যশোর সদরের বাহাদুর, চাউলিয়া, কচুয়া এবং শহরের বেজপাড়া বুনোপাড়ায় নারকেলের ছোবড়া, বাঁশপাতা, বাঁশ, বেত, পাট, বিছালী এবং সুতা দিয়ে বোনা পাখির বাসায় দুই শতাধিক নর-নারী নিজের পরিবারকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করছেন। খাঁচায় পোষা পাখির জন্যেই বোনা এই পাখির বাসা দেশ ছাড়িয়ে সুদুর ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও যাচ্ছে। আর বিনিময়ে দেশে আসছে বৈদেশিক মুদ্রা।

pakhir basa

পাখির বাসা তৈরি এবং দেশের বাইরে রফতানিতে সফল খাইরুল আলম ঢাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সদরের রামনগর নামেজ সরদার স্কুলের পাশেই তাঁর অফিস এবং গোডাউন রয়েছে। যা গৌরাঙ্গ দাস দেখাশোনা করেন। তিনি জানান, যশোর থেকে প্রতিমাসে অন্তত এক ট্রাক পাখির বাসা সরবরাহ করা হয়। থাইল্যান্ড, ইউরোপের বেলজিয়াম, জার্মান, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডে যাচ্ছে যশোরে তৈরি বাংলাদেশের পাখির বাসা। যশোরের দুই শতাধিক নর-নারী এই কাজে সরাসরি জড়িত।

পাখির বাসা বোনার কাজে জড়িতদের সঙ্গে কথা বলে নানা তথ্য জানা গেলো। ঋষি সম্প্রদায়ের পুরুষেরা বাঁশ আর বেত দিয়ে পাখির ছোট্ট বাসা বুনে। আর নারীরা তৈরি করে বাঁশপাতা, নারকেলের ছোবড়া, পাট, সূতা দিয়ে। তিন সাইজের বাসা তৈরি করা হয়। বড়, মাঝারি এবং ছোট সাইজের এইসব পাখির বাসা তৈরিতে ব্যবহার করা হয় ব্যবসায়ীর সরবরাহকৃত পাট ও সূতা। নারকেলের ছোবড়া দিয়ে নির্দিষ্ট ডায়াসের ওপর পাখির বাসার আকৃতিতে বানানো দড়ি জড়িয়ে সুই সুতার বুননির মাধ্যমে বাসা তৈরি করা হয়। নারীরা সাংসারিক কাজের ফাঁকেই দিনে ৭০-১৪০টি বাসা তৈরি করতে পারেন। মজুরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।

যশোর শহরের বেজপাড়া বুনোপাড়া এলাকার অনামিকা, মিনা খাঁ, ঝর্না সাহা, প্রভাতীসহ অনেকে প্রায় ২০/৩০ বছর আগে থেকে এ কাজে জড়িত। তারা জানান, এ কাজের জন্য তাদের বাড়তি সময় দিতে হয় না বরং বাড়তি উর্পাজনের এটি একটি মাধ্যম। এ ব্যাপারে ইন্দ্রা সাহা বলেন, পাখির বাসা তৈরির কাজ করছি প্রায় ২০ বছর। আমার পরিবারের জন্যে এটি বাড়তি আয়।

ব্যবসায়ী খায়রুল আলম জানান, যশোরের বেসরকারি সংস্থা ‘বাঁচতে শেখা’র নির্বাহী পরিচালক আঞ্জেলা গোমেজের মাধ্যমে ৩০ বছর আগে যশোরে গিয়ে পাখির বাসা তৈরির কাজ শুরু করেছিলাম যা এখনও চলছে। বিদেশে পোষা পাখির চাষ হয়। আমাদের রফতানিকৃত পাখির বাসায় ওই চাষ করা পোষা পাখি ডিম পাড়ে, বাচ্চা ফোটায়। এ কারণে বিদেশে এসব পাখির বাসার অনেক চাহিদা। ইউরোপের পাখির বাসার বাজার আগে চীনের দখলে ছিল। কিন্তু সেখানে শ্রমের দাম বাড়ায় এবং বাসা তৈরির উপকরণও সহজলভ্য নয় বলে বাজারটি আমরা পেলেও পুঁজির অভাবে ঠিকমতো প্রসার ঘটাতে পারছি না। সরকার সহজ শর্তে এ খাতে ঋণ দিলে ইউরোপ-আমেরিকার বাজার আমাদের দখলে আসবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

এবার দেখা যাবে গর্ভের সন্তানের বেড়ে ওঠা!

লেকের পানি উড়ছে আকাশে!

চোর নিয়ে গেল ‘দেবতা’র চুল!

রেকর্ড: পোশাকের দাম ৩৮ কোটি টাকা

রাজমিস্ত্রির অ্যাকাউন্টে একদিনে ৬২ লাখ টাকা!

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.