স্বপ্নের উড়োজাহাজের ‘পাইলট' প্রধানমন্ত্রী

সর্বাধুনিক প্রযুক্তির উড়োজাহাজ ড্রিমলাইনার যুক্ত হয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে। আজ বুধবার দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রিমলাইনার হংসবলাকা উড়োজাহাজটি পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় নতুন উড়োজাহাজটির অভ্যন্তরে পাইলটের আসনে বসেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় উড়োজাহাজটির আধুনিক সব প্রযুক্তি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন তিনি।

বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ জানান, প্রধানমন্ত্রী উড়োজাহাটি পরিদর্শন করে মোনজাত ও ফিতা কেটে হংসবলাকাকে গ্রহণ করেন। এরপর পাইলট ও কেবিন ক্রুদের সঙ্গে উড়োজাহাটির বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন তিনি। বিমানের সফলতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।  

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল, সচিব মহিবুল হক, বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এএম মোসাদ্দিক আহমেদ।

বিমান জানিয়েছে, আগামী ১০ ডিসেম্বর বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করবে হংসবলাকা। ঢাকা-লন্ডন রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে এ উড়োজাহাজ দিয়ে। এছাড়া দাম্মাম ও ব্যাংকক রুটেও উড়বে হংসবলাকা।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির ১০টি নতুন বিমান ক্রয়ের জন্য দুই দশমিক এক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে। হংসবলাকা যোগ হওয়ার মধ্য দিয়ে বিমানবহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫টি। ‘গাঙচিল’ ও ‘রাজহংস’ নামের বাকি দুটি ড্রিমলাইন বহরে যুক্ত হবে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে।

উড়োজাহাজটির ইঞ্জিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই)। শব্দ কমাতে উড়োজাহাজটির ইঞ্জিনে যুক্ত রয়েছে শেভরন প্রযুক্তি। উড়োজাহাজের নিয়ন্ত্রণ হবে ইলেকট্রিক ফ্লাইট সিস্টেমের মাধ্যমে। কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি হওয়াতে উড়োজাহাজটি ওজনে হালকা। ভূমি থেকে উড়োজাহাজটির উচ্চতা ৫৬ ফুট। দুটি পাখার আয়তন ১৯৭ ফুট। এর মোট ওজন ১ লাখ ১৭ হাজার ৬১৭ কিলোগ্রাম, যা ২৯টি হাতির সমান। এর ককপিট থেকে টেল (লেজ) পর্যন্ত ২৩ লাখ যন্ত্রাংশ রয়েছে।

টানা ১৬ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম ড্রিমলাইনার পরিচালনায় তুলনামূলক শতকরা ২০ ভাগ কম জ্বালানি খরচ হবে। ঘণ্টায় ৬৫০ কিলোমিটার বেগে উড়তে পারবে। এর আসন রয়েছে ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাস ২৪টি আর ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাস। বিজনেস ক্লাসের আসনগুলো বানিয়েছে অ্যাসটেলা। আর ইকোনমি ক্লাসের আসনগুলো হেইকোর বানানো। বিজনেস ক্লাসের আসনগুলো ৬৫ ইঞ্চি পিচ, ইকোনমি ক্লাসের আসন ৩১ ইঞ্চি পিচ। বিজনেস ক্লাসে ২৪টি আসন ১৮০ডিগ্রি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরমদায়কভাবে বিশ্রাম নিতে পারবেন। যাত্রীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য রয়েছে ওয়াইফাই সুবিধা। আকাশে উড্ডয়নের সময় ফোন কলও করতে পারবেন যাত্রীরা।