খিদে না পেলেও খালি খাই খাই? এমনটি হতেই পারে। কারণ রক্তে চিনির পরিমাণ কমে গেলে কিংবা পানিশূন্যতা দেখা দিলে এবং আরও নানা কারণে আমরা খাবারের প্রতি বাড়তি আকর্ষণ অনুভব করি। এছাড়াও আরও বেশ কিছু কারণ খাবারের প্রতি আমাদের আগ্রহী করে তোলে। কী কী সে কারণ চলুন দেখে নিই।

not hungry but still eating

দুশ্চিন্তা আমাদের শরীরে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল নিঃসরণ করে। এই হরমোনই আমাদের খেতে আগ্রহী করে তোলে আর আমরা ক্ষুধার্ত অনুভব করি। দুশ্চিন্তা না কমা পর্যন্ত এই হরমোন নির্গমন বন্ধ হয় না। এর প্রেক্ষিতে আমাদের চর্বি এবং চিনিতে ভরপুর খাবারগুলোই কেবল খেতে ইচ্ছে করে। ফলাফল স্বরূপ শরীরে জমছে বাড়তি মেদ, সাথে বাড়ছে টেনশন। তো কী হতে পারে এর বিকল্প?

দুশ্চিন্তায় ভুগলে চকলেট, চিপস, আইসক্রিম নয়, বরং বসে যান ধ্যানে। পাঁচ মিনিটের ধ্যান কিংবা একটু হাঁটাহাঁটি মনকে একটু শান্ত করবে, কর্টিসলের মাত্রাও কমে যাবে স্বাভাবিকভাবেই।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে রক্তে চিনির মাত্রা কমে যাওয়া মানে হাইপোগ্লাইসেমিয়া। মূলত সত্যিকারের হাইপোগ্লাইসেমিয়া ডায়বেটিস রোগীদেরই হয়। তবে ডায়াবেটিস রোগী ছাড়াও সাধারনেরও রক্তে চিনির পরিমাণ ওঠা-নামা করতে পারে। মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, ঘাম, ক্ষুধা লাগা এবং বমি ভাব হওয়া হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ। এই ক্ষুধা নিবারণ করতে গিয়েই আমরা মিষ্টি, মিষ্টি জাতীয় খাবার বা চকলেটের প্রতি ঝুঁকে পড়ি। যদি কোনো কারণে এক বেলার খাবার বাদ যায় বা উপোস করেন কিংবা ওজন বেশি হওয়ায় শরীরে ইনসুলিন ঠিক মত কাজ না করে তবে এমনটা হতে পারে। এই ধরণের সমস্যায় শুধু তিনবেলা খাবার না খেয়ে দুঘণ্টা পর পর অল্প অল্প করে খেতে হবে।

মন খারাপ? করার মত তেমন কোন কাজ খুঁজে পাচ্ছেন না? আবেগতাড়িত হয়ে খেতে শুরু করে দিলেন। এটি কিছুটা সময়ের জন্য ভালো অনুভূতি দিলেও শরীরের ক্ষতি করে নানাভাবে। অনেকে হতাশা কিংবা দুঃখ ভুলে থাকতে খাবারের আশ্রয় নেন। এভাবে খাওয়া মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামক একটি পদার্থ তৈরি করে, যা কিছু সময়ের জন্য হলেও ভালো লাগার অনুভূতি এনে দেয়। মন খারাপ হলে চেষ্টা করুন পছন্দের অথবা সৃজনশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে।

দেহে পানিশূন্যতা দেখা দিলে ঘুম ঘুম ভাব হয় এবং শরীর দুর্বল লাগে। ক্ষুধা লাগলেও একই অনুভূতি হয় তাই মস্তিষ্ক সংকেত পাঠায় যে ক্ষুধা লেগেছে। খাবার খাওয়ার আগে এক গ্লাস পানি পান করলে পেট অনেকটাই ভরা লাগবে। ফলে বাড়তি খাবার খেতে ইচ্ছে করবে না।

আমাদের দেহে বিদ্যমান লেপটিন নামের এক ধরনের হরমোন খাওয়ার স্পৃহা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি ঠিকমত কাজ না করলে পেট ভরা থাকলেও আমাদের ক্ষুধা অনুভূত হয়। অস্বাভাবিক ওজনের অধিকারী যারা তাদের শরীরে লেপটিন ঠিকমতো কাজ করে না। ফলে তাদের খাওয়ার প্রবণতা থাকে বেশী। এটি মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। এ ধরণের সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

এখন থেকেই সতর্ক হোন। ক্ষুধা না পেলে খাওয়া নয়। সুস্থ, সুন্দর জীবনযাপন করুন। ভালো থাকুন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

আপনার শিশু খেতে চায় না?

সকালের নাস্তা বাদ নয় কোনোভাবেই

এই গরমে সুস্থ থাকতে

সবচেয়ে বেশি উপকার হাঁটাহাঁটিতে

মেজাজ ঠিক রাখতে প্রতিদিন একটি কলা

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.