প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার একটাই সুযোগ আছে...

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দুই ধাপে প্রার্থিতা বাতিল হওয়াদের জন্য এখন একটাই সুযোগ রয়েছে। তা হলো উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়া। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত দিনে আদালতের মাধ্যমে খুব কম সংখ্যক প্রার্থিতা ফিরেছে। আর ফিরলেও তা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

জানা গেছে, মনোনয়নপত্র বৈধতা পেতে আপিলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাচ্ছেন অধিকাংশ প্রার্থী। এজন্য ইসির দেয়া রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি সংগ্রহ করছেন তারা। সার্টিফাইড কপি পাওয়ার পর আদালতে আপিল করা হতে পারে। এরই মধ্যে রোববার সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেছেন জাতীয় পার্টির এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।

আপিলেও প্রার্থিতা বাতিল হওয়াদের অনেকে বলছেন, সামান্য ভুলের কারণে ইসি তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে। তারা উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পাবেন বলে আশা করছেন।

ইসি সূত্র জানায়, এবার নির্বাচনে মোট ৩ হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। যাচাইয়ের সময় (২ ডিসেম্বর) ৭৮৬ জনের মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। পরবর্তীতে ৫৪৩ জনের আপিলের শুনানি শেষে গত তিন দিনে ২৪৩ জনের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেয়া হয়।

বিএনপি থেকে বাতিল হওয়া ১৪১ জনের মধ্যে ৭০ জন তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। মনোনয়ন বাতিল থাকাদের তালিকায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলটির বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতার নাম রয়েছে।

এ বিষয়ে ইসির বক্তব্য, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়াদের অনেকেই ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তাই তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এখন আপিলের রায়ে যারা সন্তুষ্ট নয়, তারা প্রার্থিতা ফিরে চাইলে উচ্চ আদালতে যেতে পারবেন।

এদিকে ইসির রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় হাজী সেলিম ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াসহ অনেকেই দুই বছরের বেশি দণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। তারা জামিন নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন, তখন তো তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়নি। একই আইনে এখন কেন আমাদের প্রার্থিতা বাতিল হবে?’

মনোনয়নপত্র বাতিল করে ইসির দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়াও। তিনি বলেন, ‘ইসির সার্টিফাইড কপি পাওয়ার পর আদালতে যাব। এজন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

এ বিষয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘ইসির সিদ্ধান্তে কেউ সংক্ষুদ্ধ হলে, প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে যেতে পারবেন। এটা তার সাংবিধানিক অধিকার।’

এর আগে তিন দিনব্যাপী আপিলে শুনানিতে মোট ২৪৩ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। এরমধ্যে প্রথম দিন বৃহস্পতিবার ৮০ জন, দ্বিতীয় দিন শুক্রবার ৭৮ জন এবং তৃতীয় দিন শনিবার ৮৫ জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী সবমিলিয়ে ২ হাজার ৫২২ জন প্রার্থী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটে অংশ নিচ্ছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন ১৮৫ জন।