মঙ্গলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঠেকিয়ে দিলেন বিজ্ঞানীরা!

মঙ্গল গ্রহে ঘটতে চলছিল অমঙ্গল। টাইটেনিকের মত করে মহাকাশেও ঘটে যেতে পারত আরেকটি দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার ফলে কেঁপে উঠত গোটা মঙ্গল। আমেরিকার মহাকাশ গেবেষণা সংস্থা নাসার মহাকাশযান ‘মাভেন’ ও মঙ্গলের চাঁদ ‘ফোবস’ এর মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল গত শুক্রবার। দুর্ঘটনাটি ঘটলে মাভেন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যেত। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, অল্পের জন্য আমরা ওই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছি। দুর্ঘটনাটি ঘটলে বিপদের মখে পড়ত পৃথিবীও। পৃথিবীর একটি অংশ ওই দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ হত। কারণ ক্ষতিগ্রস্থ গ্রহাণু এসে পড়তে পাড়ত পৃথিবীর গায়ে।

বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, আর মাত্র সাত সেকেন্ডের এদিক-ওদিক ঘটলেই ঘটে যেত দুর্ঘটনাটি। ঘটনার সময় মঙ্গলের কক্ষপথে থাকা নাসার মহাকাশযানটি একেবারে মুখোমুখিভাবে ধাক্কা খেতে চলছিল মঙ্গলের চাঁদ ফোবসের সঙ্গে। তাতে ভয়ংকর ক্ষতি হয়ে যেত ৬৭ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি খরচে বানানো নাসার মহাকাশযানটির। মহাকাশযানটি ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যেত। ক্ষতি হতো মঙ্গলের চাঁদ ফোবসেরও। নাসার মহাকাশযানেরচূর্ণ টুকরাগুলো মহাকাশে ভেসে বেড়াত কোটি কোটি বছর ধরে।

মঙ্গলকে অনুসরণ করে ঘুরপক খেতে খেতে ফোবস যে রুটে আসছিল, সেই একই রুটে ঢুকে পড়ে নাসার মহাকাশযান মাভেন। ঘটনার সময় মাভেনের কম্পিউটার আর পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরির (জেপিএল) গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুমের অভ্যন্তরীণ ও রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেমে ভুল হয়ে গিয়েছিল। এতে ঘটতে যাচ্ছিল বড় রকমের দুর্ঘটনা।

গত ৩ মার্চ পাসাডেনায় নাসার জেট প্রেপালসান ল্যাবরেটরির গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুমের বিজ্ঞানীরা হিসাব করে মঙ্গলের ওই কক্ষ পথে গণ্ডগোল দেখতে পান। তারা বুঝতে পারেন, ভয়ংকর মহাকাশ-দুর্ঘটনার মুখে পড়তে চলেছে মাভেন আর ফোবস। একেবারে মুখোমুখি ধাক্কা লাগতে চলেছে দুই মহাজাগতিক বস্তুর।

নাসার গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুম জরুরি ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয় পথ পাল্টানোর। ফলে তারা পথ পাল্টানোর জন্য মাভেনের গতি বাড়িয়ে দেয়। গতিবেগ বাড়ানোর ফলে সোমবার ফোবসের থেকে মাত্র আড়াই মিনিটের দূরত্বে ছিল নাসার মহাকাশযানটি। মহাকাশযানের গতিবেগ না বাড়ানো হলে অভিকর্ষ বল যে কোন সময় টেনে নিতে পারত মাভেনকে। আর তাতেই ঘটে যেত মহাকাশে মহাদুর্ঘটনা।