আপনি পড়ছেন

অনেক পরিবর্তন ও সংস্কারের প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। জলবায়ু পরিবর্তন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ জাতীয় আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাদের ইশতেহারে গুরুত্ব পেয়েছে, যা তরুণ প্রজন্মের চাহিদা বলে দাবি করছে নব গঠিত এই নির্বাচনী জোট। 

dr kamal mandate

আজ সোমবার ঢাকাস্থ পূর্বাণী হোটেলের সম্মেলন কক্ষে ইশতেহার ঘোষণা করেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। পুরো ইশতেহারটি পাঠ করেন ঐক্যফ্রন্ট নেতা নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড, জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী, সুব্রত চৌধুরী, রেজা কিবরিয়া প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জাতীয় ঐক্যফ্রনন্টের নেতারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এসব অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে বলে ঘোষণা দেন। কিছু ভাষাগত পরিমার্জন সহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

jatiya oikya front logo final

ক) প্রতিহিংসা বা জিঘাংসা নয়, জাতীয় ঐক্যই লক্ষ্য: দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য সকল দল ও মতকে গুরুত্ব দেয়ার বিকল্প নেই। তাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে সকল জিঘাংসা ও প্রতিহিংসা পরিহার করে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা হবে। এক্ষেত্রে গত ১০ বছরের মামলা, গুম, খুন, বিচারবর্হিভূত হত্যা তদন্তে শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী, আইনজীবীদের সমন্বয়ে সর্বদলীয় সত্যানুসন্ধান ও বিভেদ নিরসন কমিশন গঠন করা হবে। খোলামনে আলোচনা করে ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে এর সমাধান করা হবে।

সকল জাতীয় বীরদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করে স্কুল, কলেজে পাড়ানো হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এ বিষয়ে গবেষণার ব্যবস্থাগ্রহণ করবে।

সেইসঙ্গে আর যেন একদলীয় শাসন ফিরে না আসে তা নিশ্চিত করা হবে।

খ) নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা: বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুম (এনফোর্সড ডিস অ্যাপিয়ারেন্স) পুরোপুরি বন্ধ করা হবে। রিমান্ডের নামে পুলিশি হেফাজতে যে কোন প্রকার শারীরিক নির্যাতন বন্ধ করা হবে। সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না।

মিথ্যা মামলায় অভিযুক্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে এবং মিথ্যা মামলায় সহায়তাকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, যাতায়াতের ক্ষেত্রে সকল নারীর ওপর বাচিক কিংবা শারীরিক যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে। যৌতুক পুরোপুরি বন্ধ করা হবে।

মামলা জট কমানোর নানা পদক্ষেপের সাথে উচ্চ আদালতের বাৎসরিক ছুটি ছয় সপ্তাহে সীমিত করা হবে।

সংখ্যালঘু এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির মানবিক মর্যাদা, অধিকার নিরাপত্তা এবং সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। তাঁদের ওপর যেকোনো রকম হামলার বিচার হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলমান থাকবে।

গ) ক্ষমতার ভারসাম্য: নির্বাচনকালীন সরকারের বিধান তৈরি করা, নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দেয়া সহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে মুক্তভাবে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। সংসদে একটি উচ্চকক্ষ সৃষ্টি করা হবে। সবার সাথে আলোচনার মাধ্যমে ৭০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনা হবে।

প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনা হবে। একটা না পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকা যাবে না। সংসদের ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দলীয় সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবে।

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সভাপতির পদ সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক বিরোধীদলের জন্য নির্দিষ্ট থাকবে।

আইন এবং রাষ্ট্রীয় নীতিপ্রণয়ন এবং পর্যালোচনাই হবে সংসদ সদস্যদের মূল কাজ।

সংসদে বিরোধীদলের মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে। রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে সকল জাতীয় কমিশন গঠনে এবং ন্যায়পাল নিয়োগে বিরোধীদলের মতকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

সকল সাংবিধানিক পদে নিয়োগের জন্য সুস্পষ্ট আইন তৈরি করা হবে। ন্যায়পাল ও সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিসহ সব নিয়োগের জন্য বিরোধীদলীয় সাংসদ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বয়ে স্বাধীন কমিশন গঠন করা হবে।

সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে।

সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হবে। তবে প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচনের জন্য সকল রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ন্যূনতম ২০ শতাংশ নারীদের মনোনয়ন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকবে।

বাংলাদেশে প্রাদেশিক সরকার প্রতিষ্ঠার যৌক্তিকতা পরীক্ষার জন্য একটি সর্বদলীয় জাতীয় কমিশন গঠন করা হবে।

ঘ) ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ: দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডের দায়িত্ব থাকবে নির্বাচিত স্থানীয় সরকারের হাতে। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা হবে।

বর্তমানে কমবেশি ৫% বাজেট স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে ব্যয় এর পরিবর্তে প্রতিবছর ৫% হারে বাড়িয়ে পাঁচ বছরে কমপক্ষে ৩০% বাজেট স্থানীয় সরকার এর মাধ্যমে ব্যয়ের বিধান করা হবে।

পৌর এলাকা গুলোতে সব সেবা সংস্থা মেয়রের অধীনে রেখে সিটি গভর্নমেন্ট চালু করা হবে।

জনকল্যাণে প্রশাসনিক কাঠামো প্রাদেশিক পর্যায়ে বিন্যস্ত করা এবং স্থানীয় সরকারের স্তর নির্ধারনের লক্ষ্যে কমিশন গঠন করা হবে।

ঙ) দুর্নীতি দমন ও সুশাসন: বর্তমান সরকারের আমলের দুর্নীতির তদন্ত করে তার সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে। ন্যায়পাল নিয়োগ করা হবে এবং সংবিধান নির্দেশিত সব দায়িত্ব পালনে ন্যায়পালকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হবে। দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা গ্রেপ্তারে সরকারের অনুমতির বিধান (সরকারি চাকুরী আইন-২০১৮) বাতিল করা হবে।

অর্থপাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বর্তমানে চলমান কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করা হবে না। কিন্তু বর্তমান সরকারের শেষ দুই বছরে তড়িঘড়ি করে নেয়া প্রকল্পগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য কমিটি গঠন করা হবে। বর্তমানে চালু থাকা উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ব্যয় নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ব্যাংকিং সেক্টরে লুটপাটে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং ব্যাংক গুলোকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সর্বময় ক্ষমতা দেয়া হবে।

সরকারি মদতে শেয়ারবাজারে লুটপাটে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সঠিক ব্যবস্থা এবং প্রণোদনার মাধ্যমে শেয়ার বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে শেয়ারবাজারকে তার সঠিক গতিপথে নিয়ে যাওয়ার সব ব্যবস্থা খুব দ্রুত করা হবে।

দেশের ক্রীড়া সংস্থাও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনীতির বাইরে পেশাগতভাবে গড়ে তোলা হবে।

ভিনদেশীয় ক্ষতিকর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে নাগরিকদের রক্ষা করায় দৃঢ় ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষা এবং প্রসারে প্রয়োজনীয় সব করা হবে।

চ) কর্মসংস্থান ও শিক্ষা: পুলিশ এবং সামরিক বাহিনী ব্যতীত সরকারি চাকরিতে প্রবেশের জন্য কোন বয়সসীমা থাকবেনা। সরকারি চাকুরিতে শুধুমাত্র অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা ছাড়া আর কোনো কোটা থাকবেনা।

ত্রিশোর্ধ্ব শিক্ষিত বেকারের জন্য বেকার ভাতা চালু করার উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা পরীক্ষা করে বাস্তবায়ন করার জন্য একটি কমিশন গঠন করা হবে।

আগামী ৩ বছরের মধ্যে সব সরকারি শূন্যপদে নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে। ব্যপক সংখ্যক নন-গ্র্যাজুয়েটের কর্মসংস্থান হবে কৃষি উৎপাদন এবং কৃষি বিপনন সমবায়ে।

দেশে কাজ করা ওয়ার্ক পারমিটবিহীন অবৈধ সকল বিদেশি নাগরিকের চাকুরি করা বন্ধ করা হবে।

শিক্ষিত বয়োবৃদ্ধদের জন্য ন্যুনতম ভাতা রেখে অবৈতনিক খন্ডকালীন কর্মসংস্থান করা হবে।

পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হবে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা আর বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে। সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।

মোবাইল ইন্টারনেটের খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। দেশের বিভিন্ন গণজমায়েতের স্থানে ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফ্রি ওয়াই ফাই এর ব্যবস্থা করা হবে।

প্রথম বছর থেকেই ডাকসু সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ছাত্রসংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করা হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ গুলোতে সরকারিভাবে শিক্ষা ব্যয় সুনির্দিষ্ট করা হবে।

মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা দিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থান করা হবে। কর্মসংস্থানকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল সংস্কারের জন্য কমিশন গঠন করা হবে।

ছ) স্বাস্থ্য: ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোকে পর্যায়ক্রমিকভাবে ৫০ শয্যা, সকল জেলায় একটি করে মেডিকেল কলেজ স্থাপন পূর্বক ৫০০ শয্যার হাসপাতাল, সকল জেলায় ২০ শয্যা বিশিষ্ট CCU, ২০ শয্যার ICU, ১০ শয্যার NICU স্থাপন করা হবে। পুরাতন ২১ জেলায় অগ্রাধিকার ভিত্তিক একটি করে ২০ শয্যার কিডনী ডায়ালাইসিস সেন্টার এবং একটি করে ক্যান্সার কেমোথেরাপি সেন্টার গড়ে তোলা হবে এবং পর্যায়ক্রমিকভাবে তা সকল জেলায় প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করা হবে।

সকল ইন্টার্ন চিকিৎসকদের একবৎসর ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সার্বক্ষণিকভাবে অবস্থান করে একবছর প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হবে।

তিনমাসের মধ্যে ঔষধ এবং ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার খরচ উল্লেখযোগ্য পরিমানে কমানো হবে।

সকল বড় জেলা শহরে জেনারেল প্রাকটিশনার প্রথা চিকিৎসা সৃষ্টি করে দ্রুত যথাযথ চিকিৎসার জন্য রেফারেল ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে।

জেলা শহরের বিশেষায়িত হাসপাতাল সমূহে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসার জন্য স্থানীয়ভাবে সরাসরি মনোনীত ২০০ জন আগ্রহী বিভিন্ন উদীয়মান বিশেষজ্ঞদের রাজধানীর বিভিন্ন সরকারী বিশেষায়িত হাসপাতালে দুই বৎসর সার্বক্ষণিক প্রশিক্ষণ দিয়ে দায়িত্ব নেবার জন্য প্রস্তুত করা হবে।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় শৃংখলা নিশ্চিত করনের জন্য একজন "ন্যায়পাল” থাকবেন। তার অধীনে বিজ্ঞানী,পরিসংখ্যানবিদ, ফার্মাকোলজিষ্ট, ফার্মাসিষ্ট, মাইক্রোবায়োলজিষ্ট ও ইপিডিমিওলজিস্ট থাকবেন যারা নিয়মিত ওষুধের অপপ্রয়োগ রোধে ব্যবস্থাপত্র নিরীক্ষা এবং সকল হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগীর মৃত্যুর খতিয়ান নিয়মিত পরীক্ষা করে জনসাধারনকে ফলাফল অবহিত করবেন।

সকল নাগরিককে স্বাস্থ্য কার্ড প্রদান করা হবে।

জ) জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন: গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার টাকা করা হবে। গার্মেন্টস সহ অন্যান্য সকল শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

সকল খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হবে। কৃষি উৎপাদনকে লাভজনক পেশায় পরিণত করার লক্ষ্যে উৎপাদন খরচের সাথে যৌক্তিক মুনাফা নিশ্চিত করে সকল কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারিত হবে স্থানীয় সমবায় সমিতির মাধ্যমে।

শ্রমিক ও ক্ষেতমজুরসহ গ্রাম ও শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সুলভ মূল্যে রেশনিং চালু করা হবে। কৃষি ভর্তুকি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়িয়ে সার বীজ এবং অন্যান্য কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করা হবে

জলমহাল এবং হাওরের ইজারা সম্পূর্ণ বাতিল করে মৎস্যজীবী ও দরিদ্র জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

বয়স্কভাতা, দুঃস্থ মহিলা ভাতা বিধবা ও স্বামী পরিত্যাক্তাদের ভাতার পরিমাণ এবং আওতা বাড়ানো হবে।

পুনর্বাসন ছাড়া শহরের বস্তিবাসী ও হকারদের উচ্ছেদ করা হবে না।

স্বাস্থ্যবীমার মাধ্যমে শ্রমিকগণ মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রিমিয়ামের মাধ্যমে সকল চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।

সরকারি পর্যায়ে কর্মজীবী নারীদের সুবিধার জন্য পর্যাপ্ত ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হবে। বেসরকারি ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন করার ক্ষেত্রে খুব সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হবে।

মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।

একবছরের মধ্যে মানুষকে ভেজাল ও রাসায়নিক মুক্ত নিরাপদ খাদ্য পাবার নিশ্চয়তা দেয়া হবে।

ঝ) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি: প্রথম বছরে বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে না। সর্বোচ্চ ১০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের বিদ্যুতের মূল্য আগামী পাঁচ বছরে বাড়বে না।

গ্রামীণ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প এবং দেশের সকল সরকারি বেসরকারি হাসপাতালকে বানিজ্যিক দামের পরিবর্তে হ্রাসকৃত বাসস্থানের দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।

ঞ) প্রবাসী কল্যাণ: প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে। ইউরোপ, জাপানসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শ্রমশক্তির রপ্তানির জন্য নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করা হবে।

মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসী কর্মীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে মরদেহ সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনায় দেশে আনা হবে এবং বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।

ট) নিরাপদ সড়ক ও পরিবহন: নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপরে নৃশংস হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে।

বড় শহর গুলোতে ট্রাফিক জ্যাম নিরসনকল্পে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শহরে গণপরিবহনকে প্রাধান্য দিয়ে পরিবহন নীতি প্রণয়ন করা হবে এবং মানুষের জন্য আরামদায়ক গণপরিবহনের ব্যবস্থা করা হবে।

রেলখাতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে সম্প্রসারণ করা হবে।

ঠ) প্রতিরক্ষা ও পুলিশ: প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় যুদ্ধাস্ত্র এবং অন্যান্য সবসরঞ্জাম অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কেনা হবে। সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের জন্যকল্যাণমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হবে

পুলিশবাহিনীর ঝুঁকি ভাতা বৃদ্ধি করা হবে এবং পেশাদারিত্ব বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নেয়া হবে। জাতিসংঘ বাহিনীতে পুলিশের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুলিশের জন্য কল্যাণমূলক প্রকল্প গৃহীত হবে।

ড) পররাষ্ট্র নীতি: 'সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়' নীতিতে পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হবে। সার্কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক জোটসমূহ আরো শক্তিশালী করার জন্য ভূমিকা রাখা হবে।

সমতার ভিত্তিতে ভারতের সাথে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করায় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

চীনের‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ এর যেসকল প্রকল্পে দেশের জন্য লাভজনক বিবেচিত হবে সেগুলোতে বাংলাদেশ যুক্ত হবে।

তিস্তা সহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, রোহিঙ্গা সমস্যা সহ অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করা হবে।

ঢ) জলবায়ু পরির্ব্তন: দিন দিন বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধিই পাচ্ছে। প্রভাবশালী দেশগুলো নিজেদের স্বার্থে কার্বোন ডাই অক্সাইড নির্গমন করছে। তবে বাংলাদেশ পৃথিবীকে বসবাস যোগ্য করতে সাধ্যমত আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রচারণা চালাবে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

এবং নিজ দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি ঠেকাতে আরো বেশি আন্তর্জাতিক সাহায্য নিশ্চিত ও সেটার ব্যবহার করা হবে।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.