নিরাপত্তায় দেবতা, নেই দরজা!

ছোট বড় প্রায় ২০০ বাড়ি। তবে মজার বিষয় হচ্ছে কোন ঘরেই নিরাপত্তার জন্য দরজা ব্যবস্থা নেই। এতেই নয় ব্যাংক কিংবা পুলিশ স্টেশনেও নেই দরজা! বাসিন্দাদের বিশ্বাস দেবতা শনি সবকিছুরই নিরাপত্তা দেন, মানুষের তৈরি নিরাপত্তায় বিশ্বাসী নয় তারা। এমনই অবস্থা ভারতের মহারাষ্ট্রের ছোট্ট শহর শনি শিঙনাপুরে।

অন্য দশটি শহরের মতো সাধারণ মনে হলেও শনি শিঙনাপুরের অধিবাসীরা কিছুটা ভিন্ন প্রকৃতির। শহরের বাসিন্দারাদের আস্থা কেবল দেবতা শনির ওপরই। তারা মনে করে, বাড়িতে চোর আসলেও, চুরি করতে পারে না। নিজ থেকেই ফিরে যায়। মূল্যবান সামগ্রী রাখার জন্য কোনো তালাবদ্ধ ব্যবস্থা নেই, সাধারণ ঝুড়ি বা বালিশের নিচেই রাখেন অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার। কিছুদিন আগেও ছিল না পুলিশ স্টেশন। ভারত সরকার স্থানীয়দের নিরপত্তার কথা বিবেচনা করে গত ২০১৫ সালে একটি থানা করে।

শিঙনাপুরের বাসিন্দাদের অন্যতম গুণ হচ্ছে অতিথিয়তা। প্রতিদিন শহরটিতে প্রায় ৪০ হাজার পর্যটক ও পূণ্যার্থী ভ্রমণ করেন। স্থানীয়দের বিশ্বাস দেবতা শনি জন্মস্থান এই শহরেই। এজন্য শহরের মাঝে দেবতা শনিকে স্বরণ করতে রাখা হয়েছে একটি কালো পাথরও। এতে ভক্তরা সরিষার তেল ঢেলে পূজো করে। ১ দশমিক ৫ মিটারের পাথর খন্ড রাখা হয়েছে উন্মক্ত স্থানেই। 

স্থানীয় এক বাসিন্দা বিবিসিকে জানায় ‘আমাদের কোনো ক্যামেরার প্রয়োজন নেই। ঈশ্বর আমাদের সবসময় দেখেন। যেকোনো কারণে নিরাপত্তা ক্যামেরা বন্ধ থাকতে পারে। কিন্তু ঈশ্বর সবসময়ই সজাগ থাকেন, কিছুই তাঁর দৃষ্টি এড়িয়ে যায় না।’

এক পর্যটক বলেন, ‘স্থানীয় অধিবাসীরা বিশ্বাসকে গুরুত্ব দেয়। তাই দুনিয়ার সম্পদের বিষয়ে উদাসীন থাকা বিশ্বে এটি বিরল ঘটনা।’