এরশাদ: নির্বাচন হবে, নাকি হবে না জানি না

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এক জনসভায় বলেছেন, 'দেশে নির্বাচন হওয়া নিয়ে আশঙ্কায় আছি। কোন নির্বাচন হবে, নাকি হবে না জানি না। একটি দল সাত দফা দাবি দিয়েছে আর সরকার ওসব মানতে চায় না। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সেটি মানা সম্ভবও নয়।'

শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন 'সম্মিলিত জাতীয় জোট'র মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। এর জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে।'

আসন্ন নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দিয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, 'জাতীয় পার্টি জোটগতভাবে নির্বাচন করবে। আমরা ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেয়ার চেষ্টা করবো। এজন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।' তিনি দাবি করেন দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টিই ক্ষমতায় আসবে। পাশাপাশি তিনি জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের দাবি জানান।

মহাসমাবেশে এরশাদ বলেন, 'ক্ষমতা ছাড়ার পর আমাকে নির্মম অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। নব্বই সালের পর থেকে জেলে যাওয়ার ভয়ে আমি একদিনও শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। কখন আমাকে জেলে যেতে হয়। বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ। এটিই হয়তো আমার জীবনের শেষ নির্বাচন। আমার জীবন আমি দেশ ও জাতির জন্য উৎসর্গ করলাম।' এসময় তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির ১৮ দফা লক্ষ্য ঘোষণা করেন।

এরশাদ বলেন, 'জাতীয় পার্টির ঘোষিত ১৮ দফাই জনগণের মুক্তির পথ। আমরা দেশে প্রাদেশিক সরকারব্যবস্থা কায়েম করতে চাই। নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন চাই। উপজেলা পদ্ধতির পূর্ণাঙ্গ রূপ বাস্তবায়ন করতে চাই। সংখ্যালঘুদের সংসদে কোটা চাই এবং দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চাই। শিক্ষাব্যবস্থারও সংস্কার চাই।'

'বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছেন আর এরশাদ স্বাধীনতার সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন বলেন মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ।

মহাসমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, এসএম ফয়সল চিশতী, ফখরুল ইমাম এমপি, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, বিরোধী দলের চিফ হুইপ নুরুল ইসলাম ওমর এমপি, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ডা. রুস্তুম আলী ফরাজী এমপিসহ আরো অনেকে।