আপনি পড়ছেন

বিবর্তনের হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী। শিক্ষা, সংস্কৃতি, চিকিৎসা-বিজ্ঞান, সংস্কার-সাহিত্য, শিল্প- প্রযুক্তি, চিন্তা চেতনায় ভিন্নমাত্রা পেয়েছে বিশ্বসভ্যতা। তবে এ সকল আধুনিক সভ্যতার দৌঁড়ে হারিয়ে যাচ্ছে প্রচলিত নীতি, নৈতিকতা ও নূন্যতম মানবিক মূল্যবোধ। যার ফলে ক্রমশই বাড়ছে সামাজিক অবক্ষয়। নষ্ট হচ্ছে সামাজিক শৃঙ্খলা কিংবা ছিন্ন হচ্ছে সামাজিক পারস্পরিক সম্পর্ক। দিনকে দিন অস্থির হয়ে উঠছে সামগ্রিক সমাজব্যবস্থা।

good sense approach

এত কিছুর মাঝেও আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন অপরিবর্তিত। চলছে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের চরম দুর্ভিক্ষ। কমে আসছে পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ও শ্রদ্ধাবোধ। অন্যদিকে নারীর প্রতি বাঁকা দৃষ্টিতে তাকানো যেন আদিকাল থেকে চলে আসছে। একশ্রেণির পুরুষতান্ত্রিক সমাজ এখনো নারীকে ভোগ্যপণ্য কিংবা যৌনদাসী হিসেবে বিবেচিত করা হয়। যা সত্যিই পরিতাপের।

সমাজ ও রাষ্ট্রের সুখ-সমৃদ্ধির নিয়ন্ত্রক আমরাই। পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সংহতি শান্তিপ্রিয় মানুষের কাম্য। সেখানে মানুষ নিজেকে যান্ত্রিক হিসেবে তৈরি করতে উঠে পড়ে লেগেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে পরিবার-সমাজ, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য ও চিন্তা-চেতনায় বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা ও বিশ্বাস প্রায় শূন্যের কোঠায়। মানুষের মধ্যে প্রাণ আছে কিন্তু মন নেই। আবেগ অনুভূতি নিরুদ্দেশ। মানুষের অবচেতন হৃদয় শান্তির সন্ধানে ঘুরপাক খাচ্ছে। পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সমাজ নিষ্ক্রিয়। নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে প্রজন্ম কেমন যেনো উদাসীন!

অন্যদিকে যান্ত্রিকতা ও মানবিকতা দুই মেরুকরণে ব্যস্ত। তবে পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি। অথচ আমাদের মাঝে মানবিক মূল্যবোধ পরিবর্তনে নূন্যতম আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যার দরুণ রোজ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়ায় ধর্ষণ কিংবা গণধর্ষণের মত ঘটনা প্রধান খবর হচ্ছে। এসব খবরের প্রতিক্রিয়ায় অনেকে আবার ধর্ষিতাকেই উল্টো দোষী সাব্যস্ত করতে উঠে পড়ে লেগে যান।

এভাবে রোজ ধর্ষণের মত লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে চলছে। মনে হয় যেন সময়ের দুষ্ট দহনে সব গ্রাস হয়ে যাচ্ছে। ফলে দিনদিন এ সমস্যা মাত্রা থেকে মাত্রাতিরিক্ত আকার ধারণ করছে। ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানী নিয়ে বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন রকম মন্তব্য করতে দেখা যায়। আমাদের ‘উদের পিন্ডি বুদের ঘারে’ চাপানো উচিত নয়। সকলের উচিৎ বস্তুনিষ্ঠ মন্তব্যকারীকে সাধুবাদ জানানো। কেননা প্রত্যেকটি মন্তব্যতে এক একজন ব্যক্তির অভিরুচি পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠে।

abu rayhan misbah 01আবু রায়হান মিসবাহ

হয় পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র নারীর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, না হয় অথবা শর্ষের মধ্যে ভূত ঢুকে পড়েছে। এখানে পোশাক না মানসিকতার পরিবর্তন, না দুটোরই পরিবর্তন- সে ধাঁধাঁয় যাওয়ার অবকাশ নেই। এ বিষয়ে পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই- নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি বন্ধে কঠিন আইন ও তার প্রয়োগ চাই। নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি-র মত এই ‘মহামারি সমস্যা’র এখনই কার্যকর সমাধান চাই।

তেতুলতত্ত্বের অবসান চাই। নারী কোনো মুখরোচক চাটনি বা আচার না যে, জিভে জল চলে আসতে হবে। বলাবাহুল্য শুধুমাত্র পর্দার মাঝে এর সমাধান সম্ভব না। আবার নারীকে খোলাবাজারের পণ্য হতে দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন। পাশাপাশি চাই আইনের সুশাসন। অন্যথায় এর দায় রাষ্ট্র এড়িয়ে যেতে পারে না।

প্রিয় পাঠক, ভিন্নমতে প্রকাশিত লেখার বিষয়বস্তু, রচনারীতি ও ভাবনার দায় একান্ত লেখকের। এ বিষয়ে টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপার কোনোভাবে দায়বদ্ধ নয়। ধন্যবাদ।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর