন দিন। ততক্ষণে আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। সাকিল ওনাকে বলে যে, ভাই আমরা একজনের পর একজনকে ফোন করে যাচ্ছি আর সবাই বলছেন, আরেকজনকে ফোন দিতে। কিন্তু কেউ উদ্ধার করছে না, কোন সমাধান দিচ্ছে না। আমরা আর কতজনকে ফোন করবো? তো এই কথায় হয়তো ওনার মায়া হয় এবং ওনি বলেন যে, জিগাতলা অফিসে ফোন দিয়ে দেখতে যদি সমাধান না হয় তাহলে ওনি চেষ্টা করবেন।

এরপর আমরা জিগাতলা শাখায় ফোন দেই কিন্তু কেউ ফোন ধরে না। এর মধ্যে আজিমপুর শাখার ব্যক্তি আবারও ফোন দেন এবং জানতে চান সমাধান হয়েছে কিনা। হয়নি শুনে তিনি বলেন, তিনি ব্যাপারটা দেখছেন। আরো ১০ মিনিট সময় লাগতে পারে। আমাদের কাছে তখন ১০ মিনিট মানে অনেক সময়।

এর মধ্যে আমাদের ফোন পেয়ে নিচে আমাদের অনেক মানুষ চলে এসেছে। তাদের চিৎকার চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছে কিন্তু কেউই কিছু করতে পারছিল না। এভাবে আরো ১০/১৫ মিনিট যায়। ততক্ষণে কারো ফোনে চার্জ শেষ, কারো ব্যালেন্স শেষ, নেট শেষ। অবশেষে রাত ১১টায় আজিমপুর শাখার ঐ ব্যক্তির বদৌলতে বিদ্যুৎ ফিরে আসে এবং লিফট চালু হয়। আমরা যখন লিফট থেকে বের হই তখন ফায়ার ব্রিগেড এসে মাত্র পৌঁছায়। ফায়ার ব্রিগেড এর ওনাদের কাছে পরিস্থিতি সব খুলে বলার পর ওনারা সিকিউরিটি ইনচার্জকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কেন লিফটের সাথে জেনারেটর এর কানেকশন নেই? কেন বিল্ডিং-এর সকল কর্মী, গ্রাহক চলে যাওয়ার আগেই বিল্ডিং এর সুপারভাইজার চাবি নিয়ে বাড়ি চলে গেলো? ইত্যাদি।

আজ ভাগ্য ভালো যে আমাদের মধ্যে কোন অ্যাজমার পেশেন্ট কিংবা বয়স্ক বা শিশু বা গুরুতর অসুস্থ কেউ ছিলেন না। নইলে পরিস্থিতি আরো ভয়ংকর হতে পারতো। একটা এতো বড় মার্কেট আর এতো ঝাঁ চকচকে শোরুম অথচ ইমারজেন্সি সিচুয়েশনে কোন ফিডব্যাক নেই, লিফটের সাথে জেনারেটর এর কানেকশন নেই! আজকে যেকোনো কিছুই তো ঘটতে পারতো!

যাই হোক, আমরা ধানমন্ডি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি এই ঘটনায়। জিডি নং ৬৫৫, তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০১৮। তদন্ত কর্মকর্তা এস আই হাশেম আলী এর দায়িত্বে আছেন। শেষ পর্যন্ত যে সবাই নিরাপদে ফিরতে পেরেছি সেটাই এখন শুকরিয়া! অনেকেই খোঁজ নিয়েছেন তাদের সকলের জন্য ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা। সবাই নিরাপদে থাকুন আর প্লিজ সায়েন্স ল্যাবে আড়ং এর মার্কেট সহ সব জায়গায় লিফটে উঠার সময় সতর্ক থাকুন।’

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.