‘সাব্বিরকে বলেছি, তোমাকে সিঙ্গেল নিতে পাঠানো হয়নি’

বাংলাদেশ মাঠে ভালো খেললে তার ক্রেডিট নিতে মোটেও কার্পণ্য করেন না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। দল নির্বাচনে তার হস্তক্ষেপও এখন বাংলাদেশ ক্রিকেটের ওপেন সিক্রেট। নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের অসাধারণ জয়ের পরও ক্রেডিট নিলেন নাজমুল। সঙ্গে বললেন এমন কিছু কথা, যা শুনে খটকা লাগা ছাড়া উপায় নেই!

প্রথম খটকা: খেলোয়াড়দের টেকনিক্যাল সমস্যা নিয়ে মন্তব্য

নাজমুল হাসান ব্যক্তিগত জীবনে একজন রাজনীতিবিদ। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠিত কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের বড় কর্তাও তিনি। পেশাদার ক্রিকেট খেলার বা সরাসরি মাঠের খেলার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার তেমন তথ্য নেই। কিন্তু রোববার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি নিজেকে ‘ননটেকনিক্যাল’ দাবি করলেও খেলোয়াড়দের টেকনিক্যাল ব্যাপার নিয়ে কথা বলেছেন!

নাজমুল বলেন, ‘ভারতের সাথে যেমন ব্যাটিং হয়েছে, সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। ওদের বললাম, ভারত একটার পর একটা অফ স্টাম্পের বাইরে বল করলো আর তোমরা ঘুরিয়ে মারতে চাইলে, এগুলো তো ক্রিকেটিং শট না। নতুন ছেলেরা করলে এক কথা, কিন্তু তামিম, মুশফিক, রিয়াদের শক্তির জায়গা তো এটাই। অথচ তাদের ব্যাটে বল লাগে না, ৫৭টা ডট বল।’

দ্বিতীয় খটকা: মিরাজ কি এতো বড় মাঠে ছক্কা মারতে পারবে!

নিজেকে ননটেকনিক্যাল দাবি করলেও খেলোয়াড়দের টেকনিক্যাল ব্যাপার নিয়ে তিনি আরো কথা বলেন। তার মতে মেহেদি হাসান মিরাজ বড় মাঠে ছক্কা মারতে পারবেন না। তবু ভারতের বিপক্ষে সেই চেষ্টা করার কারণে সিনিয়র খেলোয়াড়দের নাকি তাকে বকা দেয়া উচিত!

নাজমুল হাসান বলেন, ‘পরশু মিটিংয়ের পর ওরা বুঝতে পেরেেছ ওদের কী করতে হবে । খুঁটিনাটি বিষয়, মিরাজ যেমন ভারতের বিপক্ষে ছয় মারতে গেল। এত বড় মাঠে ও ছক্কা মারতে পারবে? এটার জন্য ওকে কেউ বকা দিছো (সিনিয়রদের উদ্দেশ্য করে)? এভাবে খেললে বাদ পড়বে, এটা তো বলতে হবে। সে তরুণ খেলোয়াড়। আমি কিছু বললে ঘাবড়ে যাবে। এটা বলতে হবে ওদেরই।’

তৃতীয় খটকা: মুশফিক যে ছয় মারতে পারেন তা জানেন না বোর্ড প্রধান

মুশফিকুর রহিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। দেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির মালিক তিনি। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে তার সেঞ্চুরি ১০টি। হাফ সেঞ্চুরি আছে ৫০টি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুশফিক ছয় মেরেছেন মোট ১১৭টি। টি-টোয়েন্টিতে তিনি দেশের হয়ে চতুর্থ সর্বোচ্চ ছয়ের মালিক। অথচ…

নাজমুল হাসান বলেন, ‘তামিম–সৌম্য যে মারতে পারে আমরা জানি। লিটন যে মারতে পারে জানতাম না। মুশফিক? ওকে বললাম, তুমি যে এমন মারতে পার, জানতামই না! ও তো আসলে গত দুই বছরে ছয় মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ হয়। ও মারতে পারে। কিন্তু ছয় মারার খেলোয়াড় নয়। ছয় মারে তিনজন, তামিম, সৌম্য, সাব্বির।’

চতুর্থ খটকা: সাব্বিরকে তো ছয় মারতে পাঠানো হয়নি

ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাব্বির রহমান নেমেছিলেন খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। ওই সময়ে তার ব্যাট থেকে ঝড়ো ইনিংস আশা করছিলেন সবাই। কিন্তু সাব্বির পরিস্থিতির দাবি মেটাতে ব্যর্থ হন। হয়ে যান রান আউট। এ বিষয়ে রোববার নাজমুল হাসান বলেন যে, সাব্বিরকে তো সিঙ্গেল নিতে পাঠানো হয়নি!

তার বক্তব্যটা এ রকম, ‘ওকে ওই সময় সিঙ্গেল নিতে বলল কে? সবার সামনেই ওকে বলেছি, ওখানে সিঙ্গেল নিতে পাঠানো হয়নি তোমাকে। ছয় মারার খেলোয়াড় তো মিরাজ নয়। তোমাকে পাঠিয়েছি ছক্কা মারতে। তোমাকে মারতে হবে, ব্লক করছ কেন? হলে হবে না হলে নাই। ওকে বলেছি... জিতলে তো বেশি বলা যায় না (এরপর বোর্ড প্রধান হাসতে থাকেন)।’