আধুনিক বিশ্বের মানুষ প্রায়ই আক্রান্ত হচ্ছে নতুন রোগে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরাও এখনো কোনো কূল কিনারা করতে পারেননি। এরইমধ্যে পাওয়া গেছে নতুন এক ভয়ঙ্কর ভাইরাসের সন্ধান। ‘ব্রেন-ইটিং অ্যামিবা’ বা ‘মস্তিষ্কো খেকো অ্যামিবা’ নামক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ১৮ দিনেই হতে পারে মৃত্যু।

brain eating amoeba

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে ২৯ বছর বয়সী এক যুবক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর আলোচনায় এই ভাইরাসটি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওয়াকো ট্রিব্রিউন হেরাল্ড জানায়, ফাবরিজিও স্ট্যাবল নামের ওই যুবক কিছুদিন আগে টেক্সাসের ওয়াকো’র বিএসআর কেবল পার্কে বেড়াতে যান। সে সময় তিনি একটি প্রবাল সুইমিংপুলে গোসল করে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ি ফেরেন। এর ক’দির পর মাথাব্যথা অনুভব করেন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে সেই ব্যথা প্রচণ্ড আকার ধারণ করে। কোনো ওষুধেই কাজ হচ্ছিল না। এক পর্যায়ে ২১ সেপ্টেম্বর তিনি আটলান্টিক সিটির ভেনটনোর নামক এলাকায় মারা যান। এরপরই টনক নড়ে যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের।

কারণ অনুসন্ধানে করতে সুইমিংপুলটির পানি ও আক্রান্ত স্ট্যাবলের শরীরে পাওয়া জীবানু পরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা। এতে এক বিশেষ ধরনের ভাইরাসের উপস্থিতির খোঁজ পান গবেষকরা। যার নাম দেয়া হয় ‘ব্রেন-ইটিং অ্যামিবা’ বা মস্তিষ্ক-খোকো অ্যামিবা। এরপর থেকেই পার্কটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

brain eating amoeba 1

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ভাইরাসটিতে আক্রান্তের মৃত্যুর হার ৯৫ শতাংশ। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ জন। যার মধ্যে ৩০ জনই মারা গেছেন। কিন্তু চিকিৎসকরা আগে নির্ণয় করতে পারেননি কোন রোগে বা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ওই ব্যক্তিরা।

যেভাবে শরীরে প্রবেশ করে ‘অ্যামোইবা’যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াকো-এমসিলেন্যান কাউন্ট্রির পাবলিক হেল্থের ডিস্ট্রিক মুখপাত্র কেলি ক্রাইনি বলেন, এই ভাইরাস মিঠা পানির লেক, সমুদ্র ও নদীতে থাকে। কোনো মানুষ সেখানে নামলে তার নাক, মুখ ও কান দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে।

কীভাবে বুঝবেন শরীরে ‘অ্যামোবা’ প্রবেশ করেছে: চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, অ্যামিবা শরীরে প্রবেশ করেছে কিনা, তা সহজেই নির্ণয় করা যায় না। এতে কঠিন হয়ে যায় ভুক্তভোগীকে বাঁচানো। কারণ, ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার মাত্র নয়দিন পর প্রচণ্ড মাথা ব্যথা করবে। সেই সাথে শরীরও দুর্বল হয়ে পড়বে। মাত্র ১৮ দিনের মাথায় আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যান। আর মরণঘাতী এই ভাইরাসের সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা বা ওষুধ এখনো উদ্ভাবন হয়নি বলে জানিয়েছেন দেশটির পাবলিক হেল্থের এই মুখপাত্র।

brain eating amoeba 2

যুক্তরাষ্ট্রের দ্য সেন্ট্ররস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) মুখপাত্র ক্যানডিস বার্নস হাফম্যান বলেন, ‘এই ভাইরাসে আক্রান্তরা প্রথমে কিছু বুঝতে পারে না। ধীরে ধীরে তারা মাথায় ব্যথা অনুভব করেন। যা বাড়তেই থাকে। কেউ হয়তো ভাবতে পারেন সাইনোসাইটিস কিংবা মাইগ্রেনের ব্যথা। আসলে এটা তার যে ব্রেনের টিস্যু নষ্ট করছে। তারা তা বুঝতে পারেন না।’ 

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.