আফগানিস্তানের সেরা ক্রিকেটারদের তালিকা করলে সামিউল্লাহ শেনওয়ারির নাম উপরের দিকেই থাকবে। ২০১৪ সালের এশিয়া কাপে ফতুল্লায় বাংলাদেশকে হারানোর ম্যাচে তার ব্যাটে দেখা গিয়েছিলো রুদ্ররূপ। যুদ্ধের ভয়াবহতা পিছনে ফেলে আফগানিস্তানের ক্রিকেট যে কজন ক্রিকেটারের পারফর্ম্যান্সে ভর করে এগিয়ে যাচ্ছে, শেনওয়ারি তাদের অন্যতম। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) খেলতে তিনি এখন বাংলাদেশে। সম্প্রতি আফগানিস্তানের এই অলরাউন্ডার সাক্ষাৎকার দিয়েছেন টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারকে। তার সঙ্গে কথা বলেছেন আমাদের প্রতিনিধি সাইফ হাসনাত

samiullah interview 24 live newspaper

দ্বিতীয়বার বিপিএল খেলতে এসেছেন। কেমন লাগছে সব কিছু?

হ্যা, দ্বিতীয়বার বিপিএল খেলতে এলাম। খুব ভালো লাগছে। বলতে পারেন, বিপিএল নিয়ে আমি খুব উত্তেজিত! আমার দল রংপুর রাইডার্স খুব শক্তিশালী। এখানে বড় বড় খেলোয়াড় আছে। মালিকপক্ষও খুব আন্তরিক। সব মিলিয়ে বিপিএলটা দারুণ উপভোগ করছি।

বড় বড় খেলোয়াড়দের কথা বললেন, আফগানিস্তানের একজন খেলোয়াড় হিসেবে তাদের সঙ্গে খেলে কেমন মজা পাচ্ছেন? নিশ্চয় অনেক কিছু শেখার সুযোগও হচ্ছে!

এবারই প্রথম আমি ম্যাককালাম-গেইলদের মতো বড় বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলছি। এ ছাড়া বাংলাদেশের কয়েকজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারও আছেন। এটা আমার জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা। এদের সঙ্গে থেকে অনেক কিছু শিখতে পারছি, আপনি ঠিকই বলেছেন! তাদের দেখে শিখছি, কিভাবে আমার ব্যাটিং-ফিল্ডিং ও বোলিং আরো উন্নতি করা যায়। আসলে এই বিপিএলটা আমার জন্য আরো ভালো করে ক্রিকেট বোঝার একটা দারুণ উপলক্ষ্য।

রংপুরে তো আপনি মাশরাফির নেতৃত্বে আছেন। তার অধীনে খেলতে পেরে কেমন লাগছে?

মাশরাফি ভাই মানুষ হিসেবে অসধারণ! তিনি খুবই রসিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ; আসলে মাশরাফি আমার কাছে ভাইয়ের মতো। আমার কাছে তাকে সতীর্থ মনে হয় না; মনে হয় তিনি আমার বন্ধু ও ভাই। সব সময় খুব অনুপ্রেরণা দেন। দলের প্রতিটি খেলোয়াড় তাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত। আশা করি তার সঙ্গে ভবিষ্যতে আরো খেলতে পারবো।

আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা তো এখনো সেভাবে বিদেশি লিগে খেলার সুযোগ পাচ্ছে না। আপনি পেয়েছেন। আরো কয়েকজন বিপিএল খেলছে। দেশ থেকে কেমন সাড়া পান?

দেশে বন্ধু-বান্ধবরা সবাই বিপিএল অনুসরণ করছে। আমি এবং আরো যারা আছে, তাদের ম্যাচ কবে কখন; আফগানিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীদের তা সবাই জানা। তারা সবাই আমাদের সমর্থন করছে। আমার পরিবারও সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে। আসলে যেখানেই আমার খেলা থাকুক না কেনো, কোনো সিরিজে বা যেখানইে হোক, সবাই খুব সমর্থন করে। সবাই বলে আমি যাতে আমার সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করি। আসলে রংপুরের হয়ে খেলা বা আফগানিস্তানের হয়ে খেলা; আমার কাছে একই কথা। আমি সব জায়গায়ই আমার শতভাগ দিয়ে খেলি।

জাতীয় দলে আপনার সতীর্থ রশিদ খান বিপিএল খেলছেন। মোহাম্মদ নবিও তার সঙ্গে আছেন। এ ছাড়া তরুণ স্পিনার মুজিবও যোগ দিয়েছে। তাদের ব্যাপারে কী বলবেন?

রশিদ খান খুব ভালো বোলার। সারা বিশ্ব এখন তাকে সেরা বোলার হিসেবে চিনে। আর নবি তো আগে থেকেই পরিচিত। মুজিব খান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এশিয়া কাপে পাঁচ ম্যাচে ২১টি উইকেট নিয়েছে। এতে বোঝা যায় সেও উঠে আসছে। সে আমাদের খুব ভালো ব্যাকআপ খেলোয়াড় হিসেবে প্রস্তুত হয়ে উঠছে। আমাদের আসলে ভবিষ্যতের জন্য চিন্তিত হতে হবে না, কারণ এ রকম তরুণরা উঠে আসছে।

মুজিবকে একজন সিনিয়র হিসেবে আপনি কতোটা আশাবাদী?

আমি মনে করি মুজিব জাতীয় দলে খেলবে। অবশ্যই সে ডাক পাবে। আশা করি শিগগিরই আপনারা তাকে আফগানিস্তান জাতীয় দলে দেখতে পারবেন।

জাতীয় দলের কথা বললেন; আপনাদের দল তো মনে হয় এখন প্রথম টেস্ট খেলার জন্য অধীরে আগ্রহে অপেক্ষা করছে!

নিশ্চয়ই! টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া ছিলো আমাদের জন্য একটা বিশাল প্রাপ্তি। আমিও হয়তো টেস্ট খেলবো। আগামী বছরই আমাদের টেস্ট অভিষেক হতে পারে। যে দলটা খেলবে, আশা করি আমি সেই দলে থাকতে পারবো।

আফগানিস্তান এখন টেস্ট খেলার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু ক্রিকেট আসার আগে আফগানিস্তানের খেলার জগতটা কেমন ছিলো?

অন্য খেলার কথা বলছি না। ক্রিকেটের কথা বলতে গেলে বলবো, ১০ বছর আগে আফগানিস্তানে ক্রিকেটের কিছুই ছিলো না। না ছিলো ক্রিকেটার, না ছিলো মাঠ এবং না ছিলো কোনো ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা। কিন্তু এখন আমাদের তিনটা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম আছে। বেশ কিছু একাডেমি আছে। যার মধ্যে কয়েকটা বেসরকারি। ক্রিকেট বোর্ড পরিচালিত সরকারি একাডেমিও আছে। সব মিলিয়ে আফগানিস্তানের ক্রিকেট এখন দারুণভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। আগে কিছু না থাকলেও ভবিষ্যতে অনেক কিছু থাকবে, আমরা এমনই আশা করি।

আফগানিস্তানের দুই প্রতিবেশি ভারত- পাকিস্তান, এ দিকে বাংলাদেশ; তিন দেশেই ক্রিকেট নিয়ে উন্মাদনা আকাশ-ছোঁয়া। আফগানিস্তানের পরিস্থিতি কেমন?

আফগানিস্তানেও ক্রিকেট এখন এক নম্বর খেলা। দেশের সাধারণ মানুষও ক্রিকেট নিয়ে খুব আশাবাদী। কারণ ক্রিকেটের কারণে তাদের মুখে হাসি ফোটে। তারা চায় ক্রিকেট দল যাতে দেশকে আরো বেশি আনন্দ দিতে পারে। আসলে আন্তর্জাতিক ম্যাচে যখন দেশের পতাকাটা উড়ে, সেটা দেখতে পাওয়ার চেয়ে আনন্দের কিছু নেই। আফগানিস্তানের মানুষ ক্রিকেটকে ভালোবেসে ফেলেছে।

এবার আপনার ক্যারিয়ারের কথায় আসি। উপমহাদেশের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই তো ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলে বড় হয়েছেন। কিন্তু আফগানিস্তানের আপনাদের প্রজন্মের ব্যাপারটা তেমন নয়। ক্রিকেট খেলায় আপনার অনুপ্রেরণার উৎস কী?

প্রথমত খেলাটা আমার ভীষণ প্রিয়। এ ছাড়া শেন ওয়ার্নের খেলা আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বোলার। তাকে অনেক খেলতে দেখেছি। একজন বোলার হিসেবে আমি তাকে অনুসরণ করার চেষ্টা করি। আর ব্যাটিংয়ে আমার অনুপ্রেরণা কেভিন পিটারসেন। বরতে পারেন আমার ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নটা তাদেরকে দেখেই।

শেন ওয়ার্ন বা কেভিন পিটারসেন, কারো সঙ্গে সরাসরি দেখা বা কথা হয়েছে?

নাহ! এখনো তাদের সঙ্গে দেখা বা কথা হয়নি। তবে ভবিষ্যতে নিশ্চয় হবে- ইনশাল্লাহ।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.