গত ১১ বছরে এমন লজ্জা পায়নি ভারত

গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৮৯ রান তাড়া করতে নেমে ভারত হেরে গেছে ১১ রানে। এই ধরনের ‘লজ্জা’ গত ১১ বছর একবারও পায়নি ভারত। ওয়ানডেতে ২০০ বা এর চেয়ে কম রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে ভারত সর্বশেষ হেরেছিলো ১১ বছর আগে, সেবারও প্রতিপক্ষ ছিলো ক্যারিবীয়রাই।

গতকাল অ্যান্টিগুয়াতে আগে ব্যাটিং করে পুরো ৫০ ওভার খেলে মাত্র ১৮৯ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর আগে যে ম্যাচে ২০০-এর কম রানের লক্ষ্য পেয়েও ভারত হেরেছিলো, সে ম্যাচেও পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করে ২০০ রানে বেশি করতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। ২০০৬ সালে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিলো কিংসটনে।

১১ বছর পর পাওয়া লজ্জায় ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো দায় দেখছে এমএস ধোনির। এই ম্যাচে ভারতের সাবেক অধিনায়ক হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। কিন্তু ৫৪ রানের ইনিংসটি খেলতে তিনি খেলেছেন ১১৪টি বল। এর মধ্যে ৫০ রান করার পথে তিনি খেলেছেন ১০৮ বল।

ভারতের কোনো ব্যাটসম্যানের সবচেয়ে মন্থর গতির ফিফটির রেকর্ড এটি। যে রেকর্ডটি নিশ্চয় কখনোই করতে চাননি ধোনি। অবশ্য ম্যাচ পরিস্থিতির কারণে এ ছাড়া কোনো উপায়ও ছিলো না ধোনির সামনে। কিন্তু তার প্রচেষ্টা সফল হয়নি দল হেরে যাওয়ায়।

এই ইনিংসে ৭০টি বলে কোনো রান নিতে পারেননি ধোনি। তার ক্যারিয়ারে এতো বেশি ডট বল দেয়ার আর কোনো নজির নেই। এর আগে একবার ৬৯টি ডট বল দিয়েছিলেন ধোনি। ২০০৯ সালে কিংসটনের সে ম্যাচেও প্রতিপক্ষ ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

১৮৯ রানের পুঁজি নিয়ে ভারতের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে মূলত তাদের অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডারের দারুণ বোলিংয়ের কারণে। ২৭ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নেন হোল্ডার। চতুর্থ ক্যারিবীয় অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে পাঁচ উইকেট নেয়ার কীর্তি দেখালেন তিনি।

এতো কম রানের পুঁজি নিয়ে ভারতের বিপক্ষে জেতাটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য মনে রাখার মতোই একটা কীর্তি। তবে এর কম রানের পুঁজি নিয়েও ওয়ানডেতে জেতার ইতিহাস আছে তাদের। ১৯৮১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৭ রানের পুঁজি নিয়ে জিতেছিলো ক্যারিবীয়রা। ভারতের বিপক্ষেই ১৮৯ রানের চেয়ে কম পুঁজি নিয়ে আরো একটা জয়ের কীর্তি আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ১৯৮৭ সালে গোয়াহাটিতে ১৮৭ রান নিয়েও ভারতকে হারিয়েছিলো তারা।

ভারতের অপ্রত্যাশিত হারের দিনে মনে রাখার কীর্তি গড়েছেন অজিঙ্কা রাহানে। এই ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। যা সিরিজের চার ম্যাচে তার চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি। ভারতের মাত্র ষষ্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে চার বা এর চেয়ে বেশি ম্যাচে ৫০ বা এর চেয়ে বেশি রানের ইনিংস খেললেন তিনি।

তার আগে শচিন টেন্ডুলকার, যুবরাজ সিং, বিরেন্দর শেবাগ, সুরেশ রায়না ও বিরাট কোহলি এই কীর্তি গড়েছেন। এদের মধ্যে কোহলি আবার দুইবার কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজের চার বা এর চেয়ে বেশি ইনিংসে ৫০ বা এর চেয়ে বেশি রান করেছেন। রাহানের এই কীর্তি অবশ্য ১১ বছরের পুরোনো লজ্জাটা আবার ফিরে আসার পথে বাধা দাঁড়াতে পারেনি।