ভয়ের কবল থেকে মুক্তির উপায়

রাগ, দুঃখ, আনন্দ, বেদনার মত ভয়ও আমাদের একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। এড্রিনালিন হরমোনের প্রভাবে আমাদের ভয়ের তীব্রতা বাড়ে কমে। ইন্দ্রিয় ঘটিত কারণে তথ্যগুলো মস্তিষ্কে জমা হওয়ার পর তা মস্তিষ্কের ভেতর থেকে শরীরে পাঠায়। সংকেত ও রসায়নের এই খেলায় আমরা নানান ধরণের অনুভূতির দেখা পাই। তার মধ্যে ভয় অন্যতম হলেও মাত্রাতিরিক্ত ভয় জীবন অতিষ্ট করে তোলে। আবার ভয়ের সময়টাতেও ভয় না পাওয়াও ভয়ের কারণও বটে।

ভয় পেলে মানব মস্তিষ্ক দুই ভাবে কাজ করে। একটি ঊর্ধ্বমুখী অন্যটি নিম্নমুখী। জীবনের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ কোন ঘটনায় মস্তিষ্ক কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। সময় নিয়ে চিন্তা করতে বা যুক্তি বুদ্ধি ঠিক মত কাজে লাগাতে পারেনা বলে সিগনাল নিম্নমুখী কাজ করে। আবার জীবনের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ না হলে বা কম হলে মস্তিষ্ক যুক্তি ও বুদ্ধি দিয়ে ভাবতে পারে। আর তখন তা ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহে থাকে।

তবে গবেষণা বলছে, পূর্বে কোন ভয়ের স্মৃতি থাকলে তা পরে ঐরূপ কোন ঘটনায় আতংকিত হয়ে পড়ে। এই সামগ্রিক বিষয়টি এড্রেনালিন হরমোন দায়ী বলে এটি নিঃসরণ বাড়লে রক্তচাপ বাড়ে, চোখের পিউপিল বড় হয়, অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ে। ইমার্জেন্সি অবস্থায় তা এক দিকে ভাল হলেও অন্য দিকে খারাপ হতে পারে। অতিরিক্ত ভয়ে সাধারণ কাজে ব্যাঘাত ঘটে। ভয়ের কারণ নেই এমন কাজেও ভয় লাগতে থাকবে যা পোস্ট ট্রমাটিক ট্রেস ডিসঅর্ডার নামে পরিচিত।

জনসম্মুখে বা অনেকের সামনে কথা বলতে ভয় পেলে নিজেকে নিজেই বলতে হবে এটি আপনি পারবেন। আয়নার সামনে বার বার বলতে হবে। বিশ্বাস নিয়ে বলতে হবে আপনিও পারবেন। এছাড়াও ভয়ের ব্যাপার নিয়ে অনেক বই ও আর্টিকেল পাওয়া যায় এগুলো পড়লে বুঝতে পারবেন এই সমস্যাটি আরো অনেকেরই থাকতে পারে। ভয় কাটাতে নিজেকে পুরস্কৃত করতে পারেন, এতে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আর সমস্যাটি প্রকট হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।