নিজের চেহারায় একটু ‘স্মার্ট লুক’ কে না চায়। তবে সঠিক সময়ে সঠিক উপদেশের অভাবে আমরা আমাদের চেহারায় সঠিক পরিবর্তন আনতে পারি না।  মাথার চুল আমাদের স্মার্ট লুক বা ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তোলার জন্য একটা প্রধান অনুষঙ্গ।

about hair color

আমাদের সবার গায়ের রঙ এক না, কেউ কেউ শ্যামলা, কালো বা ফর্সা। এখন আমাদের চুলের রঙ যদি কালো থাকে আর সেই চুলটাকে যদি আমরা অন্য রঙ এ পরিবর্তন করি বা হাইলাইটাই করি তাহলে আমাদের চেহারায় অবশ্যই পরিবর্তন আসবে।

তবে কোন গায়ের রঙের সাথে চুলের কোন রঙ যাবে সেটাই আমাদের আগে জেনে নিতে হবে। অনেকে আছেন গায়ের রঙের সাথে না মিলিয়ে চুলে রঙ করেন বা গায়ের সাথে সঠিক রঙ নির্বাচন না করেই চুলের রঙ করান। যার ফলে দুঃখজনকভাবে তাদের চেহারায় স্মার্ট লুকিংটা আসে না।

সুতরাং, চেহারার সৌন্দর্য্য বাড়াতে চুলের জন্য সঠিক কালার নির্বাচন করুন। যেমন: শ্যামলা কালো ত্বকের জন্য Ash Golden light Blonde কালার overall করতে পারেন, ফর্সা ত্বকের জন্যে Wonder Black বা Violet কালার overall করতে পারেন সাথে Ultra Light Blonde হাইলাইটাই করতে পারেন। গায়ের রঙ এর সাথে মিলিয়ে চুলে রঙ করে দেখুন আপনার লুকই বদলে যাবে।

অনেকে মনে করেন যে, হেয়ার কালার চুলের জন্যে ক্ষতিকর। কিন্তু সত্যি হচ্ছে যে, চুলে সঠিক নিয়মে কালার করলে চুলের কোন ক্ষতি হয় না। উল্টো চুলের কালার চুলকে Repair করতে বা চুলকে Healthy করতে পারে।

বাজারের কেনা চুলের রঙে যদি আপনার খুব বেশি অনীহা থেকে থাকে তাহলে আপনি প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া কিছু পদ্ধতিতেও আপনার চুলে রঙ করে চেহারায় আনতে পারেন ‘স্মার্ট লুক’। সবার বাসাতেই দারুচিনি গুঁড়ো, ভিনেগার, টি ব্যাগ, বেকিং সোডা, লবণ, মধু, লেবু, এলাচ গুঁড়ো, অলিভ অয়েল থাকে তাই না? এবার আপনার সুবিধা মতো উপাদান বেঁছে নিয়েই চুলের রঙ পরিবর্তন করে নিতে পারেন। কিভাবে? চলুন জেনে নেই-

প্রথমে আসি সবচেয়ে সহজ পদ্ধতিতে। পোনে এক কাপ কুসুম গরম পানিতে তিন চা চামচ লবণ নিন। এবার চামচের সাহায্যে নেড়ে পানিতে লবণটা ভালোভাবে গলিয়ে নিয়ে চুলের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত লবণপানিটা লাগিয়ে ঘণ্টা দুয়েক অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু ছাড়া শুধু পানিতে গোছল করে নিন। চুল শুকানোর পর দেখুন চমক।

আর একটি সহজ উপায় হল ‘ভিনেগার পানি’। একটি বোতলে এক কাপ পানি ও এক কাপ ভিনেগার নিন। এবার বোতলটি ঝাঁকিয়ে পানির সাথে ভিনেগার মিশিয়ে চুলে লাগান তেলের মতো। আপনি চাইলে স্প্রে বোতলে এই ভিনেগার পানি নিয়ে চুলে স্প্রেও করে নিতে পারেন। চুলে লাগানোর পর ভালোভাবে চুল আঁচড়ে নিয়ে ঘণ্টাখানিক অপেক্ষা করে পরিষ্কার পানিতে চুল ধুয়ে নিন।

হাতের কাছে বেকিং সোডা ও লেবু থাকলে একটি পাত্রে এক কাপ বেকিং সোডা ও একটি লেবুর রস নিন। এবার চামচের সাহায্যে ভালোভাবে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এরপর চুল আঁচড়িয়ে নিয়ে এই মিশ্রণটি আপনার তালুসহ সম্পূর্ণ চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। আধা ঘণ্টা পর পরিষ্কার পানিতে চুল ধুয়ে ফেলুন।
এরপর চুল আঁচড়িয়ে নিয়ে একটি বাটিতে আপনার ব্যবহৃত কন্ডিশনার ও পরিমাণ মত দারুচিনি গুঁড়ো নিয়ে নিন। চামচ বা হাতের সাহায্যে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে নিন ভালোভাবে। এখন আবার চুল আঁচড়িয়ে নিয়ে চুল পেঁচিয়ে বেঁধে নিয়ে মাথায় শাওয়ার ক্যাপ লাগিয়ে নিন সারারাতের জন্য। সকালে পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানিতে চুল ধুয়ে নিন।

আরেকটি পদ্ধতি হল- দুই কাপ ভিনেগারে এক কাপ মধু, এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ও এলাচ বা দারুচিনি গুঁড়ো নিয়ে ভালোভাবে সব মিশিয়ে নিন। এবার চুল ভালোভাবে আঁচড়িয়ে নিয়ে চুলে মিশ্রণটি ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। আপনি যদি কিছু কিছু চুল হাইলাইট করতে চান তাহলে শুধু সেই চুলে মিশ্রণটি লাগাবেন। চুলে মিশ্রণ লাগানো হয়ে গেলে চুল বেঁধে বা খোপা করে শাওয়ার ক্যাপ মাথায় লাগিয়ে রাতে ঘুমিয়ে যান। সকালে পরিষ্কার পানিতে গোছল সেরে নিন।

চা পাতিতেও চুল রাঙাতে পারেন। তবে চুলে কাংখিত রঙ পেতে এই পদ্ধতিটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার করতে হবে। সাধারণ চা বানানোর মতো টি পটে বা একটি পাত্রে পরিমাণ মতো পানি গরম করে এতে দিন চা পাতি বা টি ব্যাগ। চায়ের রঙ পানিতে চলে আসলে ছাঁকনিতে চায়ের পানিটা ছ্যাঁকে নিয়ে এই পানিতে চুল ভালোভাবে ভিজিয়ে মিনিট বিশেক অপেক্ষা করুন। এরপর পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানিতে চুল ধুয়ে নিন।

টিপস:

মনে রাখবেন, চুলে বাজারের রঙ ব্যবহারের আগে ও পড়ে কয়েকদিন শ্যাম্পু করা যাবে না। এতে চুলে রঙটা ভালভাবে লাগবে ও ত্বকে ক্যামিক্যাল বসবে না। আর ঘরোয়া উপায়ে চুলে রঙ করতে আগের দিন শ্যাম্পু করতে হবে। আর চুলে লাগানো মিশ্রণ শ্যাম্পু ছাড়া পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানিতে চুল ধুয়ে নিতে হবে। আর পরের দিন চুল শ্যাম্পু করতে হবে।

আর চুলে রঙ করার পর যদি মনে হয় রঙটা একটু বেশি হয়ে গেছে তাহলে অ্যান্টি ড্যানড্রফ শ্যাম্পুতে চুল ধুয়ে নিলেই চুলের রঙ হালকা হয়ে আসবে।

চুলে রঙ করার পর চুলের বাড়তি কিছু যত্ন নেয়া জরুরি। কারণ চুলে বাজারের রঙ ব্যাবহারের ফলে অনেকসময় চুল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। এমনটা হলে মাসে দুয়েকবার তিলের তেল ব্যবহার করুন। আর যদি সম্ভব হয় প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন।

লিখেছেন মোহাম্মদ হোসেন, অ্যাডোনিস মেকওভার সেলুন

প্রয়োজনে আপনি যোগাযোগ করতে পারেন এই ঠিকানায়: বাসা ০৩, রোড ২৭ ধানমন্ডি, ঢাকা ১২০৯, মোবাইল: ০১৭ ১১ ৩১ ২৭ ২৮।

ফেসবুক পাতাঅ্যাডোনিস মেকওভার সেলুন

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.