এতো রান করেও হার, কী শিক্ষা পেলেন মাশরাফিরা?

ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে পেসারদের কিভাবে সামলাবেন তামিম- সৌম্য- মুশফিকরা? চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে বাংলাদেশ দল যখন ঢাকা ছাড়লো, সমর্থকদের মনে তখন থেকেই ঘুরছিলো এই প্রশ্ন। দুই সপ্তাহের বেশি সময়ের প্রস্তুতি পর্ব শেষে আজ ওই প্রশ্নের একটা উত্তর দেয়ার সুযোগ এসেছিলো তামিমদের সামনে। সেই সুযোগটা দারুণভাবে লুফে নিয়ে পাকিস্তানের মতো দলের পেসারদের খেলে বাংলাদেশ তুললো ৩৪১ রান। তারপরও ম্যাচ হারতে হলো তাদের। এই পরিণতি থেকে কী শিক্ষা পেলেন মাশরাফিরা?

তিনশর বেশি রান চেজ করে ম্যাচ জেতা আধুনিক ক্রিকেটে তেমন কোনো বিস্ময়কর ব্যাপার নয়। তিনশো রানকে তাই নিরাপদ পুঁজি ভেবে নেয়া ভুল ছাড়া কিছুই নয়। মাশরাফিরাও নিশ্চয় জানতেন এ কথা। তারপরও কেনো এই হার?

এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যেতে পারে ম্যাচের শেষ ১০ ওভার বিশ্লেষণ করে। এই সময়ে পাকিস্তানের দরকার ছিলো ১০৯ রান। তাদের হাতে ছিলো মোটে চার উইকেট। শেষ ১০ ওভারে চার উইকেট হাতে নিয়ে ওভারপ্রতি প্রায় ১১ রান নেয়া সহজ কথা নয়। কিন্তু পাকিস্তান কিভাবে কিভাবে যেনো সহজ বানিয়ে ফেললো!

শেষ ১০ ওভারের মধ্যে তিন ওভার করেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। প্রথম দুই ওভার মাত্র ১০ রান দিয়ে নিজের স্পিনার সত্তার অন্য একটা পরিচয়ই তুলে ধরছিলেন তিনি। কিন্তু তিন নম্বরে ওভারে গিয়ে, যেটি ম্যাচের ৪৫ ওভার, মিরাজ গেলেন এলোমেলো হয়ে। দিয়ে ফেললেন ১৯ রান। ম্যাচটা অনেকখানি হেলে পড়লো পাকিস্তানের দিকে। পরের ওভারে ১৩ রান দিয়ে সাকিব পরিস্থিতিটা বাংলাদেশের পক্ষে নিতে হলেন ব্যর্থ। এই পর্যায়ে এসে একটা ভালো ওভার দরকার ছিলো বাংলাদেশের।

৪৭তম ওভারে বোলিংয়ে এলেন মাশরাফি। ডেথ ওভারে যার ভালো বোলিংয়ের তেমন কোনো সুনাম নেই। দুই ছয়ে ১৬ রান দিয়ে মাশরাফি আরো একবার ডেথ ওভারে নিজের ব্যর্থতার স্বাক্ষর রেখে ম্যাচটা মোটামুটি তুলে দিলেন পাকিস্তানের হাতে। জেতার জন্য বাকি যে কটা রান দরকার ছিলো পাকিস্তানের, সেটা নিতেও তাদের খুব একটা সমস্যা হয়নি। শেষ ওভারে বাংলাদেশের পুঁজি ছিলো ১৩ রান। তখনও বল তুলে নেন মাশরাফি। তিন বলেই প্রয়োজন মিটিয়ে ফেলে পাকিস্তান।

শেষ দশ ওভারের বিশ্লেষণ থেকে বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্তে চলে আসা উচিত যে, ডেথ ওভারে মাশরাফির বোলিং ডেকে আনতে পারে এমনই বিপদ।

বাংলাদেশের ইনিংসের শেষ কয়েকটা ওভারও ঠিক আশানুরূপ ছিলো না। একই ওভারে মাহমুদুল্লাহ- সাকিবের আউট হওয়া, মোসাদ্দেকের শেষ পর্যন্ত টিকতে না পারা; এই ব্যাপারগুলো না ঘটলে বাংলাদেশ অন্তত আরো ২০-২৫ রান বেশি পেতো। সেটা হলে পাকিস্তানের লক্ষ্য থাকতো ৩৬০-এর উপরে। ফলে শেষ ১০ ওভারে ১৩০ বা এর চেয়ে বেশি রান করা কঠিনই হতো পাকিস্তানের জন্য।

সুতরাং বোলিংয়ের এলোমেলো শেষ ১০ ওভার এবং ব্যাটিংয়ের শেষ কয়েকটি জুটিই আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের হারের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। মাশরাফিরা নিশ্চয় এই ব্যাপারগুলো চিহ্নিত করতে ভুল করবেন না।