রোজার মাস এলেই ইফতারে খেজুরের উপস্থিতি যেনো বাধ্যতামূলক। সারা বছরের তুলনায় সে সময় খেজুরের বিক্রিও হাজার গুণে বেড়ে যায়। ফলে অনেকেই খেজুরকে শুধু রমজান মাসের ফল হিসেবে ভুল জ্ঞান করেন। আর তাই রোজার মাসে খেজুর কেনা হলেও সারা বছর এই ফলটি থাকে আমাদের মনোযোগের আড়ালে। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞান বলে ভিন্ন কথা। ডাক্তারি শাস্ত্রমতে, খেজুর শুধু এক মাসের নয়, এটি সারা বছরের জন্যই উপকারী ফল।

Date

খেজুরে রয়েছে নানা রকম পুষ্টিগুণ। শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি হৃদরোগ, কোলেস্টেরল ও হাইপারটেনশন থেকে মুক্তি দিতে খেজুরের জুড়ি নেই। আর ঋতু পরিবর্তনের ফলে অনেকের এলার্জি বেড়ে যায়। সালফার সিজনাল এলার্জি প্রতিরোধ করে। আর প্রাকৃতিক খাবারের মধ্যে খুব কম খাবারের মধ্যেই সালফার রয়েছে। খেজুরে সেই সালফার আছে।

অনেকেই মনে করেন মিষ্টি খাবার মানেই তা শরীরের জন্য ভালো নয়। এই ধারণা কিন্তু ঠিক নয়। কারণ খেজুর মিষ্টি জাতীয় ফল হলেও কিন্তু এর মধ্যে কোনও ক্ষতিকর উপাদান নেই। এছাড়াও নানা রোগের মহৌষধ হিসেবে খেজুরের তুলনা হয় না। পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ফলটির উপকারিতা সম্পর্কে নানা গুরুত্বপূর্ণ ৮টি তথ্য জেনে নিন-

১. শরীরে আয়রন বৃদ্ধি করে: খেজুরে থাকে প্রচুর পরিমাণ আয়রন যা এনিমিয়ার মত মরণঘাতী রোগ থেকে রক্ষা করে। রক্তে লৌহিত কণিকার প্রধান উপাদানের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। তাই শিশু ও গর্ভবতী নারীরা এনিমিয়া সমস্যায় ভুগেন। এজন্য একজন মানুষের প্রতিদিন অন্তত ১০০ গ্রাম করে খেজুর খাওয়া উচিত। কারণ, এতে থাকে ০.৯ মিলিগ্রাম আয়রন। আর আয়রন শরীরে লাল রক্তের কনিকা ও হিমোগ্লোবিনের জন্য সহায়ক। নবজাতকের প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য মায়ের বুকের দুধ বাড়াতেও খেজুর কার্যকর ভূমিকা রাখে।

২. ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে: খেজুরে থাকে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম, যা ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে। যা পেটের ভেতরে ব্যাকটেরিয়াগুলোকে বিনাশ করে। অন্ত্রগুলোকে ব্যকটেরিয়া মুক্ত করে ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে।

৩. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর: খেজুর কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দিতে পারে। এজন্য রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, সকালে উঠে ওই পানি খান। দেখবেন আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে, কোষ্ঠকাঠিন্য পালিয়েছে।

৪. শরীরের ওজন কমায়: যারা অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাচ্ছেন তাদের উচিত খালি পেটে খেজুর খাওয়া। এতে আপনার শরীর কোলেস্টেরল কমবে আর ওজনও নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ সুগার। তাই যাদের সুগার কেন্দ্রিক সমস্যা আছে তারা অবশ্যই সতর্ক থাকবেন।

৫. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ: খেজুর ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা এলডিএল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে। আর ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে। রক্ত কণিকাগুলোকে পরিষ্কার ও কোথাও রক্ত প্রবাহ বাধার সৃষ্টি হলে তা দূর করে।

৬. হার্টকে শক্তিশালী করে: ফাইবার হার্টকে ভালো রাখে। আর একথা তো সকলেরই জানা যে খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা অনেক ক্ষেত্রেই কমে যায়। আর রাতে ভেজানো খেজুর সকালে উঠে খেলে হার্টের জন্য ভালো। খেজুরের বিচি গুড়া করেও খেতে পারেন। এতে হার্ট ভালো থাকবে। খেজুরে থাকা ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও শরীরের পেশি ও হাড়ের গঠন মজবুত এবং শক্তিশালী করে।

৭. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: খেজুর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। খেজুরে থাকা ম্যাগনেশিয়াম আর পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। আর এই দুটি খনিজ খেজুরে প্রচুর পরিমাণে থাকায় এই ফলটি খেলে রক্তচাপ পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে, তারা প্রতিদিন ৫-৬টি খেজুর খেতে পারেন। এতে আপনার উপকার হবে।

৮. স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়: খেজুরে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম ও এর মধ্যে থাকা পর্যাপ্ত মিনারেল শরীরের নার্ভাসনেস দূর করতে সহায়তা করে। এ কারণে যারা খেজুর খান তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.