কী চিন্তা নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন তামিম-ইমরুল?

ম্যাচের বাকি অন্তত ১১৬ ওভার। দল পিছিয়ে আছে ২০০ রানে। এই পরিস্থিতিতে ২০০ রান করা, লিড নেয়া এবং টেস্টের চতুর্থ দিন বিকেলে প্রতিপক্ষের দুর্দান্ত সব বোলারদের বিপক্ষে ব্যাটিং করা; এতো কিছুর জন্য নিশ্চয় দলের প্রথম দুই ব্যাটসম্যানের সুনির্দিষ্ট চিন্তা থাকা উচিত। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিনে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস ঠিক কী চিন্তা নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন?

তামিম ও ইমরুলকে এদিন শুরু থেকেই মনে হয়েছে অস্থির। যেখানে প্রয়োজন ছিলো স্থিতধী ব্যাটিংয়ের, সেখানে তারা ছটফট করেছেন রানের জন্য। চতুর্থ দিন বিকেলটা যদি বাংলাদেশ কোনো উইকেট না হারিয়ে কাটিয়ে দিতে পারতো, তাহলে পঞ্চম দিনটা শুরু হতে পারতো টেস্ট বাঁচানোর আশা নিয়ে। কিন্তু তা হওয়ার সুযোগই দিলেন না তামিম-ইমরুল।

শুরুর ছটফটানি আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত ধরে রেখেছিলেন দুইজনই। বিশেষ করে ইমরুল কায়েস ছিলেন দৃষ্টিকটু রকমের অস্থির। দিলরুয়ান পেরেরার বলে স্কয়ার লেগে দিনেশ চান্দিমালের হাতে ধরা পড়ার বলটিতেই যেমন, ইমরুল সুইপ করেছিলেন একেবারে অকারণে। যেখানে স্থির দাঁড়িয়ে থাকাই ছিলো সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি, সেখানে তিনি দিলেন গর্জন তোলা সুইপের হাঁক। এমন ভুলের মাশুল তিনি দিলেন নিজের উইকেট হারিয়ে এবং দলের বিপদ বাড়িয়ে।

তামিম যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন, তাতে ইমরুল কায়েসের দ্রুত আউট হওয়াটা পুষিয়ে নেয়ার আশা করছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু তামিমও এ দিন হাজির অস্থিরচিত্ত নিয়ে। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়া লক্ষণ সান্দাকানের বলটি চলে যাচ্ছিলো আরো বাইরে। তামিম তা ছেড়ে দিলেই পারতেন। কিন্তু তা না করে এক পা এগিয়ে গিয়ে তামিম গেলেন ড্রাইভ করতে। কিন্তু হলো না। বল তার ব্যাট ছুঁয়ে চলে গেলো উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। দারুণ এক সম্ভাবনাময় ইনিংসটির মৃত্যু ঘটে ৪১ রানে। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের ম্যাচ বাঁচানোর আশাটারও কি পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঘটেনি?

চতুর্থ দিন বিকেলটা বাংলাদেশের জন্য গাঢ় বিষাদে ছেয়ে গিয়েছিলো তখনই। সেই বিষাদ আরো বাড়ে মুশফিকুর রহিমের দুর্ভাগ্যজনক এক আউটে। ৮১ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করা বাংলাদেশে লঙ্কানদের চেয়ে এখনো পিছিয়ে ১১৯ রানে। এই পরিস্থিতে ম্যাচ বাঁচানোর আশা খুবই ক্ষীণ।

দিন শেষের সংবাদ সম্মেলনে এসে প্রায় বিনাবাক্যব্যয়ে তা স্বীকার করে নিলেন তাইজুল ইসলাম। বল হাতে চার উইকেট নিলেও দলীয় ব্যর্থতার ভারে, সেটা তার খুব বেশি মনে থাকার কথা নয়। তাকে বরং কথা বলতে হলো ব্যাটসম্যানদের প্রতি কী নির্দেশনা ছিলো তা নিয়ে।

জবাবে তাইজুল বলেন, ‘ব্যাটসম্যানরা মারার বল পেলে মারতেই চায়। তারা (শ্রীলঙ্কা) খারাপ বলে করেছে বলেই রান এসেছে। আবার তারা ভালো বোলিং করে সফলও হয়েছে। তবে তিন উইকেট পড়ে যাওয়া একটু বেশিই সমস্যা সৃষ্টি করছে।’

এই সমস্যার উদ্ভব কোত্থেকে, এমন প্রশ্ন অবশ্য করা হয়নি বাঁহাতি স্পিনারকে। করা হলেও কি তাইজুল বলতে পারতেন যে, ব্যাটসম্যানদের চিন্তার গলদই ডোবাচ্ছে দলকে?