মঙ্গল গ্রহের মাটিতে জন্মাল কেঁচো, ফলবে ফসলও!

মাটিকে উর্বর ও তরতাজা করতে কেঁচোর ভূমিকা প্রায় সবারই জানা। কেঁচোকে তাই কৃষিবিজ্ঞানীরা কৃষকের বন্ধু হিসেবেই উল্লেখ করেন। কারণ মাটিকে ফলনশীল হতে সাহায্য করে এ প্রাণী।

বিজ্ঞানীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবার পৃথিবীতে নিয়ে আসা মঙ্গলগ্রহের লাল মাটিতে সেই কেঁচো জন্মেছে। তাই এখন বিজ্ঞানীরা স্বপ্ন দেখছেন মঙ্গলের ওই লাল মাটিতে ফসল ফলানোর। খবর ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ও আনন্দবাজার পত্রিকার।

নেদারল্যান্ডসের ভাগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা মঙ্গলগ্রহের কৃত্রিম মাটিতে এ সফলতা পান। ওই গবেষকরা বলেছেন, ‘মঙ্গলে গিয়ে মানুষের পক্ষে দীর্ঘদিন টিকে থাকা ও বংশবৃদ্ধি করা সম্ভব হবে কি না, সে ভাবনাতেই নতুন এই গবেষণা। তবে এ ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে হলে আরও গবেষণার প্রয়োজন।’

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক তাদের প্রতিবেদনে জানায়, আগামী দিনে মঙ্গলগ্রহে মানবসভ্যতার ‘দ্বিতীয় উপনিবেশ’ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা আরও মজবুত হলো। কিন্তু পৃথিবীর বুকে কৃত্রিমভাবে বানানো মঙ্গলের মাটিতে কেঁচো জন্মানোর ঘটনাকে কেন খুব গুরুত্ব দিচ্ছে বিজ্ঞানীরা?

নেদারল্যান্ডসের ভাগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপক ভিগার ওয়েমলিঙ্ক বলেন, ‘কোনও প্রাণহীন জৈব বস্তুকে ভেঙে দিতে পারে কেঁচো। ভেঙ্গে দেয়ার পর জৈব বস্তুতে জন্মানো অন্য জৈব বস্তুকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারে, আবার তাতে প্রাণও দিতে পারে। এর ফলে কেঁচো একটা চক্র তৈরি করে জৈব বস্তুর মধ্যে। যাকে বলে রিসাইকেল।’

ওয়েমলিঙ্ক জানিয়েছেন, মৃত উদ্ভিদের শরীরের অংশবিশেষ খেয়ে, চিবিয়ে সেগুলিকে মাটিতেই উগড়ে দেয় কেঁচো। আর তাতেই তরতাজা, উর্বর হয়ে ওঠে মাটি। আবার মাটিতে গর্ত করেও তার উর্বরতা বাড়িয়ে দেয় কেঁচো। মাটি থেকে আরও বেশি করে পানি ও তরল জৈব শুষে নিয়ে বেড়ে ওঠে গাছ।

তাই পানির অভাবে আগামী দিনে মঙ্গলে ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে যে অসুবিধার কথা ভাবা হচ্ছিল এত দিন, কেঁচো তা দূর করতে পারে বলে জোরালো বিশ্বাস বিজ্ঞানী ও গবেষকদের।

ওয়েমলিঙ্ক জানিয়েছেন, কৃত্রিমভাবে বানানো মঙ্গলের মাটিতে রুকোলা উদ্ভিদ জন্মানোর সফলতা পাই আমরা। কিন্তু পরীক্ষার শেষ পর্বে সবাইকে অবাক করে দিয়ে মঙ্গলের মাটিতে দু’টি কেঁচোও জন্মেছে!