ইনডোরে ব্যাটিং তাণ্ডব, ‘হিটম্যানের’ বিশ্বরেকর্ড

টস জিতে কী বুঝে যে ফিল্ডিং নিলাম— রোহিত শর্মার ব্যাটিং দেখে নিশ্চয় এই আফসোসটাই করছেন থিসারা পেরেরা। কারণ রোহিত শর্মা যে একের পর এক চার-ছয় মেরে এলোমেলো করে দিয়েছেন তাদের। শুধু তাই নয়, করে ফেলেছেন টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ডও!

কদিন আগেই ওয়ানডেতে নিজের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি করেন রোহিত। এর আগেই অবশ্য তার নামের পাশে জুটে গেছে ‘হিটম্যান’ অভিধা। তাকে হিটম্যান কেনো বলা হয়— এ নিয়ে যদি কেউ তর্ক করতে চান, তবে তারা রোহিতের আজকের ইনিংসটিতে একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন!

ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে শ্রীলঙ্কার ফিল্ডিং নেয়াটা যে ভুল ছিলো এবং বিরাট ভুল, সেটা প্রমাণ করতেই যেনো ১০ ওভারেই ১১৭ রান তুলে ফেলে ভারত। সেটাও কোনো উইকেট না হারিয়ে। এর মধ্যে রোহিত শর্মার ব্যাট থেকেই আসে ৭৩ রান। মাত্র ২৯ বলেই রান করেন তিনি।

এরপর বাকি ছয় বলে তার ব্যাট থেকে আসে আরো ২৭ রান! ৩৫ বলে করে ফেলেন সেঞ্চুরি। যাতে তিনি ভাগ বসান ডেভিড মিলারের রেকর্ডে। সবচেয়ে কম, মাত্র ৩৫ বলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ডটা এতোদিন তার একারই ছিলো।

বিশ্বরেকর্ড গড়ার পথে ১১টি চার ও আটটি ছয় মারেন তিনি। রোহিত শেষ পর্যন্ত আউট হন ৪৩ বলে ১১৮ রান করে। মারেন আরো একটি চার ও দুটি ছয়। অর্থাৎ ১১৮ রানের মধ্যে ১০৮ রানই তিনি করেন বাউন্ডারি ও ওভার-বাউন্ডারি থেকে!

রোহিতের এমন ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিলো অ্যারন ফিঞ্চের রেকর্ডটাও বোধহয় ভেঙে যাবে। অস্ট্রেলীয় এই ব্যাটসম্যানই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের মালিক। রোহিত যখন আউট হন, তখনও ইনিংসের সাত ওভার দুই বল বাকি ছিলো। এ সময়টাও যদি টিকে থাকতেন রোহিত, কে জানে কোথায় থামতেন তিনি!

ঠিক এর আগের ম্যাচেই নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় টি-টোয়েন্টি জয় পেয়েছিলো ভারত। লঙ্কানরা যে এই ম্যাচেও ভারতের সামনে সেভাবে দাঁড়াতে পারবে না, এটাও বলে দেয়া যাচ্ছে কোনো ঝুঁকি না নিয়েই।

এই যে ভারতের এমন সুদৃঢ় অবস্থান, এর পিছনে যে রোহিত শর্মার অবদানই সবচেয়ে বেশি, এটা নিশ্চয় বলার কোনো দরকারই নেই। হিটম্যান যে দিন সত্যি সত্যি নিজের আসল রূপে হাজির হন, সে দিন আসলে তার চেয়ে বেশি অবদান রাখার মতো কেউ থাকেই না। এ কথার প্রমাণের জন্য তিন তিনটা ওয়ানডে ডাবল সেঞ্চুরি এবং টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটা সামনে আনলেই তো হয়!