শিশুকে আলাদা ঘরে ঘুমাতে দেয়ার আগে আরেকবার ভাবুন

আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আপনার ছোট সোনামনির ঘরটা তো আলাদা করে দিলেন। কিন্তু একবারও ভেবে দেখেছেন এতে তার উপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কিনা? সে একা থাকতে ভয় পাচ্ছে কিনা বা তার কোন কিছুর দরকার হচ্ছে কিনা? ভাবুন, ভেবে দেখুন।

গবেষণা বলছে, শিশুর আলাদা ঘরে ঘুমানো তাদের শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক থেকেই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন, শিশু সন্তানের বাবা মায়ের সাথে ঘুমানো উচিত। এতে তাদের মানসিক বিকাশ সুস্থ হয়।

আপনার শিশুর রাতে যেকোনো প্রয়োজনে আপনাকে কাছে পেতে চাইবে। কিন্তু আলাদা ঘরে থাকলে সেটা সব সময় সম্ভব নাও হতে পারে। আবার আপনিও বার বার উঠে গিয়ে হয়তো তাকে দেখে আসতে পারছেন না। আর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে আপনাকে না পেয়ে যেকোনো দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত শিশুর বাবা-মায়ের সাথেই ঘুমানো উচিত। এতে নিজের জিনিস অন্যের সাথে ভাগ করে নিতে শেখে। আবার একই সাথে অন্যের প্রতি সহনশীল আচরণ করাও শেখে। পরিবার, বাবা-মা, ভাইবোনের সাথেও সম্পর্ক সহজ হয়।

অনেক সময় আমরা শিশুকে ঘুম পাড়ানোর জন্য যে গান বা ছড়া ও গল্প বলে থাকি তা শিশুর কল্পনা শক্তি বাড়ায়। স্মৃতি শক্তির বিকাশ, আবেগ, মানবিকতা ও সৃজনশীলতাও বাড়ায়। তাই শিশুর জন্য এই অভ্যাস করা খুবই ভালো।

অনেকে বলেন, শিশু বাবা-মায়ের সাথে থাকলে তাদের ব্যক্তিগত জায়গা কমে যায়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, এমন হলে নিজেদের জন্য আলাদা সময় বের করুন। প্রয়োজনে নিজেদের জন্য আলাদা কামরা ব্যবহার করতে পারেন। ঘুমানোর সময় সন্তানের কাছে ফিরে যান।

খুব ছোটবেলায় শিশুর ঘর বা বিছানা আলাদা করে দিলে সে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। গবেষণা বলছে, যেসব শিশুরা বাবা-মায়ের সাথে ঘুমায় তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। আবার শুধু যে এই কারণগুলো শিশুদেরই ভালো রাখে তা নয়। রাতে ঘুম ভেঙে শিশুর ঘরে যাওয়ার প্রবণতা থাকে না বলে বাবা মায়েরও ঘুম ভালো হয়। সুস্থ থাকেন অভিভাবকরাও। তাই আপনার শিশু সন্তানটির আলাদা জগত, ব্যক্তিগত বোধ না হওয়া পর্যন্ত তাকে নিজেদের সাথেই রাখুন।