আপনি পড়ছেন

মহান বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী সাভারে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল সালাম জানায়, শহিদদের স্মরণে বেঁজে উঠে বিউগলে করুণ সুর।

pm hamid at national memorial

পরে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে নেতা-কর্মীদের নিয়ে স্মৃতিসৌধে ফুল দেন শেখ হাসিনা। এরপরই শ্রদ্ধা জানান বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, তিন বাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্য, প্রধান বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিকরা।

পরে স্মৃতিসৌধে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কুতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে শহিদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

respect to national memorial 1

দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করে দেয়া জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল নেমে আসে। এ সময় কারো হাতে ছিলো ফুল, কারো হাতে পতাকা-  শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় শহিদদের স্মরণ করা হচ্ছে।

৪৮ বছর আগে এই দিনে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তাক্ত সংগ্রামে পাক হানাদারদের পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে আনে সংগ্রামরত বাঙালিরা। বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নেয় নতুন দেশ বাংলাদেশ। সেই থেকে ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস। শোষণ আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে বাংলার আকাশে উড়ছে লাল-সবুজের পতাকা।

১৯৫২ সালে মায়ের ভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে প্রতিবাদের যে সূচনা হয়েছিল সেই চেতনাই পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে বাঙালির বিজয়ের মঞ্চ তৈরি করে। দীর্ঘকাল শোষণ আর বঞ্চনার শিকার হওয়ার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে পরাধীনতার শৃংখল ভেঙে আজকের এই দিনেই জন্ম হয় স্বাধীন বাংলাদেশের।

এই বিজয়ের শুরুটা মোটেই সহজ ব্যাপার ছিল না। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ কালো রাতে পাক বাহিনী নির্বিচারে হত্যা করে বাঙালিদের। এরপর বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্যদিয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পরে স্বাধীনতা সংগ্রাম। বাংলার দামাল ছেলেরা পরিবার-পরিজন ছেড়ে চলে যায় যুদ্ধের ময়দানে। সুসজ্জিত পাক বাহিনীর বুলেটের বিপক্ষে পেতে দেয় বুক। পাক বাহিনী তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর-আলশামদের সহযোগিতায় গ্রামে গ্রামে চালায় ধ্বংসযজ্ঞ। বুক খালি হয় হাজারো মায়ের।

৭১ সালের শেষ দিকে সারাদেশেই মুক্তিবাহিনীর কাছে নাস্তানাবুদ হতে থাকে পাক বাহিনী। এরমধ্যে প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের সহযোগিতায় গড়ে ওঠে মিত্রবাহিনী। এই মিত্রবাহিনীর হামলায় দিশেহারা হয়ে পিছু হটতে থাকে খান সেনারা। অবশেষে এই ডিসেম্বরেই বাঙালির বিজয় নিশ্চিত হতে থাকে। চারদিক থেকে আসতে থাকে মুক্তিবাহিনীর বিজয়গাঁথা। নিরুপায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাধ্য হয় আত্মসমর্পণ করতে।

পরাজয় আসন্নের ঠিক আগ মুহূর্তে ১৪ই ডিসেম্বর এ জাতিকে পিছিয়ে দিতে রাজাকার-আলবদর-আলশামসদের সহযোগিতায় হত্যা করা হয় জাতির সূর্য সন্তানদের। বেছে বেছে হত্যার শিকার হন দেশবরেণ্য অধ্যাপক, ডাক্তার, সাংবাদিক, কবি, সাহিত্যিকরা। এর ঠিক একদিন পরই ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ৯৩ হাজার দখলদার সৈন্য নিয়ে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে পাক হানাদার বাহিনী। জন্ম হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।

প্রখ্যাত গীতিকার খান আতাউর রহমান যথার্থই লিখেছেন- [এক নদী রক্ত পেড়িয়ে / বংলার আকাশে রক্তিম সূর্য আনলে যারা / তোমাদের এই ঋণ কোনদিন শোধ হবে না / না না না শোধ হবে না] স্বাধীন রাষ্ট্র জন্ম নেয়ার পেছনে রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। স্বাধীনতার লাল-সূর্যটা ছিনিয়ে আনতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন ৩০ লক্ষ স্বাধীনচেতা মানুষ। সম্ভ্রম হারিয়েছে দুই লক্ষ মা-বোন। আজকের এই দিনে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি বাঙালি জাতির সেই সব সূর্য সন্তানদের। যাদের ত্যাগ তিতিক্ষার পর বাংলার আকাশে উদীত হয় স্বাধীনতার নতুন সূর্য। আর বাংলার জমিনে আমরা গেয়ে উঠি আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.